হালাল ও হারামের ব্যাপারে ইসলামের উসূল বা মূলনীতি:
শরীয়তের বিধান প্রণয়নে ইসলামের মূলনীতি
হচ্ছে আল্লাহ তায়ালা মানুষের জন্য যত কিছু সৃষ্টি
করেছেন, তা সবই ভোগ ব্যবহার করা হালাল ও
মুবাহ। যদি আল্লাহ তায়ালা অকাট্য, সুস্পষ্ট ও প্রমাণিত
ঘোষণায় তার মধ্যে কোনো কিছুকে হারাম
বলেন শুধু তাই হারাম। তা ব্যতীত অন্যসব
কিছুকে আল্লাহ মানুষের জন্য হালাল ও মুবাহ
করেছেন। অর্থাৎ যা ভোগ ব্যবহারের অনুমতি
দিয়েছেন তা কোনো অবস্থাতেই হারাম করা
যাবেনা। এমন কি কোনো যয়ীফ দূর্বল হাদিস
দিয়েও নয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যে সব
কিছুকে হালাল ও মুবাহ ঘোষণা করেছেন তা
আমার মুখের কথা নয়। বরং আল্লাহ নিজেই
বলেছেন,
ﻫﻮﺍﻟﺬﻱ ﺧﻠﻖ ﻟﻜﻢ ﻣﺎﻓﻲ ﺍﻻﺭﺽ ﺟﻤﻴﻌﺎ (ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ )
তিনিই সেই সত্তা যিনি বিশ্বজাহানের সব কিছু
তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন।
(আলকোরান, সূরা আল বাকারাহ, আয়াত ০২:২৯)
ﻭﺳﺨﺮ ﻟﻜﻢ ﻣﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺴﻤﻮ ﺕ ﻭﻣﺎ ﻓﻲ ﺍﻻﺭﺽ ﺟﻤﻴﻌﺎ
ﻣﻨﻪ ( ﺍﻟﺠﺎ ﺷﻴﺔ )
নভোমণ্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে সব
কিছুই তোমাদের আয়ত্ত্বাধীণ করে
দিয়েছেন।
(আলকোরান, সূরা জাসিয়া, আয়াত ৪৫:১৩)
ﺍﻟﻢ ﺗﺮﻭﺍﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺨﺮ ﻟﻜﻢ ﻣﺎ ﻓﻲ ﺍﺳﻤﻮ ﺕ ﻭﻣﺎ ﻓﻲ
ﺍﻻﺭﺽ ..... ( ﻟﻘﻤﺎﻥ )
তুমি কি লক্ষ্য করোনি, নভোমণ্ডল ও
ভূমন্ডলে যা কিছু আছে তা সবই আল্লাহ
মানুষের জন্য নিয়োজিত করেছেন?
(আলকোরান, সূরা লোকমান, আয়াত ৩১:২০)
ﺍﻟﻢ ﺗﺮ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺳﺨﺮ ﻟﻜﻢ ﻣﺎ ﻓﻲ ﺍﻻﺭﺽ ...... ( ﺍﻟﺤﺞ )
তুমি কি দেখনা, আল্লাহ তোমাদের কল্যাণে
নিয়োজিত করে রেখেছেন পৃথিবী তে যা
আছে সবকিছুকে।
(আলকোরান, সূরা হাজ্ব, আয়াত ২২:৬৫)
এসব ঘোষণা থেকে অকাট্য ও সুস্পষ্ট ভাবে
প্রমানিত হয় যে আকাশ মন্ডল ও পৃথিবীর সব
কিছুই আল্লাহ তায়ালা মানুষের কল্যাণের জন্য
সৃষ্টি করেছেন। মানুষের আয়ত্ত্বাধীণ
করেছেন যাতে মানুষ তা ভোগ ব্যবহার
করতে পারেন। এভাবেই আল্লাহ তায়ালা মানুষের
প্রতি তার অপরিসীম অনুগ্রহের কথা জানিয়ে
দিয়েছেন। তাহলে বিশ্বজাহানের সব কিছুই
মানুষের জন্য হালাল হবেই তা ব্যতীত যা তিনি
হারাম করেছেন। আর এই হারাম হচ্ছে হালালের
মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম মাত্র এবং সে
ব্যতিক্রমের মূলে নিশ্চয়ই কোনো কারণ
আছে বলে মনে করতে হবে। এ
প্রেক্ষিতে বলা যায়, ইসলামী শরীয়তে
হারামের পরিধি খুব সংক্ষীর্ণ, হালালের ক্ষেত্র
বিস্তীর্ণ। কেননা সুস্পষ্ট অকাট্য ভাষায় হারাম
ঘোষণাকারী আয়াত খুবই কম এবং তা কয়েকটি
মাত্র। ইতিবাচক ভাবে যে সব বিষয়ে নতুন করে
কোনো কিছু বলা হয়নি -না হালাল, না হারাম তা
মূলনীতির ভিত্তিতে বিবেচিত হবে।
Writer: Abubakkar Siddiq
Comments
Post a Comment