Biography- Abubakar Siddiq


নামঃ আবুবকর সিদ্দিক বিন আব্দুল মালেক আল ইব্রাহিম। (Abubakar Siddiq Bin Abdul Malak al Ibrahim)
পিতাঃ আব্দুল মালেক বিন আব্দুল আলিম আল ইব্রাহিম।
মাতাঃ জাহানারা বেগম।
2021 সালে তুলা একটি সেলফি

ভাইবোনঃ কামাল, জামাল, জমির, নূরজাহান, মুহসিন, খুরশিদা, ইলিয়াস, ইব্রাহিম, মিজান।
ভাইবোন দশজনের মধ্যে সবার ছোট আবুবকর সিদ্দিক।

জন্মঃ 1990 সালের মাঝামাঝি সময়ে জন্মগ্রহণ করেন।

জন্মস্থানঃ গ্রাম: মৌলভী পাড়া, ইউনিয়ন: চরলক্ষা, উপজেলা ও থানা: বন্দর / পটিয়া (বর্তমান কর্ণফুলী) জেলা: চট্টগ্রাম, দেশ: বাংলাদেশ।


দুবাই, নাইফ পুলিশ স্টেশনের নিকটে
April 2023 Dubai Mall
April 2023 Dubai Mall
2023 Deira Dubai ঈদের সালাতের পূর্বে।


প্রাথমিক জীবনঃ জন্মের দ্বিতীয় বছরের প্রথম দিকে 'মা' মারা যান এবং মায়ের মৃত্যুর এক বছরের মধ্যে বাবাও মারা যান। এরপর ছোট্ট দুধের বাচ্চাটিকে পালক নেওয়ার জন্য অনেকেই আসে। কিন্তু বড় ভাবি (জনাবা খাতুন) পালক দিতে অস্বীকৃতি জানাই। এরপর থেকেই ভাইবোন ও বড় ভাবির ছায়ায় বড় হতে থাকে। বোন দুটির বিয়ে হয়ে গেলে মা হারা ছোট ছেলেটির একচ্ছত্র অবিভাবক হয়ে পড়েন বড় ভাবি। তিনিও 2016 সালের 25 ডিসেম্বর স্ট্রোক করে না ফেরার দেশে চলে যান।

শিক্ষা জীবনঃ কোরান পড়তে শেখেন বাড়ির মক্তবে। মায়ের ইচ্ছা ছিল নাকি আলেম বানানোর। এইজন্য বড় ভাবি মঈনিয়া রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ভর্তি করান 1997 সালে। ঐখানে লেখা পড়ার মান নিম্ন মানের হওয়ায় কয়েক বছর পর ভর্তি করান ফকিরনির হাট ফয়জুল বারী মাদ্রাসায়। মাদ্রাসায় যখন ঠিক মতো যাচ্ছে না, ফাঁকি দিচ্ছে, তখন 2001 সালে ভর্তি করান দৌলত পুর দেয়াং পাহাড় মাদ্রাসায়। সাথে ছিল স্কুল ফাঁকি দেয়া বড় ভাইপো উসমান গণি বাবলু।
এখানেও যখন মাদ্রাসা ফাঁকি দিচ্ছিল তখন হাল ছাড়তে নারাজ বড় ভাবি  2003 সালে ভর্তি করিয়ে দেন স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
এরপর 2010 সালে SSC পাশ করেন চরলক্ষা ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে। 2012 সালে HSC পাশ করেন চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজ থেকে এবং একই কলেজ থেকে 2016 সালে B.A পাশ করেন। এরপর মাস্টার্সে ভর্তি হন। প্রথম বর্ষ পরীক্ষা দেয়ার আগেই কাতারে চলে যান।


নাইফ পুলিশ স্টেশনের সামনে, দুবাই।


কর্ম জীবনঃ SSC পরীক্ষা দেওয়ার পর থেকেই টিউশনি করতেন বিভিন্ন জায়গায়। 2011 সালে ফারিস্ট ইসলামিক লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির বন্দরটিলা অফিসে চাকরি করেন। 2012-2014 সালে মঈনিয়া রহমানিয়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। 2017-2018 সালে সি এন্ড এফ কোম্পানির চাকরি করেন। এরপর 2019 সালের 11 February কাতারে চলে যান। বর্তমানে একটি ঠিকাদার কোম্পানিতে কর্মরত ছিল। Clearing & Forwarding Agent (C&F) Chittagong Enterprise -এ কাজ করতেন। বর্তমানে দুবাই প্রবাসী। এছাড়াও এগুলোর পাশাপাশি ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লেখালেখি করেন।
Chittagong Enterprise 

যেসব লেখা ফেসবুক, টুইটার ও ব্লগে নিজস্ব আইডির মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।


ধর্মীয় অবস্থাঃ মাদ্রাসা থেকে পালানো আবুবকর 2001 সালে শুরু হওয়া আফগান যুদ্ধে এবং 2003 সালে শুরু হওয়া ইরাক যুদ্ধে হাজার হাজার নিরীহ মুসলিম হত্যার নির্মম চিত্র দেখে মর্মাহত হন। এবং ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতি এমন অমানবিক হত্যাযজ্ঞের কারণে ধর্ম পালনে আগ্রহী হয়ে উঠেন।
বাপ দাদারা সুফি মতবাদে বিশ্বাসী সুন্নি হওয়ায় ধর্ম পালনের ক্ষেত্রে প্রথমে তা কঠোরভাবে মেনে চলেন। স্থানীয় মাহফিলে গজল গাওয়া, মাজারে যাওয়া এবং সুফি মতবাদের উন্নতম বক্তা তুফাজ্জল হোসেন বৈরাগী, আবু সুফিয়ান আল কাদেরী সহ প্রমুখ বক্তার ওয়াজ শোনতে দূরদূরান্তে চলে যেতেন।
দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন: তার এক ভাই ইলিয়াস বাইতুশ শরফ মাদ্রাসায় পড়তেন। সে হিসাবে তিনি শহর থেকে সাঈদী নামক এক হুজুরের ওয়াজের অডিও কেসেট আনতেন। তার ওয়াজ শোনে মুগ্ধ হয়ে পড়েন। বিশেষ করে তার ওয়াজে অমুসলিমদের মুসলিম হওয়ার বিষয়টি বেশি দৃশ্যমান হয় তার কাছে। এছাড়াও ডা.জাকির নায়েক, আ.ন. ম আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গিরের লেকচার শোনে আরও বেশি মুগ্ধ হন। এতোদিন ওহাবি বলে যাদের থেকে দূরে থাকতেন এখন তাদের নিয়েই চিন্তা ভাবনা শুরু করেন।
এইভাবেই ধীরে ধীরে সুফি মতবাদ থেকে ফিরে প্রকৃত ইসলামের দিকে ছুটে চলেন।

ধর্মীয় জ্ঞান চর্চাঃ মক্তবের মাধ্যমে কুরান ও সালাত পড়তে শেখার কথা বাদ দিলে, বাকি সব ইলম হাসিল করেছে নিজের প্রচেষ্টায়। প্রথম দিকে ইনকিলাব পত্রিকার "ইসলামি জীবন" পাতাটি হয় ইলম হাসিলের একমাত্র সম্বল ছিল। এরপর এন টিভির "আপনার জিজ্ঞাসা" অনুষ্ঠান।
সপ্তম শ্রেণীতে যখন উঠেন তখন প্রথম কোরানের অনুবাদ সহ পড়া শুরু করেন। এরপর 2009 সাল থেকে হাদিস, তাফসীর ও ইসলামি সাহিত্য পড়া শুরু করেন।

দাওয়াহঃ 2009 সালে এলাকার তরুণ ছেলেদের নিয়ে "মৌলভী পাড়া ইসলামী দাওয়াহ কমিটি" নামক একটি ধর্মীয় জ্ঞান ভিত্তিক সংগঠন গড়ে তুলেন। যা বর্তমানে "মৌলভী পাড়া ইসলামী পাঠাগার" নামে কার্যক্রম চালাচ্ছে।

বিতর্কে অংশগ্রহণঃ 2010 সালের দিকে "ইবাদতে মাইকের ইউজ জায়েজ কি নাজায়েজ" এটা নিয়ে বিতর্কে অংশগ্রহণ করেন নিমতলায় হাফেজ দিদারের সাথে। এছাড়াও দরবারে মাহবুবিন শরিফে এবং হারুন হুযুরের ঘরে বিতর্কে অংশগ্রহণ করেন। এখানে তিনি ইবাদতে মাইক ইউজ জায়েজ হওয়ার পক্ষে ছিলেন।

লেখালেখিঃ 2007 সালে প্রথম মিলাদুন্নবী উদযাপন কতটুকু শরীয়ত সম্মত তা নিয়ে প্রায় দেড়শো শব্দের কলাম লিখেন। যে লেখা তৎকালিন পটিয়া জমিরিয়া মাদ্রাসার মুহতামিমকে (সম্ভবত নাম আব্দুল হালিম বোখারী বা আব্দুল্লাহ) দেখালে তিনি খুশি হন। এরপর "কবর পূজারীদের এইকাল আর সেইকাল" নামক একটি কলাম লিখেন। যা তিনি ইব্রাহিম মুন্সির জামে মসজিদের তৎকালীন ইমাম কবির আহমেদকে দেখালে ইমাম সাহেব এই লেখার সত্যতা স্বীকার করেন।
এরপর বিভিন্ন সময় বিতর্কে অংশগ্রহণের পর 2012 সালের দিকে নাজায়েজ পার্টিদের "মাইক হারাম" ফতোয়ার জবাব স্বরূপ একটি বই রচনা করেন। যেখানে মূলত তিনি "ইবাদতে মাইক বেবহার কেন জায়েজ মনে করেন" তা আলোচনা করেন। এছাড়াও বইটিতে মাইক হারাম মনে করার কারণ ও দলিল গুলো বিশ্লষণ করেন। বইটি লেখার সাথে সাথেই ফেসবুকে নিয়মিত পোস্ট করেন। এরপর July 2016 সালের দিকে তার নিজস্ব ব্লগে (www.abubakarnetwork.blogspot.com) পোস্ট করেন। উক্ত ব্লগে সর্বাধিক পঠিত হয় বইটি। কারণ, ইবাদতে মাইক জায়েজ হওয়ার পক্ষে এটিই একমাত্র বিস্তারিত লেখা ছিল। বইটি চাপানোর জন্য অনেকেই পরামর্শ দেন। কিন্তু প্রতিকূল পরিবেশের কারণে তা করেননি। এছাড়াও অনেক লোক বইটি চাপানোর জন্য বল্লে তিনি শর্তসাপেক্ষে চাপানোর কথা বলেন। তাই বইটি এখনও চাপানো হয়নি। বইটি ছাড়াও তিনি বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করেন ব্লগে। (তার লেখা পড়তে উপরে উল্লিখিত ব্লগে ভিজিট করুন)

মাযহাবঃ হানাফি পরিবারে জন্ম নিলেও তিনি অন্যান্য মাযহাবের বিভিন্ন নিয়ম কানুনও অনুসরণ করেন। যা তিনি কোরান সুন্নাহ ও যুক্তির অধিক নিকট মনে করেন।

রাজনীতিঃ সাঈদীর (হাফিজুল্লাহ) মুখে ইসলামি ছাত্র শিবিরের নাম অনেক আগে থেকে শোনলেও 2010 সালের দিকে স্কুল ফ্রেন্ড ইয়াসিন আরাফাতের মাধ্যমে তাদের দাওয়াত পান। এরপর কর্মী হয়ে মৌলভীপাড়া শাখার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পশ্চিম পটিয়ায় দায়িত্বরত সভাপতি রফিক, আমজাদ, রশিদের সাথে কাজ করার পর প্রতিকূল পরিবেশ পরিস্থিতির কারণে আর এগিয়ে যাননি। 2017 সালে আক্কাস ভাইয়ের মাধ্যমে জামাতের দাওয়াত পান। এরি মধ্যে আই.এস সমর্থক একজনের মুখে জামাত নিয়ে বিরূপ মন্তব্য শোনেন। তার কথায় কিছু বিষয়ে যৌত্তিকতা পান এবং কিছু বিষয়ে একগুঁয়েমি দেখেন। এরপর নিজেই নিজের মতো চলতে শুরু করেন।
"নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল" এই যুক্তিতে জামাতের সমর্থক হলেও রাজনৈতিকভাবে তিনি কোন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন না।

প্রিয়ঃ
বক্তাঃ সাঈদী (বাংলাদেশ) জাকির নায়েক (ভারত) নোমান আলী খান (ইউ কে) ও আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির (বাংলাদেশ)।
ক্বারীঃ শেখ সুদাইসী (সৌদি আরব) ইমাম ফায়সাল (সোমালিয়া)।
লেখকঃ মাওলানা মউদূদী, গোলাম আজম ও আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গির।
তাফসীরঃ ইবনে কাসীর, আহসানুল বায়ান ও জালালাইন।
মুজাদ্দাদঃ ইমাম তাঈমিয়া ও শেখ আব্দুল ওহাব।
Tag: 01970118402, AB Network 


Comments

Popular posts from this blog

Application for permission to visit National Museum.

মিলাদুন্নবী ও সূরা আহযাবের 56 নং আয়াত:

ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসন (প্রথম পর্ব)

রাসূল (সা) প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন কেন?

সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (রা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ