আল্লাহ ব্যাতীত আর কেহ গায়েব জানেনা।

আলেমুল গায়েব বা অদৃশ্য বিষয়ে কেবল আল্লাহ পাক জানেন। হায়াত, মউত, রিজিক ও দৌলতের মতো এই বিষয়টিও আল্লাহর হাতে রয়েছে। তবে তিনি তার বান্দাদের মধ্যে থেকে যাকে ইচ্ছা ওহীর মাধ্যমে অদৃশ্য বিষয়ে জানান। যেমন আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা) কে ওহির মাধ্যমে এমন অনেক কিছু জানিয়েছেন যা তিনি আগে জানতেন না।
কিন্তু কেউ কাউকে কোন অদৃশ্য বিষয়ে জানালে তাতে তিনি আলেমুল গায়েব হয়ে যায়না। আলেমুল গায়েব তিনি যিনি জানানো ছাড়ায় নীজ থেকে অদৃশ্য বিষয়ে জানেন। এই হিসেবে আল্লাহ পাক ছাড়া আর কেউ গায়েব জানেনা। যারা বলে মুহাম্মদ (সা:) নিজে থেকে গায়েবের খবর বলে দিতে পারতেন তারা মিথ্যাবাদী, জাহেল
নিচে আল্লাহ ছাড়া যে কেউ গায়েব জানেনা, এমনকি মুহাম্মদ (সা:)ও না তার দলিল পেশ করলাম।
আল্লাহ বলেনঃ
ﻗُﻞْ ﻟَﺎ ﻳَﻌْﻠَﻢُ ﻣَﻦْ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺍﻟْﻐَﻴْﺐَ ﺇِﻟَّﺎ ﺍﻟﻠَّﻪُ
বলুন, আসমান ও জমিনে আল্লাহ ব্যতিত অন্য কেউ গায়েবের খবর জানে না। (সূরা নামলঃ ৬৫)
আল্লাহ আরো বলেনঃ
ﻗُﻞْ ﻟَﺎ ﺃَﻗُﻮﻝُ ﻟَﻜُﻢْ ﻋِﻨﺪِﻱ ﺧَﺰَﺍﺋِﻦُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺍﻟْﻐَﻴْﺐَ ﻭَﻟَﺎ ﺃَﻗُﻮﻝُ ﻟَﻜُﻢْ ﺇِﻧِّﻲ ﻣَﻠَﻚٌ ﺇِﻥْ ﺃَﺗَّﺒِﻊُ ﺇِﻟَّﺎ ﻣَﺎ ﻳُﻮﺣَﻰ ﺇِﻟَﻲَّ
অর্থঃ “আপনি বলুন, আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে। তাছাড়া আমি অদৃশ্য বিষয় অবগতও নই। আমি এমনও বলি না যে আমি ফেরেশতা। আমি তো শুধু ঐ অহীর অনুসরণ করি, যা আমার কাছে আসে।” (সূরা আন্আ’মঃ ৫০) 
আল্লাহ আরো বলেনঃ
قُل لَّا أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ وَلَوْ كُنتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ لَاسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِيَ السُّوءُ إِنْ أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের কল্যাণ এবং অকল্যাণ সাধনের মালিক নই, কিন্তু যা আল্লাহ চান। আর আমি যদি গায়েবের কথা জেনে নিতে পারতাম, তাহলে বহু কল্যাণ অর্জন করে নিতে পারতাম।  ফলে আমার কোন অমঙ্গল কখনো হতে পারত না। আমি তো শুধুমাত্র একজন ভীতি প্রদর্শক ও ঈমানদারদের জন্য সুসংবাদদাতা।” (সূরা আ’রাফঃ ১৮৮)।
আল্লাহ বলেন,
  وَعِندَهُ مَفَاتِحُ الْغَيْبِ لَا يَعْلَمُهَا إِلَّا هُوَ
"গায়েবের কুঞ্জি তারাই নিকট তিনি ব্যতীত আর কেহ গায়েব জানেনা..."। (সূরা আন-আম: ৬:৫৯)

  هَٰذَا نَذِيرٌ مِّنَ النُّذُرِ الْأُولَى * أَزِفَتِ الْآزِفَة * لَيْسَ لَهَا مِن دُونِ اللَّهِ كَاشِفَة

এই নবীও সতর্ককারী অতীতের সতর্ককারী দের মতোই। কিয়ামতের সন্নিকটে, (তবে) আল্লাহ ছাড়া কেউ তা উন্মুক্ত করতে সক্ষম নয় (সুরা নাজম, ৫৩ :৫৬-৫৮)
জিনেরাও গায়েবের বিষয়ে নিজ থেকে কিছুই জানেনা,
আল্লাহ বলেন,
فَلَمَّا قَضَيْنَا عَلَيْهِ الْمَوْتَ مَا دَلَّهُمْ عَلَىٰ مَوْتِهِ إِلَّا دَابَّةُ الْأَرْضِ تَأْكُلُ مِنسَأَتَهُ فَلَمَّا خَرَّ تَبَيَّنَتِ الْجِنُّ أَن لَّوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ الْغَيْبَ مَا لَبِثُوا فِي الْعَذَابِ الْمُهِينِ

"আমরা সুলাইমানের মউত ঘটালাম, তখন তার মৃত্যুর খবর জানালেন মাটির পোকা, যারা তার লাঠি খাচ্ছিলো। যখন সে (সুলাইমান) পড়ে গেলো, তখন জিনেরা বুঝতে পারলো যে, তারা যদি গায়েব জানতো, তবে তাদেরকে এই লাঞ্ছনার কর শাস্তিতে আবদ্ধ থাকতে হতোনা (সূরা, সাবা, ৩৪ :১৪) 
Surah an Am-6:59
এই বিষয়ে আমাদের আক্বিদা হওয়া উচিত, আল্লাহ যা জানান রাসূল (সা) কে তা ব্যতীত তিনি নিজ থেকে কোন অদৃশ্য বিষয়ে জানতেন না। জানার কোনো ক্ষমতাও আল্লাহ তাকে দেননি। গায়েবের চাবি কেবল আল্লাহর হাতে।
লেখক: আল্লাহর অতি নগন্য গোনাহগার গোলাম,
আবুবকর সিদ্দিক ইবনে আব্দুল মালেক।
২৫/০২/১৫

Comments

Popular posts from this blog

Application for permission to visit National Museum.

মিলাদুন্নবী ও সূরা আহযাবের 56 নং আয়াত:

ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসন (প্রথম পর্ব)

রাসূল (সা) প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন কেন?

সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (রা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ