সূরা নাজমের ৫-১৮ আয়াতে কাকে দেখা নিয়ে আলোচনা হয়েছে?

#প্রশ্নঃ মিরাজের রাত্রে মুহাম্মদ (সাঃ) কি আল্লাহ সুবাহানাহু তায়ালাকে দেখেছিল? যদি না দেখেন তবে সূর নাজমের ৫-১৮ নং আয়াতে কাকে দেখার কথা আলোচনা করা হয়েছে? 
-----------------------------------------------------------
#উত্তরঃ আপনার প্রশ্নের দুটি অংশ। একটি হলো, মিরাজের রাত্রে মুহাম্মদ (সা:) আল্লাহ তায়ালাকে দেখেছেন কিনা, অপরটি হচ্ছে, সূরা নাজমের ৫-১৮ কাকে দেখা নিয়ে আলোচনা হয়েছে?
প্রথম অংশের জবাবঃ
এই বিষয়টি নিয়ে স্বয়ং সাহাবীদের মধ্যে মতভেদ ছিল। কেউ বলেছেন, ঐ রাত্রে মুহাম্মদ (সা:) তার প্রভুকে দেখেছেন আবার কেউ বলেছেন দেখেননি। উভয় মতের পক্ষে হাদীস বিদ্যমান রয়েছে। তবে তুলনামূলক ভাবে চিন্তা করলে যে মতটি সবচেয়ে শক্তিশালী এবং কুরআন সম্মত, তা হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ (সা:) কখনোই তার প্রভুকে দেখেননি এবং দুনিয়াবী অবস্থায় তা সম্ভবও নয়। এই মতের পক্ষে হযরত আয়শা (রা:) বর্ণিত হাদিসটি বেশ শক্তিশালী।
"হযরত মাসরুক (রা:) হযরত আয়শা (রা:) কে জিজ্ঞাসা করেনঃ হে উম্মুল মুমিনীন! মুহাম্মদ (সা:) কি তাঁর মহিমান্বিত প্রতিপালককে দেখেছেন? উত্তরে আয়শা (রা:) বলেনঃ সুবাহানাল্লাহ! তোমার কথা শোনে আমার লোম খাড়া হয়ে গেছে। তুমি কোথায় রয়েছ? জেনে রেখো যে, এই তিনটি কথা যে তোমাকে বলে সে মিথ্যা বলেঃ (এক) যে তোমাকে বলে যে, মুহাম্মদ (সা:) তাঁর প্রতিপালককে দেখেছেন সে মিথ্যা বলে" অতঃপর তিনি পাঠ করেন,
لَا تُدْرِكُهُ الْاَبْصَارُ  ۖ   وَهُوَ يُدْرِكُ الْاَبْصَارَ ۚ  .....
"কোন চক্ষু তাকেঁ দেখতে পায়না, কিন্তু তিনি চক্ষুগুলোকে পেয়ে যান" (৬:১০৩)
وَمَا كَانَ لِبَشَرٍ اَنْ يُّكَلِّمَهُ اللّٰهُ اِلَّا وَحْيًا اَوْ مِنْ وَّرَآىٴِ حِجَابٍ ....
"অহীর মাধ্যমে অথবা পর্দার আড়াল ছাড়া কোন মানুষের সাথে আল্লাহ কথা বলেননা"
..........।
আপনার প্রশ্নের দ্বতিীয় অংশের জবাব, সূরা নাজমের ৫-১৮ নং আয়াত গুলোতে হযরত মুহাম্মদ (সা:) হযরত জিব্রাইল (আ:) কে দেখেছেন তার আসল আকৃতিতে এই কথায় আলোচনা করা হয়েছে। আপনাকে ৫ নং আয়াতটি উল্লেখ করছি, 
"তাকে শিক্ষা দান করে শক্তিশালী" 
এইবার লক্ষ্য করুন নিম্নে উল্লেখিত আয়াতটি, কে এই শক্তিশালী!
اِنَّهٗ لَقَوْلُ رَسُوْلٍ كَرِيْمٍ ۙ ذِيْ قُوَّةٍ عِنْدَ ذِى الْعَرْشِ مَكِيْنٍ ۙ مُّطَاعٍ ثَمَّ اَمِيْنٍ  ؕ
"নিশ্চয়ই এই কুরআন সম্মানিত বার্তাবাহকের আনীত বাণী, যে শক্তিশালী, আরশের মালিকের নিকট মর্যাদা সম্পন্ন, যাকে সেথায় মান্য করা হয় এবং যে বিশ্বাস ভাজন " (৮১: ১৯--২১)
উপরের আয়াতটিতে হযরত জিব্রাইল আমীনের কথা বলা হয়েছে।
অতঃপর বুঝতে পেরেছেন সূরা নাজমের ৫-১৮ নং আয়াতে কাকে দেখা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আপনি যদি "শক্তিশালী'' দ্বারা জিব্রাইল (আ:) কে বুঝে থাকেন, তবে তাকে মনের মধ্যে উপস্থিত রেখেই সূরা নাজমের ৫-১৮ নং আয়াতগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ুন তবে সহজেই উত্তর পেয়ে যাবেন। ইন্সাআল্লাহ!

বিঃদ্রঃ প্রশ্নকর্তা ও উত্তরদাতা উভয় আমি, তবে উপরোক্ত বিষয়টি স্পষ্ট করার সার্থে আমাকে উভয়ের ভূমিকা পালন করতে হয়েছে।
১৪/০৪/১৮

Comments

Popular posts from this blog

Application for permission to visit National Museum.

মিলাদুন্নবী ও সূরা আহযাবের 56 নং আয়াত:

ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসন (প্রথম পর্ব)

রাসূল (সা) প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন কেন?

সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (রা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ