ঈদে মিলাদুন্নবী বনাম সূরা ইউনুসের ৫৮ নং আয়াত।
প্রশ্নঃ আপনি বলছেন নবীজি (সা) এর আগমন বা জন্ম উপলক্ষে ঈদ উদযাপন করা বিদাত। অথচ কুরআনের সূরা ইউনুসের ৫৮ নং আয়াতে তার দেয়া 'ফজল ও রহমতের জন্য আনন্দ উদযাপন করতে উৎসাহিত করেছে। দয়া করে এর জবাব দিন?
'
উত্তরঃ ধন্যবাদ আপনাকে এই প্রশ্নটি করার জন্য। আমিও চাই এই আয়াতটির সঠিক তাৎপর্য আপনাদের নিকট তুলে ধরতে এবং এই আয়াত নিয়ে আপনাদের যে ভুল ধারণা আছে তা ভেঙে দিতে। আসুন সার কথায় যায়।
আপনার উল্লেখিত আয়াতটি হচ্ছে,
قُلْ بِفَضْلِ اللّٰهِ وَبِرَحْمَتِهٖ فَبِذٰلِكَ فَلْيَـفْرَحُوْا ؕ هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُوْنَ
"বলুন, আল্লাহর এই অনুগ্রহ ও রহমতের প্রতি সকলেরই আনন্দিত হওয়া উচিত ; তা এটা হতে বহুগুণে উত্তম যা তারা সঞ্চয় করেছে। (alquran, 10:58)
যারা এই আয়াত দ্বারা ঈদে মিলাদুন্নবী জায়েজ প্রমাণের চেষ্টা করেন তাদের বিশ্বাস হচ্ছে এই আয়াতে 'রহমত' দ্বারা মুহাম্মদ (সা) কে বুঝানো হয়েছে। কারণ সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াতে মুহাম্মদ (সা) কে আল্লাহর পক্ষ থেকে 'রহমত ' বলা হয়েছে তাই এখানেও 'রহমত' বলতে মুহাম্মদ (সা)কে বুঝানো হয়েছে এবং তার জন্মে এখানে খুশি উদযাপন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আসলে এটা সঠিক নয়। কারণ সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াতে 'রহমত' দ্বারা মুহাম্মদ (সা) কে বুঝানো হলেও এখানে কিন্তু কুরানকেই বুঝানো হয়েছে।
=> আমার এই কথার প্রথম দলিল হচ্ছে সূরা ইউনুসের উল্লেখিত আয়াতের পুর্বের আয়াত। যেখানে আল্লাহ কুরআনের অনেক গুণ উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ বলেন,
يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَآءَتْكُمْ مَّوْعِظَةٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَشِفَآءٌ لِّمَا فِى الصُّدُوْرِ ۙ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لِّـلْمُؤْمِنِيْنَ
" হে মানব জাতি, তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে এসেছে উপদেশ এবং যা তোমাদের অন্তরের রোগ আরোগ্য কারী এবং মূমিনদের জন্য পথ প্রদর্শক ও রহমত "।
(Alquran, 10:57)
লক্ষ্য করুন এই আয়াতে হুদা ও রহমত বলতে স্পষ্ট কুরআনকে বুঝানো হয়েছে। এবং এর পরের আয়াতে এই দান ও রহমত পেয়ে যেন মানুষ আনন্দ করে সেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এখানে দিবস ভিত্তিক কিংবা রাস্তায় রাস্তায় রেলি ভিত্তিক কোন আনন্দের কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে শোকরিয়া ভিত্তিক আনন্দ উদযাপন করতে। আর এইটা সবসময় করতে বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট দিন বা দিবস ভিত্তিক নয়।
যদি আপনারা নির্দিষ্ট দিবস ভিত্তিক কোন আনন্দ করেন তার দলিল থাকা প্রয়োজন রাসূলুল্লাহ (সা) থেকে এবং সাহাবীদের মধ্য থেকে। কারণ তারাই এই কোরআন ভালোই বুঝেন আমাদের থেকে।
=> আমার দ্বিতীয় দলিল : উল্লেখিত আয়াতে যদি "ফজল ও রহমত " শব্দ দুটিকে আলাদা করে বোঝানো হতো, তবে ফজল শব্দ দ্বারা কোরানকে এবং রহমত শব্দ দ্বারা মুহাম্মদ (সা) কে বোঝানো যেত। কিন্তু কোরানে দুটি শব্দকে এক করে দেয়া হয়েছে আরবি শব্দ 'হুয়া ' দিয়ে। আরবি শব্দ 'হুয়া' এর উল্লেখ দেখুন। যা এক বচনে উল্লেখ আছে এবং যার বাংলা অর্থ 'তা বা তাহা '।
=> আমার তৃতীয় দলিল : হযরত উমর (রা) ইরাকের খেরাজে আসলে তখন তিনি খেরাজে আগত উট দেখার জন্য বাহিরে যান এবং সেগুলো সে গণনা শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি গণনায় অপারগ হয়ে বলেন উঠেন "আমি মহান আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি " এই দেখে তার খাদেম বলে উঠেন, আল্লাহর কসম! এটাও আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত। " তখন উমার (রা) বলেন, "না এটা নয়। বরং আল্লাহ তায়ালা 'ফজল ও রহমত ' বলতে কুরান ও তার থেকে উপকার গ্রহণকে বুঝিয়েছেন। সুতরাং খেরাজের সম্পদগুলোকে 'ফজল ও রহমত 'মনে না করে 'মিম্মা ইয়াজমাউন ' মনে করায় উচিত। কেননা এগুলো আমাদের জমাকৃত সম্পদ। ফজল রহমত তো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এর মাহাত্ব্য অত্যন্ত বেশী "।**
** এটা ইবনে আবি হাতিম (রা) এবং ইবনে কাসীর (র) এই আয়াতের তাফসিরে উল্লেখ করেছেন।
'
বিঃদ্রঃ প্রশ্ন কর্তা এবং উত্তর দাতা উভয় আমি। উপোরক্ত আয়াতের সঠিক তাৎপর্য আপনাদের নিকট উন্মুক্ত করার সার্থে আমাকে উভয়ের ভূমিকা পালন করতে হয়েছে।
'
উত্তরঃ ধন্যবাদ আপনাকে এই প্রশ্নটি করার জন্য। আমিও চাই এই আয়াতটির সঠিক তাৎপর্য আপনাদের নিকট তুলে ধরতে এবং এই আয়াত নিয়ে আপনাদের যে ভুল ধারণা আছে তা ভেঙে দিতে। আসুন সার কথায় যায়।
আপনার উল্লেখিত আয়াতটি হচ্ছে,
قُلْ بِفَضْلِ اللّٰهِ وَبِرَحْمَتِهٖ فَبِذٰلِكَ فَلْيَـفْرَحُوْا ؕ هُوَ خَيْرٌ مِّمَّا يَجْمَعُوْنَ
"বলুন, আল্লাহর এই অনুগ্রহ ও রহমতের প্রতি সকলেরই আনন্দিত হওয়া উচিত ; তা এটা হতে বহুগুণে উত্তম যা তারা সঞ্চয় করেছে। (alquran, 10:58)
যারা এই আয়াত দ্বারা ঈদে মিলাদুন্নবী জায়েজ প্রমাণের চেষ্টা করেন তাদের বিশ্বাস হচ্ছে এই আয়াতে 'রহমত' দ্বারা মুহাম্মদ (সা) কে বুঝানো হয়েছে। কারণ সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াতে মুহাম্মদ (সা) কে আল্লাহর পক্ষ থেকে 'রহমত ' বলা হয়েছে তাই এখানেও 'রহমত' বলতে মুহাম্মদ (সা)কে বুঝানো হয়েছে এবং তার জন্মে এখানে খুশি উদযাপন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আসলে এটা সঠিক নয়। কারণ সূরা আম্বিয়ার ১০৭ নং আয়াতে 'রহমত' দ্বারা মুহাম্মদ (সা) কে বুঝানো হলেও এখানে কিন্তু কুরানকেই বুঝানো হয়েছে।
=> আমার এই কথার প্রথম দলিল হচ্ছে সূরা ইউনুসের উল্লেখিত আয়াতের পুর্বের আয়াত। যেখানে আল্লাহ কুরআনের অনেক গুণ উল্লেখ করেছেন। আল্লাহ বলেন,
يٰۤاَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَآءَتْكُمْ مَّوْعِظَةٌ مِّنْ رَّبِّكُمْ وَشِفَآءٌ لِّمَا فِى الصُّدُوْرِ ۙ وَهُدًى وَّرَحْمَةٌ لِّـلْمُؤْمِنِيْنَ
" হে মানব জাতি, তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে এসেছে উপদেশ এবং যা তোমাদের অন্তরের রোগ আরোগ্য কারী এবং মূমিনদের জন্য পথ প্রদর্শক ও রহমত "।
(Alquran, 10:57)
লক্ষ্য করুন এই আয়াতে হুদা ও রহমত বলতে স্পষ্ট কুরআনকে বুঝানো হয়েছে। এবং এর পরের আয়াতে এই দান ও রহমত পেয়ে যেন মানুষ আনন্দ করে সেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এখানে দিবস ভিত্তিক কিংবা রাস্তায় রাস্তায় রেলি ভিত্তিক কোন আনন্দের কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে শোকরিয়া ভিত্তিক আনন্দ উদযাপন করতে। আর এইটা সবসময় করতে বলা হয়েছে। নির্দিষ্ট দিন বা দিবস ভিত্তিক নয়।
যদি আপনারা নির্দিষ্ট দিবস ভিত্তিক কোন আনন্দ করেন তার দলিল থাকা প্রয়োজন রাসূলুল্লাহ (সা) থেকে এবং সাহাবীদের মধ্য থেকে। কারণ তারাই এই কোরআন ভালোই বুঝেন আমাদের থেকে।
=> আমার দ্বিতীয় দলিল : উল্লেখিত আয়াতে যদি "ফজল ও রহমত " শব্দ দুটিকে আলাদা করে বোঝানো হতো, তবে ফজল শব্দ দ্বারা কোরানকে এবং রহমত শব্দ দ্বারা মুহাম্মদ (সা) কে বোঝানো যেত। কিন্তু কোরানে দুটি শব্দকে এক করে দেয়া হয়েছে আরবি শব্দ 'হুয়া ' দিয়ে। আরবি শব্দ 'হুয়া' এর উল্লেখ দেখুন। যা এক বচনে উল্লেখ আছে এবং যার বাংলা অর্থ 'তা বা তাহা '।
=> আমার তৃতীয় দলিল : হযরত উমর (রা) ইরাকের খেরাজে আসলে তখন তিনি খেরাজে আগত উট দেখার জন্য বাহিরে যান এবং সেগুলো সে গণনা শুরু করেন। এক পর্যায়ে তিনি গণনায় অপারগ হয়ে বলেন উঠেন "আমি মহান আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি " এই দেখে তার খাদেম বলে উঠেন, আল্লাহর কসম! এটাও আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমত। " তখন উমার (রা) বলেন, "না এটা নয়। বরং আল্লাহ তায়ালা 'ফজল ও রহমত ' বলতে কুরান ও তার থেকে উপকার গ্রহণকে বুঝিয়েছেন। সুতরাং খেরাজের সম্পদগুলোকে 'ফজল ও রহমত 'মনে না করে 'মিম্মা ইয়াজমাউন ' মনে করায় উচিত। কেননা এগুলো আমাদের জমাকৃত সম্পদ। ফজল রহমত তো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এর মাহাত্ব্য অত্যন্ত বেশী "।**
** এটা ইবনে আবি হাতিম (রা) এবং ইবনে কাসীর (র) এই আয়াতের তাফসিরে উল্লেখ করেছেন।
'
বিঃদ্রঃ প্রশ্ন কর্তা এবং উত্তর দাতা উভয় আমি। উপোরক্ত আয়াতের সঠিক তাৎপর্য আপনাদের নিকট উন্মুক্ত করার সার্থে আমাকে উভয়ের ভূমিকা পালন করতে হয়েছে।
Comments
Post a Comment