আরটিকেলঃ সাঈদী কি মুনাফেক?
#প্রশ্নঃ সাঈদী কি মুনাফেক?
কেননা একটি ভিডিওতে তাকে ক্বিয়াম করতে দেখা গেছে আবার আরেকটি ভিড়িওতে এইসবের বিরুদ্ধে কথা বলতে দেখা গেছে!
#উত্তরঃ আল্লাহর রাসূল সাঃ কে দাড়িয়ে, বসে কিংবা শুয়া অবস্থায় সালাম দেওয়া দোষের কিছু না। অর্থাৎ যেকোনো অবস্থায় আল্লাহর রাসূল সাঃ কে সালাম দেওয়া জায়েজ। যদি কেউ দাঁড়িয়ে সালাম দেওয়াকে কিংবা বসে সালাম দেওয়াকে সুন্নাহ বা নিয়ম বানিয়ে ফেলে সেটাই দোষের বিদাত হিসেবে গণ্য। আমাদের বেরলভি ভাইয়েরা দাঁড়িয়ে সালাম দেওয়াকে সুন্নাহ বানিয়ে ফেলেছে শুধুমাত্র তা নয়, বরং তারা এই বাড়াবাড়িতে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে গিয়ে বলছে, যারা দাঁড়িয়ে সালাম দেয়না তারা ওহাবি, নবী বিরোধী ইত্যাদি। চিন্তা করুন নিজেদের বানানো একটি নিয়মের জন্য কতো বাড়াবাড়িতে গড়িয়েছে। সুতরাং তারা যে নিতান্তই বাড়াবাড়ি ও সীমালঙ্ঘনে লিপ্ত তাতে কোন সন্দেহ নেই। সাঈদী (হাঃ) চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ নন। স্বাভাবিকভাবেই তিনি এইসবের সাথে পরিচিত নন। তিনি চট্টগ্রামে আসার আগেই জানতে পারেন, চট্টগ্রামের মানুষ ক্বিয়ামে বিশ্বাসী। অর্থাৎ কেউ ক্বিয়াম না করলেই সে ওহাবি! তিনি যখন চট্টগ্রামে তাফসীর করতে আসেন প্রথম দিকেই অর্থাৎ ৮০ র দশকে তিনি চট্টগ্রামের মানুষের এই ক্বিয়াম সিস্টেম চালু রাখেন। কেননা তার যুক্তি ছিল, হঠাৎ করে কোন কিছু বন্ধ করা যায়না। তাতে হিতের বিপরীত হয়। (লন্ডনে প্রশ্নোত্তর পর্বে) সাঈদি ক্বিয়ামকে সুন্নাহ হিসেবে যেমন গ্রহণ করেনি তেমনি সেটা নিয়ে বাড়াবাড়িতেও লিপ্ত ছিলোনা। এই হিসেবে সাঈদী দোষের কিছুই করেনি। পরে যখন চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষ ধীরে ধীরে সুন্নাহ ও বিদাত নিয়ে কিছুটা সচেতন হয়, তখন তিনিও ধীরে ধীরে চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রচলিত বিভিন্ন শিরিক ও বিদাতের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন। এরপর থেকেই পীর, দরগাহ, ও দরবার ব্যাবসায়ীদের রোষানলে পড়েন এবং তার বিরুদ্ধে নানা প্রচারণা চালান। ঐচ্ছিক বা মনগড়া কিছু বিষয় নিয়ে অন্যদের এইরকম তাকফির করা, মুনাফিক বলা কেবল বিভ্রান্ত পথভ্রষ্ট লোকদের কাজ। যা সুন্নী নামধারী কিছু মানুষ করে থাকে। সন্দেহ নেই, আল্লাহ পাক তার মাধ্যমে চট্টগ্রাম অঞ্চলের পীর, কানখাহ, দরগাহ ও দরবারে বিভক্ত সাধারণ মুসলিম অনেক সচেতন হয়েছে। শিরিক ও বিদাতে ডুবে থাকা অনেক মুসলমান এখন এইসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করছে। বাতিল ফিরকার আশ্রয়স্থল আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় না আসলে হয়তো, দেশ থেকে অনেক আগেই এইসব দরবার, দরগাহ, পীর ও মাজার কেন্দ্রিক ফিরকা দেওয়ান ভাগী, হিজবুত তাওহীদ, গাউসিয়া কমিটি, মাইজভান্ডারি, স্বুরেস্বরী, আমির ভান্ডার সহ অনেক জাহেলিয়াত মিশ্রিত সসংগঠন দেশে কোণঠাসা হয়ে যেত।
সরকার যে জিনিসটাকে প্রমোট করে সেই জিনিসটাই বেশি প্রসারিত হয়। এই হিসেবে দেশে ইসলাম বিদ্ধেষী হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সংগঠন যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, ঠিক তেমনি মুসলমানদের মধ্যে এই জাহেলরা বৃদ্ধি পেয়েছে। সাঈদি শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের ক্রোধ ও রোষানলের স্বীকার তা নয়, বরং ধরম ব্যাবসায়ী এইসব ভন্ডদের অপপ্রচারের স্বীকার। আল্লাহ আমাদের ভালো মানুষ সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখার তাওফিক দিক। আমিন।
✍️ আবুবকর সিদ্দিক। ৮/১০/২২ দুবাই।
Comments
Post a Comment