ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসন (প্রথম পর্ব)

 বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
ইসলামের মূলনীতির আলোকে, ইবাদতে মাইকের ব্যবহারের বিভ্রান্তি নিরসনে ,
"ইবাদতে মাইকের ব্যবহার কি বৈধ? " Is allowed loudspeaker use in prayer?
আবুবকর সিদ্দিক
*******************************


 কেন এ-বই?
সমস্ত প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামিনের জন্য, যার নিয়ন্ত্রণে আমাদের জীবনের বাগডোর। অসংখ্য সালাত ও সালাম প্রিয় নবী জনাব মুহাম্মদ (সা) ও তার বংশধর এবং সাহাবায়ে আজমায়ীনদের প্রতি।
সম্মানিত পাঠক! আপনার মনে হয়তো এ প্রশ্ন জাগ্রত হতে পারে, শরীয়তের অসংখ্য বিষয় থাকতে আমি এ বিষয়ে বই লিখলাম কেন? আমি যে গ্রামে জন্মেছি সে গ্রামের অধিকাংশ মুসলিম নামের লোকগুলো কোরান সুন্নাহ থেকে অনেক দূরে। তারা শরীয়তের কোনো বিষয়ে কোরান সুন্নাহর দারধারে না। পূর্বপুরুষদের কাজ থেকে যা পাই তা দৃঢ় ভাবে অনুসরণ করে। এরূপ গ্রামে "নাজায়েজ" নামক নতুন এক ফিরকার উদ্ভব হয়েছে। নতুন এ ফিরকার মূল কথা হলো, "ইবাদতে মাইক ব্যবহার করা শিরিক হারাম এবং যারা ব্যবহার করবে তারা সবাই কাফের মুশরিক "। তাদের এরূপ ফতোয়া শোনে আমি খুবই চিন্তিত হলাম আর ভাবলাম, যে মাইক রাসূল (সা) এর যুগে ছিলনা, যা হালাল হারামের সুস্পষ্ট দলিলও পাওয়া যায়না, তা কিভাবে শুধু মাত্র হারাম হয়? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজার জন্য আমি ইবাদতে মাইক ব্যবহার হারাম বলে ফতোয়া দেয়া 'ফাতহুল মুবিন' নামক বইটি অধ্যায়ন করি। পাশাপাশি তাদের সাথে বাহাসও করি। অধ্যায়ন ও বাহাসের (তর্কের) মাধ্যমে যা বুঝতে পারলাম তা হলো, কত সহজেই হালালকে হারাম বানানো যায় কত সহজেই মুসলিমকে কাফের বানানো যায়। এক কথায় বইটি খুবই বিভ্রান্তিকর, যেখানে কোরান সুন্নাহর অপব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং তা দিয়ে ঐ -এলাকার মানুশগুলকে ও বিভ্রান্তিতে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। তাছাড়া, যারা ইবাদতে মাইক ব্যবহার করে তাদের অধিকাংশই অবগত নয় যে, কেন ইবাদতে মাইকের ব্যবহার জায়েজ বা নাজায়েজ? ফলে তাদের মধ্যে মাইকের অপব্যবহার হয় এবং নতুন এই ফিরকার আছরও পড়তে পারে। তাই আমি 'ইবাদতে মাইক ও আমার দৃষ্টি ভংগি' এ বইটি লিখে মাইক নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসনের চেষ্টা করেছি। আশা করি পাঠক মনের প্রশ্নের জবাব পেয়েছেন।
অতএব, বইটি ধীরস্থিরে, মনযোগ সহকারে অধ্যায়ন করে উপকৃত হবেন সে আশা পোশণ করে আল্লাহর নিকট দোয়া কামনা করছি।
বিনীত.............আবুবকর সিদ্দিক।
সূচী পত্রঃ 
Sultan Mosque- Singapore
যে মসজিদে প্রথম মাইক ব্যবহারের অনুমতি
দেওয়া হয়েছিল।


১। হালাল হারাম ও মাকরূহ এর সংজ্ঞা।
২। সব কিছুর ব্যাপারে মূলনীতি হচ্ছে তা মুবাহ।
৩। বিদ'আত।
৪। সুন্নতের নামে বিদাত।
৫। মাইক কি বিদাত?
৬। ইবাদতে মাইক ব্যবহারের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।
৭। ইবাদতে মাইক ব্যবহারকে হারাম মনে করার
কারণ বিশ্লেষণ।
৮। কিছু দলিল ও তাত্বিক বিশ্লেষণ।
৯। মন্তব্য, প্রশ্ন ও উত্তর।
১০। শেষ কথা
১১। তথ্য সূত্র।

হালাল, হারাম ও মাকরূহ এর সংজ্ঞা
'''''''''''''''"""""""""""""""""""""""""""""""""''''''''''''''''''''''''''''''''''''''
হালাল: মুবাহ, নিষিদ্ধ নয় এমন। শরীয়ত প্রণেতা যা করার অনুমতি দিয়েছেন অথবা করতে নিষেধ করেননি।
হারাম: আল্লাহ যা স্পষ্ট ভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন এবং যা করলে পরকালে অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে, দুনিয়তেও দন্ড ভোগ করতে হবে। তবে অনিচ্ছাকৃত ভাবে কোনো হারাম কাজ করে ফেল্লে তাতে কোনো দোষ নেই।
মাকরূহ: যে কাজ করতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন, কিন্তুু কঠোর ভাবে নিষেধ করেননি, হারামের তুলনায় কম ও ক্ষীণ, হারাম কাজ করলে যে শাস্তি প্রাপ্য কিন্তুু মাকরূহ করলে তা পেতে হয়না, তবে ক্রমাগত মাকরূহ কাজ করতে থাকলে হারাম কাজের শাস্তি ভোগ করতে হবে।(ইউসুফ আল কারযাভী)
উল্লেখ্য যে, মাকরূহ এর এই সংজ্ঞার সাথে আমি একমত নয়। বরং এখানে মাকরূহ এর যে সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে তা সগিরাহ গুনাহের সংজ্ঞা যা একবার করলেও গুনাহ হবে এবং বার বার করলে কবিরাহ গুনাহ বলে গণ্য হবে।
মাকরূহ এর সংজ্ঞা : নবীজি (সা) যে কাজ করতে নিরুৎসাহিত করেছেন তবে সরাসরি কখনো নিষেধ করেননি অথবা যে কাজ করার জন্য উত্সাহিত করেছে তবে কড়াকড়ি ভাবে পালনের নির্দেশ দেননি এমন কাজে লিপ্ত হওয়া অথবা
এমন কাজ থেকে বিরত থাকায় মাকরূহ। এমন কাজে একবার বার বার লিপ্ত হলেও পাপ হবেনা বরং সওয়াব কম বেশি হতে পারে। (আল্লাহই ভাল জানেন)
প্রচলিত ভাষায় আমরা যে কাজ করা বা যা থেকে বিরত থাকা মুস্তাহাব মনে করি তা থেকে বিরত থাকা বা তাতে লিপ্ত হওয়ায় মাকরূহ।
যেমনঃ কারও গোসলের প্রয়োজন না হলেও শুক্রবার গোসল করাটা মুস্তাহাব এবং গোসল থেকে বিরত থাকায় মাকরূহ।
সবসময় মাথা ঢেকে রাখাটাই মুস্তাহাব আর ঢেকে না রাখাটাই মাকরূহ।

সব কিছুর ব্যাপারে মূলনীতি হচ্ছে - তা মুবাহ
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""'''''"'"
শরীয়তের বিধান প্রণয়নে ইসলামের মূলনীতি হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য যত কিছু সৃষ্টি করেছেন, তা সবই ভোগ ব্যবহার করা হালাল ও মুবাহ। যদি আল্লাহ তায়ালা অকাট্য, সুস্পষ্ট ও প্রমাণিত ঘোষণায় তার মধ্যে কোনো কিছুকে হারাম বলেন শুধু তাই হারাম। তা ব্যতীত অন্যসব কিছুকে আল্লাহ মানুষের জন্য হালাল ও মুবাহ করেছেন। অর্থাৎ যা ভোগ ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন তা কোনো অবস্থাতেই হারাম করা যাবেনা। এমন কি কোনো যয়ীফ দূর্বল হাদিস
দিয়েও নয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যে সব কিছুকে হালাল ও মুবাহ ঘোষণা করেছেন তা আমার মুখের কথা নয়। বরং আল্লাহ নিজেই বলেছেন,
ﻫﻮﺍﻟﺬﻱ ﺧﻠﻖ ﻟﻜﻢ ﻣﺎﻓﻲ ﺍﻻﺭﺽ ﺟﻤﻴﻌﺎ 
(‏(ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ
তিনিই সেই সত্তা যিনি বিশ্বজাহানের সব কিছু তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন। (আলকোরান, সূরা আল বাকারাহ, আয়াত ০২:২৯)
ﻭﺳﺨﺮ ﻟﻜﻢ ﻣﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺴﻤﻮ ﺕ ﻭﻣﺎ ﻓﻲ ﺍﻻﺭﺽ ﺟﻤﻴﻌﺎ
ﻣﻨﻪ ‏( ﺍﻟﺠﺎ ﺷﻴﺔ )
নভোমণ্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে সব কিছুই তোমাদের আয়ত্ত্বাধীণ করে দিয়েছেন। (আলকোরান, সূরা জাসিয়া, আয়াত ৪৫:১৩)
ﺍﻟﻢ ﺗﺮﻭﺍﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺨﺮ ﻟﻜﻢ ﻣﺎ ﻓﻲ ﺍﺳﻤﻮ ﺕ ﻭﻣﺎ ﻓﻲ
ﺍﻻﺭﺽ ..... ‏( ﻟﻘﻤﺎﻥ )
তুমি কি লক্ষ্য করোনি, নভোমণ্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহ মানুষের জন্য নিয়োজিত করেছেন?
(আলকোরান, সূরা লোকমান, আয়াত ৩১:২০)
ﺍﻟﻢ ﺗﺮ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺨﺮ ﻟﻜﻢ ﻣﺎ ﻓﻲ ﺍﻻﺭﺽ ...... ‏( ﺍﻟﺤﺞ )
তুমি কি দেখনা, আল্লাহ তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করে রেখেছেন পৃথিবী তে যা আছে সবকিছুকে।
(আলকোরান, সূরা হাজ্ব, আয়াত ২২:৬৫)
এসব ঘোষণা থেকে অকাট্য ও সুস্পষ্ট ভাবে প্রমানিত হয় যে আকাশ মন্ডল ও পৃথিবীর সব কিছুই আল্লাহ তায়ালা মানুষের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছেন। মানুষের আয়ত্ত্বাধীণ করেছেন যাতে মানুষ তা ভোগ ব্যবহার করতে পারেন। এভাবেই আল্লাহ তায়ালা মানুষের প্রতি তার অপরিসীম অনুগ্রহের কথা জানিয়ে দিয়েছেন। তাহলে বিশ্বজাহানের সব কিছুই মানুষের জন্য হালাল হবেই তা ব্যতীত যা তিনি হারাম করেছেন। আর এই হারাম হচ্ছে হালালের মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম মাত্র এবং সে ব্যতিক্রমের মূলে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে বলে মনে করতে হবে। এ প্রেক্ষিতে বলা যায়, ইসলামী শরীয়তে হারামের পরিধি খুব সংক্ষীর্ণ, হালালের ক্ষেত্র বিস্তীর্ণ। কেননা সুস্পষ্ট অকাট্য ভাষায় হারাম ঘোষণাকারী আয়াত খুবই কম এবং তা কয়েকটি মাত্র। ইতিবাচক ভাবে যে সব বিষয়ে নতুন করে কোনো কিছু বলা হয়নি -না হালাল, না হারাম তা মূলনীতির ভিত্তিতে বিবেচিত হবে।
বিদ'আত ﺑﺪﻋﺖ
""""""""""""""""""""""""
এ পর্যায়ে আমি বিদ'আত সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করতেছি। কেননা ইহা আলোচনা না করলে মাইকের (loudspeakers) ব্যপারে অনেক প্রশ্নই থেকে যাবে - বিদ'আত ﺑﺪﻋﺔ একটি আরবি শব্দ যার অর্থ নতুন উদ্ভাবন বা সৃষ্টি (innovate) ইত্যাদি। মুসলিম বিশ্বে হালাল, হারাম, শিরিখ ইত্যাদি শব্দের ন্যায় বিদ'আত একটি অতি পরিচিত পরিভাষা। অর্থ ও প্রয়োগের ভিত্তিতে এটি সুন্নতের বিপরীত হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এই শব্দটি পবিত্র কোরানে শুধু
মাত্র চারবার এসেছে। সূরা বাকারার ০২:১১৭ নং আয়াতে, সূরা আনামের ০৬:১০১ নং আয়াতে এবং সূরা আহকাফের ৪৬:০৯ নং আয়াতে। উত্ত আয়াত গুলোতে আসা শব্দটির ধাতু থেকে উদ্ভুতআরেকটি শব্দ আলকোরানের, সূরা আল
হাদিদের ৫৭:২৭ নং আয়াতে এসেছে। আয়াতটি হলো,
ﻭﺭﻫﺒﺎ ﻧﻴﺔ ﺍﺑﺘﺪ ﻋﻮ ﻫﺎ ﻣﺎ ﻛﺘﺒﻨﻬﺎ ﻋﻠﻴﻬﻢ ‏ ( ﺍﻟﺤﺪﻳﺪ )
"আর বৈরাগ্যবাদ সে তো তারা নিজেরাই উদ্ভাবন করেছিল (innovated)। আমি এটি তাদের উপর আরোপ করিনি"
এখানে ﺍﺑﺘﺪﺀ শব্দটি মূল শব্দ ﺑﺪﻉ থেকে এসেছে যার অর্থ নতুন কিছু সৃষ্টি করা
(Innovate)।
অর্থের ভিত্তিতে বিদ'আত
""""""""""""""""""""""""""""""""""""
আসুন এবার অর্থের ভিত্তিতে বিদ'আত কি এবং ইসলামী শরীয়তে বিদ'আতের ভিত্তি কি তা জেনে নিইঃ ইতিপূর্বে বিদ'আত শব্দটি উল্লেখ করেছি যার অর্থ নতুন কিছু সৃষ্টি করা (Innovate)।
এ- অর্থ অনুযায়ী উড়োজাহাজ, গাড়ি, বিদ্যুৎ, ফ্যান, বাতি ইত্যাদি সবই বিদ'আতের মধ্যে পড়ে। তবে ইসলামী শরীয়ত বিদ'আত বলতে এসব কে বুঝায়না। বরং ইসলামী শরীয়ত বিদাত বলতে ঐসব বিশ্বাস ও কাজের নব উদ্ভাবনকে বুঝায় যাতে দুনিয়ার কোনো সার্থ নেই বরং আখিরাতই এক মাত্র উদ্দেশ্য। যেমনঃ নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত,
ঈদ ইত্যাদি। এই বিষয়টি বুঝাতে গিয়ে ইমাম মালেক (র) সর্বপ্রথম বিদাতকে দুইটা ভাগ করেছেন। বিদাতে হাসনা বা উত্তম বিদাত এবং বিদাতে সায়্যাহ বা খারাপ বিদাত। বিদাতে হাসনাহ হলো, যা করা ভাল, যাতে গুনাহ নেই। যেমনঃ ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন করা, আযানের পূর্বে সালাত সালাম দেয়া, ক্বিয়াম করা, গাড়ি, কলম, কম্পিউটার ইত্যাদি।
বিদাতে সায়্যাহ হলো, যা করা খারাপ, যা করলে গুনাহ হয়। যেমনঃ গান শোনা, অশ্লীল ছবি দেখা, তবে তাদের এই প্রকারভেদটা একেবারেই ভিত্তিহীন যা ইসলামী শরীয়তে বিকৃতি ঘটার কারণ। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, সকালের ফরজ নামাজ দুই রাকাত। কেউ যদি বলে, ইবাদত বেশি করা ভাল এবং তা হবে বিদাতে হাসনাহ তাই সকালের ফরজ নামাজ
দুই রাকাতের বেশি পড়লে অসুবিধা নেই। তবে কি ইহা মানা যাবে?? কখনো নয়, কেউ ইহা মেনে নিবেনা। অতএব, প্রকারভেদটা যে ভিত্তিহীন তা এই একটি উদাহরণে বুঝতে সক্ষম হয়েছেন।
বিদা'আতের সংজ্ঞা
"""""""""""""""""""""""""""""
যেসব কাজ ও বিশ্বাসের মধ্যে দুনিয়ার কোনো সার্থ নেই বরং আখিরাতই একমাত্র উদ্দেশ্য এমন কাজ ও বিশ্বাসের মধ্যে নব উদ্ভাবনকে বিদা'আত বলে। যেমনঃ নামাজ, রোজা, হজ্ব, যাকাত ইত্যাদিতে বাড়ানো বা কমানো ই বিদা'আত। নিম্নে বিভিন্ন ইসলামিক পন্ডিতদের দেয়া বিদাতের সংজ্ঞা উল্লেখ করলাম। ইমাম রাগিব (র) বলেন, কোনো রকম আগের
নমুনা না দেখে এবং অন্য কিছুর অনুসরণ না করেই কোনো কাজ নতুন ভাবে করাকে বিদাত বলে।
ইমাম তাইমিয়্যাহ (র) বলেন, দীনের মধ্যে বিদাত হলো এমন জিনিস যার বিধান আল্লাহ ও তার রাসূল (সা) দেননি। যে ব্যাপারে অবশ্যই করতে হবে বা করাটা উত্তম এমন আদেশ বা বিধান নেই। ইমাম ইবনে রজব আল হাম্বলী(র) বলেন, বিদাত বলতে এমন নতুন উদ্ভাবিত জিনিস কে বুঝায়, যা প্রমাণের জন্য শরীয়তে কোনো ভিত্তি নেই।
মাওলানা আব্দুর রহিম বলেন, কোনো কাজ, বিষয়, ব্যাপার, নিয়ম, প্রতা পদ্ধতি দ্বীনের নামে নেক আমল ও সওয়াবের কাজ বলে চালিয়ে দেওয়ায় বিদাত। তবে আমি মনে করি উপরোক্ত সংজ্ঞা গুলো সংক্ষীর্ণ এবং এগুলো দ্বারা বিদাতের সঠিক ও সুন্দর ভাবে প্রকাশ পায়নি। তাই আমি বিদাতকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করতে পছন্দ করেছি, "যে আমল নবীজি (সা) তার সময়ে করতে পারতেন, করার সুযোগ ছিল কিন্তুু করেননি তার সাহাবীগণও করেননি তা বর্তমান সময়ে করাটা বিদা'আত"। রাসূল (সা) বলেন,
ﺍﻥ ﺃﺻﺪﻕ ﺍﻟﺤﺪﻳﺶ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺃﺣﺴﻦ ﺍﻟﻬﺪﻱ ﻫﺪﻱ
ﻣﺤﻤﺪ ﻭﺷﺮ ﺍﻷ ﻣﻮﺭ ﻣﺤﺪ ﺷﺎ ﺗﻬﺎ ﻭﻛﻞ ﻣﺤﺪ ﺷﺔ ﺑﺪﻋﺔ
ﻭﻛﻞ ﺑﺪﻋﺔ ﺿﻼ ﻟﺔ ﻭﻛﻞ ﺿﻼ ﻟﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ
সত্যতম বাণী আল্লাহর কিতাব, আর সর্বোত্তম আদর্শ মুহম্মদের (সা) আদর্শ, সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো বিদাআত। আর প্রত্যেক বিদাআতই গোমরাহী তথা পথভ্রষ্টতা (মুসলিম)।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) বলেছেন,
ﺍﻥ ﻣﻦ ﺃﺑﻐﺾ ﺍﻻﻣﻮﺭ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺍﻟﺒﺪﻉ
"নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সবচেয়ে ঘৃণিত বিষয় হলো বিদাত"
এসব হাদিস অনুসারে বিদাতের একটি ভিন্ন সংজ্ঞা হলো, "অপ্রয়োজনে ইবাদতের নামে নতুন কোনো আমল উদ্ভাবন করাটাই বিদাআত "। কারণ নবীজি (সা) যে গাড়ি, প্লেন, কম্পিউটার, মোবাইল, মাইক, ইত্যাদি প্রয়োজনীয় নতুন
জিনিস গুলোকে ভ্রষ্টতা বলে আখ্যা দেননি তা সকল বিষেশজ্ঞগণই একমত।

বিদ'আত সম্পর্কে কোরান সুন্নাহর নির্দেশ
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
কিভাবে ইবাদত করলে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা সম্ভব তা তিনি নবী রাসূলের মাধ্যমে শিক্ষা দেন। কিন্তুু তারপরও মানুষ নিজেরাই এমন কিছু নতুন নিয়মের উদ্ভাবন করে যা আল্লাহ তার নবীদের দ্বারা শিক্ষা দেননি। এরূপ ইহুদি
খ্রিষ্টানরাও করেছিল, তাই আল্লাহ তায়ালা তাদের বিদাতি কাজের তিরোষ্কার করে বলেন,
ﻭﺭﻫﺒﺎ ﻧﻴﺔ ﺍﺑﺘﺪ ﻋﻮ ﻫﺎ ﻣﺎ ﻛﺘﺒﻨﻬﺎ ﻋﻠﻴﻬﻢ ‏( ﺍﻟﺤﺪﻳﺪ )
আর বৈরাগ্যবাদ সে তো তারা নিজেরাই উদ্ভাবন করেছিল। এটি আমি তাদের উপর আরোপ করিনি।
(আলকোরান, সূরা আল হাদিদ, আয়াত ৫৭:২৭) ।
রাসূল (সা) বলেন,
ﺃﺻﺪﻕﺍﻥ  ﺍﻟﺤﺪﻳﺶ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﺃﺣﺴﻦ ﺍﻟﻬﺪﻱ ﻫﺪﻱ
ﻣﺤﻤﺪ ﻭﺷﺮ ﺍﻷ ﻣﻮﺭ ﻣﺤﺪ ﺷﺎ ﺗﻬﺎ ﻭﻛﻞ ﻣﺤﺪ ﺷﺔ ﺑﺪﻋﺔ
ﻭﻛﻞ ﺑﺪﻋﺔ ﺿﻼ ﻟﺔ ﻭﻛﻞ ﺿﻼ ﻟﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﻨﺎﺭ
সত্যতম বাণী আল্লাহর কিতাব, আর সর্বোত্তম আদর্শ মুহম্মদের (সা) আদর্শ, সবচেয়ে খারাপ বিষয় হলো বিদাআত। আর প্রত্যেক বিদাআতই গোমরাহী তথা পথভ্রষ্টতা (মুসলিম)।
তিনি আরও বলেন,
ﻣﻦ ﻋﻤﻞ ﻋﻤﻼ ﻟﻴﺲ ﻋﻠﻴﻪ ﺃﻣﺮ ﻧﺎ ﻓﻬﻮ ﺭﺩ
আমাদের কর্ম নয় এমন কোনো কর্ম যদি কোনো মানুষ করে তাহলে তার কর্ম প্রত্যাখ্যাত হবে (বুখারী)।
আল্লাহ তার রাসূলের বিদাতি উম্মতদের হাশরের ময়দানে হাওযে কাওছারের পানি পান করতে দিবেনা (বুখারী)।
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) বলেছেন, ﺍﻥ ﻣﻦ ﺃﺑﻐﺾ ﺍﻻﻣﻮﺭ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﺍﻟﺒﺪﻉ
"নিশ্চয়ই আল্লাহর নিকট সবচেয়ে ঘৃণিত বিষয় হলো বিদাত"
সাহাবী ইবনে মাসূদ (রা) বলেন, ﺍﺗﺒﻌﻮﺍ ﻭﻻ ﺗﺒﺘﺪ ﻋﻮﺍ ﻓﻘﺪ ﻛﻔﻴﺘﻢ
"তোমরা অনুসরণ কর, উদ্ভাবন করোনা। দ্বীনের মধ্যে যা আছে তাই তোমাদের জন্য যতেষ্ট"।
কোরান, হাদীস ও সাহাবীদের বক্তব্য থেকে একথা প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য অপ্রয়োজনে সুন্নাহ
বহির্ভূত কোনো কাজ করা বিদাত এবং হারাম।
(বিদ'আত সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বাংলা ভাষীদের জন্য আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীরের লেখা "এহইয়াউস সুনান" বইটি যতেষ্ট)।
সুন্নতের নামে বিদ'আত
""""""""""""""""""""""""""""""""""""
আমরা জানি রাসূল (সা) দৈনন্দিন জীবনে যা কিছু করতেন, করার নির্দেশ দিতেন অথবা করার জন্য মনোসম্মতি দিতেন তা সুন্নত। কিন্তুু আমরা অনেক সময় সুন্নতকে বিদাত করে ফেলি। এর কারণ রাসূল (সা) এর সুন্নতের উদ্দেশ্য না জানা
এবং জানার চেষ্টাও না করা। যেমনঃ
১। দাড়িয়ে পস্রাব করার ব্যাপারে হাদিস আছে তাই বলে দাড়িয়ে পস্রাব করাকে সুন্নত মনে করা বিদাত।
২। নবীজি (সা) ও তার কয়েকজন সাহাবীকে (রা) ঘরের ভিতর কবর দেয়া হয়েছিল। তাই বলে ঘরের ভিতর লাশ দাফনকে সুন্নত মনে করা বিদাত।
৩। একবার নবীজি (সা) দুটি কবরের পাশ দিয়ে হেটে যাওয়ার সময় ঐ কবর গুলোর উপর খেজুর গাছের ডাল পুতে দেন। তাই বলে কবরের উপর খেজুর গাছের ডাল পুতে দেয়াকে সুন্নত মনে করা বিদাত।
৪। নবীজি (সা) এর জুমার খুতবা আরবিতে দেয়া এবং খুতবা দেয়ার সময় হাতে লাঠি নেয়াকে সুন্নত মনে করা বিদাত।
৫। নামাজের সময় মুকাব্বির দেওয়াকে সুন্নত মনে করা বিদাত। এখানে আমি শুধু এই বিষয়ে কয়েকটি উদাহরণ
দিলাম, ব্যাখ্যা করলাম না, আপনি একটু চিন্তা করলে নিজেই এসবের ব্যাখ্যা খুঁজে পাবেন।

মাইক কি বিদ'আত?
"""""""""""""""""""""""""""""""
মাইকও বিদ'আত,তবে তা অর্থের ভিত্তিতে সংজ্ঞার ভিত্তিতে নয়। উপরে আমরা বিদাত সম্পর্কে যে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছি তা থেকে এবিষয়ে সামান্য হলেও অবগত হয়েছি যে, ইসলামী শরীয়তে বিদাত কাকে বলে।
তারপরও মনের মধ্যে যাতে এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন না জাগে সে জন্য আলাদা ভাবে মাইক বিদাত না হওয়ার কারণ গুলো
আলোচনা করলাম। বিদাতের যে সংজ্ঞা আমরা জানলাম, সে অনুযায়ী মাইক বিদাত না হওয়ার চারটি কারণ রয়েছে।
১। মাইক সওয়াবের আশায় ব্যবহার করা হয়না।
২। মাইক অপ্রয়োজনীয় নয়।
৩। মাইক ব্যবহারে ইবাদতের কোনো
পরিবর্তন হয়না। এবং
৪। রাসূলের যুগে মাইকের প্রয়োজন ছিল, মাইকও ছিল তা সত্বেও তিনি তা ব্যবহার করেননি এমনটাও নয়।
উল্লেখিত কারণ গুলোর একটি কারণও যদি ইবাদতে মাইক ব্যবহারের জন্য প্রযোজ্য হয়, তবে তা অবশ্যই বিদাত ও হারাম বলে গণ্য হবে। এবার আপনি চিন্তা করে দেখুন, সওয়াবের আশায় ইবাদতে মাইক ব্যবহার হয় কিনা?
ইবাদতে মাইক অপ্রয়োজনীয় কিনা? মাইক ইবাদতের কোনো পরিবর্তন ঘটায় কিনা? এবং রাসূলের যুগে মাইক ছিল, প্রয়োজন ও ছিল তা সত্ত্বেও তিনি তা ব্যবহার করেনি, এমনটাও হয়েছে কিনা? যদি তা না হয়, তবে তা বিদাত বলে গণ্য হবেনা। কেননা, ইসলামী শরীয়তে মুবাহ জিনিস হারাম হওয়ার জন্য উল্লেখিত এই বিষয় গুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
ইবাদতে মাইকের ব্যবহার হারাম মনে করার কারণ ও তার বিশ্লেষণ,
""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""""
একথা সত্য যে, আলেমে দ্বীনেরা যখনই নতুন কোনো কিছু দেখেন, তখনই তারা খুবই সতর্কতা অবলম্বন করেন। এ সচেতনতা খুবই ভাল দিক। কিন্তুু কখনো কখনো তাদের এই সচেতনতা গোঁড়ামী তে পরিণত হয়। যেমন, এক সময় উপমহাদেশের আলেমেদ্বীনেরা আরবি ভাষার পাশাপাশি উর্দু, ফার্সি ভাষা শিখত। কিন্তুু, তাদের যখন ইংরেজী ভাষা শেখার কথা বলা, তখন তারা চরমভাবে আপত্তি জানাই। এভাবে অনেক আলেমেদ্বীনেরা প্রথম দিকে ইবাদতে মাইকের ব্যবহারে আপত্তি জানালেও পরবর্তীতে মাইকের প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে অনেক আলেমেদ্বীন
ইবাদতে মাইক ব্যবহারের অনুমতি দেয়। বলা যায় বর্তমান বিশ্বের প্রায় সকল মসজিদে মাইক ব্যবহার করা হয়। এমনকি মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীতেও মাইকের ব্যবহার হচ্ছে। তারপরও এমন কিছু আলেম আছে, যারা
এখোনো বিশ্বাস করে যে, ইবাদতে মাইক ব্যবহার করা হারাম। এ জন্য তারা কারণও উল্লেখ করে। এ পর্যায়ে আমি তাদের এই কারণ গুলোর প্রধান কিছু উল্লেখ পূর্বক এগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে তা কতটুকু যৌত্তিক  ও গ্রহণযোগ্য তা আমি উপস্থাপন করার চেষ্টা করতেছি।
(ক) "ইবাদতে মাইক ব্যবহার করলে তা ইবাদাতের পরিবর্তন ঘটায়"
বাহ্যিক দৃষ্টিতে এ কথার যৌত্তিকতা থাকলেও একটু চিন্তা করলে বুঝতে পারব উক্ত কথাটি কতটুকু অযৌক্তিক ও বিভ্রান্তিকর। যেমন, আমাদের নবীজি (সা) উত্তপ্ত গরমে খুব কষ্ট করে নামাজ আদায় করত। আর আমরা কত আরাম
আয়েশের মধ্যে নামাজ আদায় করি, ইহা কি ইবাদতের পরিবর্তন নয়? নবীজি (সা) লম্বা জামা পড়ে, কাপড় দিয়ে পাগড়ি বানিয়ে নামায আদায় করত। আর আমরা শার্ট পেন্ট ও মাথায় টুপি পড়ে নামায আদায় করি। ইহা কি ইবাদতের পরিবর্তন নয়? আমার এই প্রশ্নগুলো অযৌক্তিক মনে হলেও এগুলোর যৌত্তিকতা রয়েছে যদি বিশ্বাস করি, ইবাদতে মাইক ব্যবহার করলে তা ইবাদতের পরিবর্তন ঘটায়। আসলে এই ধরনের বাহ্যিক পরিবর্তনকে ইবাদতের পরিবর্তন বুঝায়না। বরং ইবাদতের মধ্যে এমন কিছু সংযোজন ও বিয়োজনের করাকে বুঝায়, যা অপ্রয়োজনীয়, যাতে সওয়াবের আশায় করা
হয় এবং যা সুন্নতের পরিপন্থী। যেমন, ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ এক রাকাত বা চার রাকাত পড়লে অর্থাৎ কম বেশি করলে তা ইবাদতের পরিবর্তন বলে গণ্য হবে। কারণ এখানে সংযোজন বিয়োজনের অপ্রয়োজনীয় এখানে সওয়াবের আশা করা হবে এবং সুন্নতের পরিবর্তনও ঘটবে। যেহেতু ফজরের ফরজ নামাজ দুই রাকাত আদায় করা সুন্নত। এবার চিন্তা করলে বুঝা যায় যে, ফজরের ফরজ নামাজ এক রাকাত বা চার রাকাত আদায় করলে ইবাদতের যে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় তা ইবাদতে মাইক ব্যবহারের কারণে লক্ষ্য করা যায়না। তাই বলা যায়, ইবাদতে মাইক ব্যবহার করলে
ইবাদতের পরিবর্তন ঘটে এমন ধারণা বা বিশ্বাস অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন। তাছাড়া ইবাদতে মাইক ব্যবহার করা হয় কেবল মাত্র ইবাদতের উপকরণ (Comforts) হিসেবে, ইবাদতের অংশ (Parts) হিসেবে নয়। যদি মাইক সওয়াবের উদ্দেশ্যে ইবাদতের অংশ (Parts) হিসেবে ব্যবহার করা হত, তবে অবশ্যই ইবাদতের পরিবর্তন ঘটেছে বলে গণ্য হত। এখন আপনার মনে ছোট একটি প্রশ্ন রয়ে যেতে পারে। তা হচ্ছে, ইবাদতের উপকরণ (Comforts) জিনিসটা কি? উত্তর
হলো, ইবাদত করার সময় তাতে ঐ জিনিসের ব্যবহার করা, যা ব্যবহারের মধ্যে সওয়াবের আশা করা হয়না, যা অপ্রয়োজনীয় নয় বরং শুধু মাত্র ইবাদত করার সুবিধার্থে হিকমা (Strategy) স্বরূপ ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তা ইবাদতের উপকরণ। যেমন, দ্বীনের দাওয়াত অন্যের নিকট পৌঁছানো একটি ইবাদত। আর কেউ যদি তা পত্রিকা, ফেসবুক, টুইটার, রেডিও,টেলিভিশন, ইত্যাদির সাহায্যে করে, তবে এসব হবে উত্ত ইবাদতের উপকরণ (Comforts)। এভাবে, মসজিদ, মিনার, মাইক, প্যান ইত্যাদি সবই ইবাদতের উপকরণ। অতএব, উপরের আলোচনা থেকে একথা
জানতে পারলাম যে, ইবাদতে মাইক ব্যবহার করলে তাতে ইবাদতের কোনো পরিবর্তন ঘটেনা বরং মাইক ইবাদতের উপকরণ হিসেবে ব্যবহার হয়।
(খ) "মসজিদের ভিতর আযান দেয়া মাকরূহ" (ফাতহুল মুবীন,পৃষ্ঠা নং - ১)
যেসব লোকেরা ইবাদতে মাইক ব্যবহারকে হারাম মনে করেন, তার এটাও একটি কারণ যে, তারা বিশ্বাস করে মসজিদের ভিতর আযান দেয়াটা মাকরূহ। কারণ নবীজি (সা) মসজিদের ভিতর কখনো আযান দেননি। তার সাহাবীগণ ও দেননি।তাই তারা মসজিদের ভিতর আযান দেয়াকে মাকরূহ মনে করেন। এখানে তাদের দলিল কোরান হাদিসের সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা নয়। বরং একটি খোড়া যুক্তি ও কিছু বিশেষজ্ঞদের মতামত। তাই আমি এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চাই। এ- কথা সত্য যে, নবীজি (সা) ও তার পরবর্তী সময়ে কোনো আলেম মসজিদের ভিতর আযান দেয়নি। তার কারণ, আযান দেয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য মুসল্লীদের নামাজের জন্য আহ্বান করা। কিন্তুু এই আযান মসজিদের ভিতর দিলে
অনেক মানুষই আযান শোনতে পারবেনা। তাই মসজিদের বাইরে আযান দেয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ শর্ত আযানের। ইহা বাদ দিলে আযানের উদ্দেশ্যেই ব্যর্থ হয়ে যাবে। সুতরাং এ অবস্থায় মসজিদের ভিতর আযান দিলে তা আদৌ গ্রহণযোগ্য হবেনা। তাছাড়া সুন্নাহ থেকে আযানের নুন্যতম যে শর্তাবলী পাওয়া যায়, তার একটিও বাদ পড়লে আযানের হক আদায় হবেনা। শর্তগুলো হলো, 
১। রাসূলুল্লাহ্ (সা) শিখানো কালিমা গুলো বলতে হবে।
 ২। পুরুষ মানুষের কন্ঠে হতে হবে।
৩। মুসল্লীদের আযান শোনানোর যথাযথ চেষ্টা করতে হবে।
৪। আযান দেয়ার সময় ক্বিবলা মূখি হয়ে দাড়াতে হবে।
যেহেতু, মাইকের মাধ্যমে আযান দিলে উপরোক্ত শর্তাবলীর একটিও বাদ পড়েনা, তাই মাইক দিয়ে আযান দিলে মাকরূহ হবে, এমন ধারণা অবান্তর ও ভিত্তিহীন। এরপরও কেউ যদি এই ধরনের প্রশ্ন তুলে, হযরত বিলাল (র) আযান মসজিদের ভিতরে দিয়েছে নাকি বাইরে দিয়েছে, উচুতে দাড়িয়ে দিয়েছে নাকি নিচুতে দাড়িয়ে দিয়েছে, পাচ ফুট উপরে দাড়িয়ে
দিয়েছে নাকি দশ ফুট উপরে দাড়িয়ে দিয়েছে, ইটের উপর দাড়িয়ে দিয়েছে নাকি পাথরের উপর দাড়িয়ে দিয়েছে ইত্যাদি প্রশ্ন তুলে সুন্নত আমদানির নামে ফিতনা সৃষ্টি করে, তবে এমন লোকদের শয়তান বলা ছাড়া আর কোনো ফতোয়া আমার জানা নেই।
(গ) "মাইকের আওয়াজ বক্তার আসল আওয়াজ নয়, তাই ইহার মাধ্যমে ইবাদত করা হারাম"
তার মানে এখানে আসল আওয়াজ ও নকল আওয়াজ নিয়ে বিতর্ক। এ বিতর্ক যে অযৌক্তিক ও অবান্তর তা বুঝানোর জন্য আমি কিছু দৃষ্টান্ত পেশ করতেছি। ধরুণ, কেউ পাগড়ি পড়ে -কেউ টুপি পড়ে, কেউ সবুজ টুপি পড়ে- কেউ সাদা টুপি
পড়ে, কেউ কাপড়ের টুপি পড়ে আবার কেউ প্লাস্টিকের টুপি পড়ে নামাজ আদায় করে এবং পাগড়ি বা টুপির এই পার্থক্যের কারণে যদি কোনো ফিতনা বা বিতর্কের সৃষ্টি হয়, তবে এই ফিতনা বা বিতর্ক মিটানোর জন্য আমাদের
আসল বিষয়টিকে সামনে আনত হবে। এখানে আসল বিষয় পাগড়ি বা টুপি এবং তাদের বর্ণ নয়, বরং আসল বিষয়টি হলো, রাসূল (সা) সবসময় মাথা আবৃত বা ঢেকে রাখতেন এ কথাটাই। সুতরাং, কেউ যদি হালাল ও পবিত্র কিছু দ্বারা নিজের মাথা ঢেকে রাখে তবে তাতেই সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। এটাই সঠিক পন্তা। এই উদাহরণ থেকে এই কথা
বুঝানোর চেষ্টা করেছি যে, মাইকের মাধ্যমে বের শব্দের আওয়াজ আসল না নকল তা আসল বিষয় নয়। বরং আসল বিষয় হচ্ছে, মাইকের মাধ্যমে বের হওয়া শব্দের অর্থ। মাইকের কারণে যদি শব্দের অর্থের কোনো পরিবর্তন না ঘটে, তবে অবশ্যই তা সঠিক ও সত্য বলে মেনে নিতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ বলতে পারি, প্রায় ৬৮১ সালের পূর্ব সময় পর্যন্ত কোরআনের মধ্যে কোনো হরকত ছিলনা। পরে অনারব মুসলমানদের কুরান পাঠের সুবিধার জন্য উপকরণ
স্বরূপ ৬৮১ সালে ইমাম হাজ্বাজ বিন ইউসুফ (রাজত্ব:ইরাক, ৬৬১-৭১৪ ইং) কোরানে হরকত সংযোজন করেন। তাই বলে এই কোরান নকল হয়ে গেছে কিংবা পরিবর্তন হয়ে গেছে এমনটা কেউ বলেনা। কারণ এখানে অর্থটাই আসল।
অর্থের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলেই সকল আলেমেদ্বীন একমত যে, কোরানে হরকত সংযোজনে কোনো দোষ নেই। একই ভাবে মাইক দিয়ে কোরান পাঠ শোনালে এবং তাতে যদি অর্থের পরিবর্তন না ঘটে, তবে তা দ্বারা কুরআন পাঠ ও শোনা উভয় জায়েজ। এতে পৃথিবীর সকল বিশেষজ্ঞগণ একমত। কেবলমাত্র বিচ্ছিন্ন কিছু আলেমেদ্বীন ব্যতীত। আমি এই বিচ্ছিন্ন আলেমেদ্বীন দের বিরোধিতাকে খারাপ বলিনা। কিন্তুু কেউ যদি এর কারণে কোরআনের অপব্যাখ্যার মাধ্যমে
অন্যদের কাফের বলে দেয় এবং ফিতনার উদ্ভব ঘটায়, তবে আমি ইহাকে বিরোধীতার নামে চরম অজ্ঞতায় বলি।
(ঘ) "মাইকের কারণে মুকাব্বির প্রথা বিলুপ্ত হচ্ছে যা রাসূল (সা) এর সুন্নত "
আমি আবারও এ কথা স্বীকার করতেছি যে, মুকাব্বির দেওয়া সুন্নত, তবে তা প্রয়োজনের ভিত্তিতে অপ্রয়োজনে নয়। নবীজি (সা) এর সময় যখন মসজিদে মুসল্লীদের সংখ্যা বেড়ে যেত, তখন পিছনের মুসল্লীরা ইমামের ক্বিরাত ও তাকবীর বলা কিছুই শোনতে পেতোনা। এতে নামাজে ইমামের অনুকরণ করে নামাজ আদায় করা সম্ভব হতোনা। নামাজে
ক্বিরাত না শোনলেও অন্তত ইমামের অনুকরণ করে রুকু-সিসদাহ বা উটা-বসা যাতে ইমামের সাথে করতে পারেন, সেজন্য রাসূল (সা) মুকাব্বির প্রথার নিয়ম চালু করেন। কিন্তুু নামাজে মাইক ব্যবহারের ফলে বর্তমানে মুকাব্বিরের প্রয়োজন নেই, তাছাড়া ইহা নামাজ কবুল হওয়ার কোনো শর্তও নয়। তাই ইহা বাদদিলে নামাজের কোনো ক্ষতি হবে এমনটা বিশ্বাস করা ঠিক নয়। তারপরও সুন্নত বর্জিত হয়েছে মনে করে অনেকেই এটা নিয়ে সংশয়ে থাকতে পারেন। তাই মনের সংশয় দূর করার জন্য একটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করতে চাই। তা হলো, আমরা সকলেই জানি সময় মত নামাজ আদায়
করা ফরজ। আর রাসূল (সা) এই সময় নির্নয় করত সূর্য দেখে। এখন কি কেউ বলে ঘড়ি দেখে নামাজ পড়া হারাম?
আসলে সুন্নতের দোহাই দিয়ে মাইক ও ঘড়ির মতো প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের উপকরণ থেকে দূরে থাকা সত্যিই গোড়ামির বহির্প্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়।
(ঙ) "মাইক গান বাজনায় ব্যবহার করা হয় বলে ইবাদতে ব্যবহার করা হারাম"
এটা যে অবান্তর, অযৌক্তিক ও বিভ্রান্তিকর কথা তা অধিকাংশ মানুষই বুঝতে পারে। তবে যারা বুঝতে পারেনা বা বুঝার চেষ্টা ও করেনা তাদের জন্য দুটি প্রশ্ন রাখলাম,
১। আমরা মুখ দিয়ে অনেক সময় খারাপ কথা বলি, তাই বলে কি এই মুখ দিয়ে আল্লাহর নাম নেয়া হারাম?
২। মসজিদ আল্লাহর পবিত্র ঘর, তাই বলে কি ঘরে কাফেরদের তৈরি করা বাল্ব, প্যান, টাইচ, রং ইত্যাদি ব্যবহার করা হারাম?
(চ) "কোরআন মাজিদে এমন ১৪ টি আয়াত আছে যা শোনলে সিসদাহ দিতে হয় এবং সিসদাহ দেওয়া ওয়াজিব। কিন্তুু মাইকের কোরআন শোনলে অনেক মানুষ সিসদাহ দিতে পারেনা, তাই মাইক দিয়ে কোরআন পাঠ হারাম। তা হোক নামাজের ভিতরে বা বাইরে"
সিসদাহর আয়াত গুলো শোনলে তাতে সিসদাহ দেয়া ওয়াজিব। কিন্তুু কিভাবে শোনলে সিসদাহ দেয়া ওয়াজিব হয় তা আমরা রাসূল (সা) এর সুন্নত এবং তার পরবর্তী সাহাবী, তাবেঈ ও তাবে-তাবেঈ কাছ থেকে শিক্ষা পাই।
রাসূল (সা) যখন সিসদাহর আয়াত গুলো পাঠ করতেন তখন সিসদাহ দিতেন আবার মাঝে মাঝে তা থেকে বিরত থাকতেন। এই বিষয়ে একটি দলিল হলো, সূরা ওয়ান নাজমে সিসদাহর আয়াত আছে অথচ নবীজি (সা) কখনো কখনো সূরা ওয়ান নাজমুল পড়ে সিসদাহ দেননি। (সহীহ্ আল- বুখারি, খন্ডঃ ০২, হাদিস নং ১০১১-১২)
কোরআন শোনতে আসেনি বা কোরআন শোনতে অনিচ্ছুক ব্যক্তি যদি সিসদাহর আয়াত শোনে তবে তাকে সিসদাহ দিতে হবেনা। এই বিষয়ে ইমরান ইবনে হুসাইন (রা) জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, যে লোক কোরআন শোনতে আসেনি কিন্তুু সে সিসদাহর আয়াত শোনলে তাকে কি সিসদাহ দিতে হবে? উত্তরে তিনি উল্টো প্রশ্ন করে বলেন, বসলে্ও কি তাকে সিসদাহ দিতে হতো? তিনি আরও বলেন, আমরা এ জন্য আসেনি। তার মানে এই অবস্থায় সিসদাহ ওয়াজিব হয়না। উসমান ইবনে আফ্-ফান(র) বলেন, যে মনোযোগ সহকারে সিসদাহর আয়াত শোনে তার উপর সিসদাহ ওয়াজিব হয়। আর সায়িব ইবনে ইয়াযিদ (র.)বক্তার বক্তৃতায় সিসদাহর আয়াত শোনে সিসদাহ করতেন না।
(সহীহ্ আল বুখারি, খন্ড নং ০২,অনুচ্ছেদঃ৬৯২)।
উমর ইবনে খাত্তাব (রা) জুমার খুতবায় বলেন, হে লোক সকল! আমরা যখন সিসদাহর আয়াত তেলাওয়াত করি তখন যে সিসদাহ করবে সে ঠিকই করবে। আর যে করবেনা তার কোনো গুনাহ নেই। বর্ণনাকারী বলেন, উমর (রা) সিসদাহ করেননি। নাফি (র) উমর (র) থেকে আরও বলেন, আল্লাহ তায়ালা সিসদাহ ফরজ করে দেননি।
তবে আমরা ইচ্ছা করলে সিসদাহ দিতে পারি। (সহীহ্ আল বুখারি, খন্ডঃ০২, হাদিস নং ১০১৬)।
আশা করি উপরোক্ত আলোচনা থেকে সিসদাহ দেয়ার ব্যপারে কিছু নিয়মনীতি শিখতে পারলাম এবং প্রয়োজনে মাইকে কুরআন পাঠ করলেও তাতে সিসদাহ জনিত সমস্যা আছে কিনা তা জানতে পারলাম।
ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসনে শেষ পর্ব 
June 30, 2015 at 11:31pm
Ibadate maike

Comments

  1. ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে একটি অভিযোগের জবাবঃ
    অভিযোগঃ"মাইকের কারণে মুকাব্বির প্রথা বিলুপ্ত
    হচ্ছে যা রাসূল (সা) এর সুন্নত "
    জবাবঃ আমি আবারও এ কথা স্বীকার করতেছি যে,
    মুকাব্বির দেওয়া সুন্নত, তবে তা প্রয়োজনের
    ভিত্তিতে অপ্রয়োজনে নয়। নবীজি (সা) এর
    সময় যখন মসজিদে মুসল্লীদের সংখ্যা
    বেড়ে যেত, তখন পিছনের মুসল্লীরা
    ইমামের ক্বিরাত ও তাকবীর বলা কিছুই শোনতে
    পেতোনা। এতে নামাজে ইমামের অনুকরণ
    করে নামাজ আদায় করা সম্ভব হতোনা। নামাজে
    ক্বিরাত না শোনলেও অন্তত ইমামের অনুকরণ
    করে রুকু-সিসদাহ বা উটা-বসা যাতে ইমামের সাথে
    করতে পারেন, সেজন্য রাসূল (সা) মুকাব্বির
    প্রথার নিয়ম চালু করেন।
    কিন্তুু নামাজে মাইক ব্যবহারের ফলে বর্তমানে
    মুকাব্বিরের প্রয়োজন নেই, তাছাড়া ইহা নামাজ
    কবুল হওয়ার কোনো শর্তও নয়। তাই ইহা
    বাদদিলে নামাজের কোনো ক্ষতি হবে এমনটা
    বিশ্বাস করা ঠিক নয়। তারপরও সুন্নত বর্জিত
    হয়েছে মনে করে অনেকেই এটা নিয়ে
    সংশয়ে থাকতে পারেন। তাই মনের সংশয় দূর
    করার জন্য একটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করতে চাই। তা
    হলো, আমরা সকলেই জানি সময় মত নামাজ আদায়
    করা ফরজ। আর রাসূল (সা) এই সময় নির্নয় করত
    সূর্য দেখে। এখন কি কেউ বলে ঘড়ি দেখে
    নামাজ পড়া হারাম?
    আসলে সুন্নতের দোহাই দিয়ে মাইক ও ঘড়ির
    মতো প্রভৃতি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের উপকরণ
    থেকে দূরে থাকা সত্যিই গোড়ামির বহির্প্রকাশ
    ছাড়া আর কিছুই নয়।

    ReplyDelete
    Replies
    1. উত্তর দাতার কথা গুলোর ১০০% রাইট মনে হচ্ছে

      Delete
  2. ভাইয়া আমি আপিনার সাথে যোগাযোগ করতে চাই।

    ReplyDelete
  3. bhaiya plzz aponar Facebook id or aponar number ta den..ami aponar sathe kiso kotha bolte chai...ar aponar sob gula kitha thik bole ami mone kori

    ReplyDelete
    Replies
    1. শুকরিয়া। দেরিতে রিপ্লাই করার জন্য sorry!

      Delete
  4. মাইকের সাহায্য ইবাদত করা সম্পুর্ন হারাম

    ReplyDelete
    Replies
    1. কোন কিছু হারাম হওয়া অতো সহজ ব্যাপার নয়।

      Delete
  5. This comment has been removed by a blog administrator.

    ReplyDelete
  6. মাইকের সাহায্য নামাজ,আযান,খুৎবা,তেলাওয়াত,ওয়াজ,মাহফিল করা হারামের সুস্পষ্ট দলিল সমুহ-----লিংকে👇👇👇

    https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=584558265645359&id=100022735726174

    ReplyDelete
    Replies
    1. যে মাইক রাসূল
      (সা)এর যুগে ছিলনা, যা হালাল হারামের সুস্পষ্ট
      দলিলও পাওয়া যায়না, তা কিভাবে শুধু মাত্র হারাম
      হয়?

      Delete
  7. আপনিত এটা নিসচিত হয়েছেন যে,মাইক ব্যবহার করার কারনে মোকাব্বির এর প্রয়োজন নেই অর্থাৎ মাইকটা মোকাব্বির এর স্থলাভিসিক্ত হয়েছে।আর এই জন্য মাইক বেদাতে সাইয়া। এটার জবাব দেন।

    ReplyDelete
  8. মনগড়া ভাবে কোরআনের আয়াত ব্যবহার করেছেন, যেখানে অহরহ ভূল করেছেন আপনি! সুন্নাত, বিদায়াত সম্পর্কে পুরোই অজ্ঞ আপনি! আল্লাহ্ এবং কোরআনকে যদি হক্ব ভেবে থাকেন তবে ইস্তিখারার নামাজ পড়ে আল্লাহ্ তায়ালার কাছে জানতে চাইবেন এই সম্পর্কে, যদি আল্লাহ চান তো জানিয়ে দেবেন।

    আমি চাইলে আপনাকে প্রত্যেকটা ভূল ধরিয়ে দিতে পারি, কিন্তু লাভ নেই তা আমি ভালোই জানি! তাই যেটা রাসূলে পাক (সাঃ) শিখিয়ে গেছেন সেটাই করতে বলেছি।

    ReplyDelete
    Replies
    1. মনগড়া মনে করার যৌত্তিকতা কি? ভুল ধরিয়ে দিলে ভাল তবে বিভ্রান্তিকর কিছু বলে মানুষদের বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।

      Delete
  9. Why this book?
    All praise is due to the great Rabbul Alamin, under whose control the reins of our lives. Numerous prayers and salutations to the beloved Prophet Muhammad (peace be upon him) and his descendants and Companions of Ajmain.
    Dear reader! This question may arise in your mind, why did I write a book on this subject when there are so many issues in the law? Most of the people with Muslim names in the village where I was born are far away from the Qur'an and Sunnah. They do not follow the Qur'an and Sunnah in any matter of Shari'ah. Strongly follow what we get from the work of our ancestors. In such a village a new sect called "Najaiz" has emerged. The main point of this new sect is, "It is shirk to use a microphone in worship and all those who will use it are kaafir mushriks." When I heard such a fatwa from them, I was very worried and thought, how can it be that the microphone was not in the time of the Prophet (peace be upon him) and there is no clear evidence of halal or haram? To find the answer to this question, I studied the book 'Fathul Mubin' which issued a fatwa forbidding the use of microphones in worship. I also argue with them. What I came to understand through study and debate (argument) is how easily halal can be made haram and how easily Muslim can be made kaafir. In a word, the book is very misleading, where the Qur'an and Sunnah have been misinterpreted and the people of that area are being thrown into confusion. Moreover, most of those who use mic in worship are not aware of why it is permissible or not to use mic in worship. As a result, the mic is misused among them and this new sect can be read. So I wrote the book 'Mike in worship and my vision' and tried to clear up the confusion with Mike. I hope the reader has got the answer to the question of the mind.
    Therefore, I am praying to Allah in the hope that the book will benefit you by studying it slowly and carefully.
    Courtesy ............. Abubakar Siddique.

    ReplyDelete
    Replies
    1. u can study 'Maik Munazira'book by Mowlana Altafur Rahman Alvi, Ctg who was a great Alim and Awlia. Pls no comment at bad way.

      Delete
  10. Definition of Halal, Haram and Makrooh
    '' '' '' '' '' '' '' '"" "" "" "" "" "" "" "" "" "" "" "" "" "" "" " '' '' '' '' '' '' '' '' '' '' '' '' '' '' '' ''
    Halal: Mubah, not forbidden. What the law maker allowed or did not forbid to do.
    Forbidden: What Allah has clearly forbidden and whatever you do, you will be punished in the Hereafter, and you will be punished in this world as well. However, there is nothing wrong with doing something haraam unintentionally.
    Makrooh: Doing that which Allah has forbidden, but not strictly forbidding, is less and weaker than Haram, the punishment for doing haraam is punishable, but if you do makrooh, you do not get it, but if you continue to do makrooh, you have to suffer the punishment of haraam. (Yusuf Al) Executive)
    Note that I do not agree with this definition of Makrooh. Rather, the definition of makrooh given here is the definition of sagirah sin, which will be a sin even if it is done once, and kabirah will be considered a sin if it is repeated.
    Definition of Makrooh: Doing something that the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) discouraged but never directly forbade or that he encouraged but did not strictly instruct, or
    It is makrooh to refrain from such acts. Even if one engages in such activities again and again, there will be no sin, but the reward may be more or less. (Allah knows best)
    In common parlance, it is makrooh to abstain from or engage in what we think is desirable.
    For example, even if no one needs a bath, it is mustahab to take a bath on Friday and it is makrooh to abstain from bathing.
    It is mustahab to always cover the head and it is makrooh not to cover.

    ReplyDelete
  11. Is Mike an innovation?
    "" "" "" "" "" "" "" "" "" "" "" "" "" "" ""
    Mike is also a bid'at, but not on the basis of definition by meaning. From the brief discussion we have discussed about bidat above, we have come to know a little bit about what bidat is in Islamic law.
    Even then, the reasons why Mike is not a bidat are different so that no question arises in his mind
    Discussed. According to the definition of bidat that we know, there are four reasons why Mike is not a bidat.
    1. Mike is not used in the hope of swab.
    2. Mike is not unnecessary.
    3. Any of the worship using the mic
    Does not change. And
    4. The need for a mic in the time of the Prophet, even though there was a mic, is not that he did not use it.
    If even one of the reasons mentioned above applies to the use of mic in worship, then it must be considered bidat and haram. Now you think, whether the mic is used in worship in the hope of reward?
    Is the mic unnecessary in worship? Does Mike cause any change in worship? And in the time of the Prophet (peace and blessings of Allaah be upon him) there was a mic, but he did not use it in spite of the need. If it is not, then it will not be considered as bidat. Because, these things mentioned in Islamic Shari'ah are very important for making haraam things haram.

    ReplyDelete
  12. বুখারী শরীফঃ ১০০ নং হাদিস, "এমন এক সময় আসবে যখন আল্লাহ সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে ইলম না উঠিয়ে হক আলেমদের দুনিয়া থেকে উঠিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে দ্বীনের জ্ঞানকে উঠিয়ে নিবেন।তখন মানুষ জালেমদের আলেম অথবা নেতা হিসেবে তাদের অনুকরন করবে।"আর সে সময়টাই বর্তমান সময়।তাছাড়াও আল্লাহ বলেছেন, "তোমাদের কাছে সত্য গোপন করবে এমন এক সম্প্রদায় যারা আলেম শ্রেনী।"ভাই শুধু আপনি নন বর্তমানে যারা নিজেদের আলেম মনে করে তারা সত্যকে গোপন করছেন।নামাজে মাইকের ব্যবহারে আপনাদের অনেক সুবিধা হচ্ছে।তাই বলে কি আল্লাহ এই নির্ভেজাল ধর্মের ভেতর ভেজাল ঢুকিয়ে দিবেন?আপনি সুন্নতকে প্রয়োজন আর অপ্রয়োজনের ভিত্তিতে ভাগ করে ফেলছেন।সুন্নত যে তিন প্রকার আছে সেগুলোই রাখেন।আর কত ভাগ করবেন।কোরআন আর হাদিস দিয়ে আপনি মাইক দিয়ে নামাজ পড়া জায়েজ তা প্রমান কি করলেন?আপনি আরো স্ট্যাডি করুন।যদি সন্দেহ থাকে আল্লাহ রাসূল (সঃ) থেকে জিজ্ঞাসা করুন।এস্তেখারা করুন ভাই।আপনি বলেছেন, "তোমরা উচ্চস্বরে কোরআন তিলাওয়াত করোনা,নিম্নস্বরেও করোনা বরং মধ্যপন্থা অবলম্বন করো"।(সূরা বনিঈসরাইলঃ ১১০) এই আয়াতের তাফসীর হলো রাসূল (সঃ) যুগে উচ্চস্বরে একদিন কোরআন তিলাওয়াত করার কারনে এই আয়াতের নাজিল হয়।আর আমরা কোথাকার আয়াত কোথায় আনছি।আচ্ছা তাই যদি হয়।তাহলে মদ খাওয়া হারাম একটা সময় ছিলো।তবে তা পরবর্তিতে হারাম করা হয়া।ভাই এই আয়াতের শানে নুজুলে বোঝা যায় শুধু সেই সময়কার মধ্যপানকারীদের জন্যয় শুধু আয়াতটি নাজিল হয়েছে।এখনকার সময়ের জন্য না।সে হিসেবে এখন মদ খাওয়া তাহলে জায়েজ।কোরআন নাজিল হয়েছে রাসূল (সঃ) এর উপর।আর সে কোরআন আমাদের প্রত্যেকের জন্য পথ প্রদর্শক।কোরআনের আয়াত নিয়ে খেল তামাশা করবেন না।সঠিক টা না জানলে খুজে নেন।আপনি বেহেস করেছেন এই কথা টাও বিশ্বাস করা যায় না।কারন বেহেসে বলা আছে যে কোরআন হাদিসের দলিল দিয়ে প্রমাণ করতে পারবে যে মাইকে নামাজ,খোতবা,কিয়াম,মোনাজাত, ইত্যাদি এইসব জায়েজ তার জন্য ১০ কোটি টাকার পুরষ্কারের ঘোষনা রয়েছে।আল্লাহ আপনাদের বোঝার মতো তোউফিক দান করুক।জানিনা আসলে কিভাবে হবেন।কারন আল্লাহ বলেছেন,"আমি তাদের অন্তর,চক্ষু ও কর্নদ্বয়ে মোহর মেরে দিয়েছি।"যদি আল্লাহ চাই তো হেদায়াত হবেন ইনশাল্লাহ।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ রোহান সুন্দর ও সাবলীল কমেন্টির জন্য। তবে এই কথা সত্য যে, আপনি মতটা দিয়েছেন তাতে গলদ আছে। আপনি নিশ্চয়ই জানেন আপনি যেখানে কমেন্ট করেছেন সেটা ইলেকট্রনিক যন্ত্রের সাহায্যে করেছেন। অথচ এটাকেই আপনি হারাম ফতোয়া দিচ্ছেন। আপনি হয়তো অস্বীকার করবেন আমি ইবাদতের উদ্দেশে দিইনি। অথচ অন্যকে দীনের পথে আহ্বান করছেন সেটাও ইবাদত। সেটা মাইক, মুবাইল কিংবা অন্য কোন মাধ্যমে দিন।

      Delete
    2. মাইক ব্যবহার হারাম ফতোয়া দেয়া লোকটি আবার প্রয়োজনে ট্রেইনে বসে ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করার ফতোয়াও দেয় । ট্রেইন চলে জাহান্নামের আগুন দিয়ে (তাদের ভাষায়) আর সেখানে কোরানের নূর পড়ে সালাত আদায় করা কি করে জায়েজ হলো?
      পবিত্র কোরানে আল্লাহ বলেন -
      "২২:২৭ وَ اَذِّنۡ فِی النَّاسِ بِالۡحَجِّ یَاۡتُوۡکَ رِجَالًا وَّ عَلٰی کُلِّ ضَامِرٍ یَّاۡتِیۡنَ مِنۡ کُلِّ فَجٍّ عَمِیۡقٍ ﴿ۙ۲۷﴾و اذن فی الناس بالحج یاتوک رجالا و علی کل ضامر یاتین من کل فج عمیق ﴿ۙ۲۷﴾
      ‘আর মানুষের নিকট হজ্জের ঘোষণা দাও; তারা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং কৃশকায় উটে চড়ে দূর পথ পাড়ি দিয়ে’। আল-বায়ান"
      ঐ মাইক বিরোধী ফতোয়াবাজটি কিন্তু উটে চড়ে হজ্বে যায় না, যায় জাহান্নামের আগুনের বাহনে চড়ে। কি আজব কাণ্ড ! এই ফতোয়াবাজ আল বয়ান নামক কমিক বইটিতে মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওহাব সম্পর্কে লিখেছেন - তিনি নাকি সালাত শেষে মুনাজাত, কেয়াম, মাজার জেয়ারত সহ অনেক ইবাদত নিষিদ্ধ করেছেন। দেখুন যে লোক মাইককে বিদ'আ ফতোয়া দেয় সেই লোক স্পষ্ট বিদয়াকে ইবাদত ফতোয়া দেয়। এই সব বলদকে যদি আলেম বলা হয় তাহলে তাদেরকে ঘাস খাওয়ানোর ব্যবস্থাও করা দরকার। কারণ ঘাস তো হারাম নয়। আর বলদের সেটাই প্রিয় খাদ্য।

      Delete
  13. আমি আপনাকে দীনের পথে আহব্বান করিনি ভাইজান।"প্রত্যেক আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল"।আর আমার নিয়ত হলো আপনাদের আলেম সমাজে প্রচলিত ফিতনা ফাসাদ সম্পর্কে বর্ণনা কররা।তবে আফসোস আপনি আমার মনের কথা না বোঝে নিজের মতো ব্যাখ্যা চালিয়ে দিয়েছেন।আমি কমেন্টে আপনার হেদায়াত কামনা করছি মানে এই নই যে আমি আপনাকে মোবাইলের মধ্যে ইসলামের দাওয়াত দিচ্ছি।আমার উদ্দেশ্য হলো আপনার কমেন্টের পালটা উত্তর দেওয়া।আমি আপনাকে দীনের পথে এই মোবাইল দিয়ে আহব্বান করব না।আল্লাহ যদি চাহেন আপনার সাথে আমার দেখা হবে ইনশাল্লাহ।আপনিও কোরআন হাদিস চর্চা করেন আর আমিও করছি।ভাইজান আপনি যে বললেন আমি আপনাকে হারাম পদ্ধতিতে দাওয়াত দিচ্ছি।আমি তো আসলে আপনাকে দাওয়াত দিনি।উদাহরন সাপেক্ষেঃ আমি আপনাকে বললাম যে ভাই আপনি যদি আমাকে কোরআন সহী শুদ্ধভাবে শিখাতে পারেন।তাহলে আপনাকে আমি ২০,০০০ টাকা পুরষ্কার দিবো।এখন আপনি সেই ২০,০০০ টাকার নিয়তে যদি আমাকে কোরআন শিখান তাহলে আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারবেন না।তবে ২০,০০০ টাকা ঠিকিই পাবেন।আর আপনি যদি আমাকে কোরআনের মর্ম বাণী আর সহী ভাবে আমল করানোর উদ্দেশ্যে পড়ান তাহলে আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টি পাবেন এবং ২০,০০০ টাকাও পাবেন।তাহলে আপনার নিয়তের উপর সবকিছু নির্ভরশীল ভাই।তাই আমি বলবো আমি আপনাকে এই ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে ইসলামের শরীয়তের দাওয়াত দিনাই বরং আপনার দেওয়া ফতোয়া গুলোর বিরোধীতা করেছি।আশা করি বোঝেছেন।

    ReplyDelete
    Replies
    1. thank you Mohammad rohan vai dowa korben ami gonagar bander jonno

      Delete
  14. ওনারা কোরআনের ও হাদিসের অসংখ্য দলিল দেওয়ার পরও মাথায় কোরআন নিয়ে শরীয়ত সম্মতভাবে আল্লাহর শপথ করে বলে থাকে ইবাদতে মাইক সর্ম্পূন ভাবে হারামে আকবর শিরিকে আকবর। আর আপনি যদি কোরআন এবং সুন্নাহ দ্বারা অথবা তাদের মতো মাথায় কোরআন নিয়ে শপথ করে মাইক জায়েজ প্রমান করতে পারেন ১০০ কোঠি টাকা পুরুস্কার দিবে ওনারা। এইসব বই / ব্লগ লিখে কত টাকা পাবেন পারলে পুরুস্কার টা আসেন। আর আপনার প্রোপাইলে যে ছবি আছে এই ছবি কি ইসলামে জায়েজ?
    প্রত্যেক ছবি প্রস্তুতকারী জাহান্নামী । কেয়ামতের দিন সব চেয়ে কঠিন আযাব দেওয়া হবে ছবি প্রস্তুতকারীকে। নিজে ডুবে আছেন কুফরীতে আর আপনি দিচ্ছেন ফতোয়া নাউজুবিল্লাহ্।

    ReplyDelete
  15. https://ebadatmic.blogspot.com/?m=1

    ReplyDelete
  16. আচ্ছা আমার একটা প্রশ্ন?
    নামাজের মধ‍্যে দুনিয়াবি কোনো কাজ করা হারাম মাইক ব‍্যবহার এটি তো দুনিয়াবী কাজ এব‍্যপারে আপনি কি বলেন??????

    ReplyDelete
  17. মাইক ব‍্যবহার তো দুনিয়াবী কাজ নামাজে মাইক ব‍্যবহারের ব‍্যপারে আপনি কি বলেন????নিশ্চয় উওরটা একটু দ্রুত দিবেন

    ReplyDelete
    Replies
    1. মাইক ইবাদতের উপকরণ ইবাদত বা ইবাদতের অংশ। যে উদ্দেশ্যে ইমাম উচ্চস্বরে কুরআন তিলাওয়াত করে, তাকবির বলে ঠিক সেই উদ্দেশ্যেই মাইক ব্যবহার হয়। অর্থাৎ মুত্তাকিদের শোনানোর জন্য।

      Delete

Post a Comment

Popular posts from this blog

Application for permission to visit National Museum.

মিলাদুন্নবী ও সূরা আহযাবের 56 নং আয়াত:

রাসূল (সা) প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন কেন?

সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (রা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ