মুহাম্মদ (সা:) মৃত্যু সম্পরকে কোরান কি বলে?

প্রসঙ্গ : মুহাম্মদ (সা:) এর মৃত্যু সম্পর্কে আল্লাহ যা বলেছিল:
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন,"

كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ

প্রত্যেক প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে " (সুরা আল ইমরান, ৩:১৮৫। সুরা আম্বিয়া ৩৫। সুরা আনকাবুত, ২৯ :৫৭)

وَمَا مُحَمَّدٌ إِلَّا رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهِ الرُّسُلُ أَفَإِن مَّاتَ أَوْ قُتِلَ انقَلَبْتُمْ عَلَىٰ أَعْقَابِكُمْ وَمَن يَنقَلِبْ عَلَىٰ عَقِبَيْهِ فَلَن يَضُرَّ اللَّهَ شَيْئًا وَسَيَجْزِي اللَّهُ الشَّاكِرِينَ

মুহাম্মদ আল্লাহর রাসূল ছাড়া আর কিছুই নয় তার পূর্বেও বহু রাসূল গত হইয়াছে সুতরাং সে যদি মারা যায় বা নিহিত হয় তবে কি তোমরা পৃষ্ঠপদার্পন করবে?.....  (সুরা আল ইমরান ৩:১৪৪)।
Surah Az Zumar, 39:30

إِنَّكَ مَيِّتٌ وَإِنَّهُمْ مَيِّتُونَ

(হে নবী) "মৃত্যু তোমারও ভাগ্য তাদেরও ভাগ্য" (সূরা যুমার, ৩৯:৩০)
মুহাম্মদের পূর্বেও আল্লাহ কাউকে বাচিয়ে রাখেনি। সুতারাং তারও মৃত্যু হবে। সাথে যারা তার মৃত্যুতে খুশি তারাও কি বেঁচে থাকবে? আল্লাহ বলেন,

وَمَا جَعَلْنَا لِبَشَرٍ مِّن قَبْلِكَ الْخُلْدَ أَفَإِن مِّتَّ فَهُمُ الْخَالِدُونَ
كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ

তোমার পুর্বেও কোন মানুষকে আমরা চিরস্থায়ী করিনি। তাহলে তোমার যদি মৃত্যু হয়, তবে তারা কি চিরঞ্জীব হবে? প্রত্যেক প্রাণীর মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে .....
(সুরা, আম্বিয়া, ৩৪-৩৫)।
আল্লাহ একমাত্র অমর যার কখনো মউত হবেনা।

وَتَوَكَّلْ عَلَى الْحَيِّ الَّذِي لَا يَمُوتُ

"সেই চিরঞ্জীব সত্তার উপর তুমি তাওয়াক্কুল করো, যার কখনো মউত হবেনা।" ....
(সূরা আল ফুরকান, ২৫ :৫৮)
তাছাড়া কোরআনের তাফসির জগতে প্রচলিত আছে যে, নাযিলের দিক থেকে শেষ সূরা অর্থাৎ পবিত্র কোরআনের ১১০ নং সুরা, সুরা নাসর মুহাম্মদ (সা)এর মৃত্যুর প্রতি ইংগিত করেই
নাযিল হয়েছে। দেখুন সহিহ বুখারীতে সূরা নাসরের তাফসির।
...........................................................
প্রাণী মাত্রই মরণশীল এটা চির সত্য একটি কথা। সবাই এই কথাটি বিশ্বাস করে। কিন্তু কোনো মানুষের মধ্যে যখন অতিভক্তির জন্ম নিবে তখন সে অনেক সত্যকে অস্বীকার করবে। আল্লাহর উপরোক্ত স্পষ্ট বাণী অনুসারে কোন প্রাণীই চিরঞ্জীব নয় বরং আল্লাহই চিরঞ্জীব। সুতরাং মুহাম্মদ (সা) মৃত নয় জীবিত এই ধরনের কথা বিশ্বাস করা কুফরি। তাছাড়া ইসলামী বিধান অনুসারে কোনো জীবিত মানুষের জানাজা হয়না, কবরও হয়না। যেহেতু নবীজি (সা) এর উভয়টা হয়েছে। তাই তাকে জীবিত ভাবাটা অবান্তর বিশ্বাস ছাড়া আর কিছুই নয়।
উপরোক্ত আয়াত গুলোর বিপরীতে নিম্নের আয়াতটিকে রূপক হিসেবে ধরে নিতে হবে এবং কোনো রকম বিভ্রান্তি না ছড়িয়ে সালাফিস সালে হীনদের মত আক্বিদা পোষণ করতে হবে।

وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا بَلْ أَحْيَاءٌ عِندَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ

"শহীদদের তোমরা মৃত বলোনা বরং তারা জীবিত। তারা আল্লাহর পক্ষ থেকে রিযিক প্রাপ্ত হয় "
(সূরা আল ইমরান, ৩:১৬৯। সূরা হাজ্ব ২২:৫৮)।

বি.দ্রঃ যদি হায়াতুন্নবী মানে হয়, মৃত্যু পরবর্তী জীবন বা বারযাকের জীবন তবে এক্ষেত্রে শুধু মুহাম্মদ (সা) নয় দুনিয়ার যত মানুষ মারা গেছে সকলই জীবিত। যেহেতু, দেহ থেকে আত্বার বের হয়ে যাওয়াকে মৃত্যু বলা হয়, তাই দুনিয়ার ভাষায় সকলকে মৃত বলে ধরে নিতে হবে।
লেখক : আল্লাহর অতি নগন্য গোনাহগার গোলাম,
আবুবকর সিদ্দিক।
February 26, 2015

Comments

  1. হযরত আবুবকর(রাঃ)বলেন,যারা মুহাম্মদ(সাঃ) এর পূজা করত তারা জানুক যে মুহাম্মদ(সাঃ) মারা গেছেন। আর যারা আল্লাহর পূজা করে তারা জানুক যে আল্লাহ অমর অবিনশ্বর। In-book reference Sahih al Bhukari
    : Book 23, Hadith 5
    USC-MSA web (English) reference
    : Vol. 2, Book 23, Hadith 333

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

Application for permission to visit National Museum.

মিলাদুন্নবী ও সূরা আহযাবের 56 নং আয়াত:

ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসন (প্রথম পর্ব)

রাসূল (সা) প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন কেন?

সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (রা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ