ঈমান إِيمَان ও তাওহীদ توحيد এর সংক্্ষিপ্ত আলোচনা।
আলোচনাঃ ঈমান ও তাওহীদ।
ঈমানঃ إِيمَان
ঈমান (إِيمَان) আরবী শব্দ যার বাংলা সরল অর্থ বিশ্বাস। না দেখে কোন কিছুর অস্তিত্বকে সন্দেহতীত ভাবে স্বীকার করাকে ঈমান বলা হয়। ইসলামের পরিভাষায় আল্লাহ, ফেরেস্তা, জান্নাত - জাহান্নাম, আসমানী কিতাব, নবী - রাসূল, মৃত্যু পরবর্তী জীবন, তাকদির ইত্যাদির উপর কোন রকম সন্দেহ ছাড়াই বিশ্বাস করাকে ঈমান বলে। আর যারা ঈমান রাখে তাদের বলা হয় মুমিন।
কোরান হতে ঈমান বিষয়ক কিছু আয়াত তুলে ধরলাম।
আল্লাহ বলেনঃ
اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ یَہۡدِیۡہِمۡ رَبُّہُمۡ بِاِیۡمَانِہِمۡ ۚ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہِمُ الۡاَنۡہٰرُ فِیۡ جَنّٰتِ النَّعِیۡمِ
"নিশ্চয় যারা ঈমান আনে এবং নেক আমল করে, তাদের রব ঈমানের কারণে তাদেরকে পথ দেখাবেন, আরামদায়ক জান্নাতসমূহে যার তলদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত। (সূরা ইউনুস, ১০/৯, সূরা হুদ, ১১/২৩
"যে না দেখেই রহমানকে ভয় করত এবং বিনীত হৃদয়ে উপস্থিত হত। ৫০/৩৩
اَللّٰہُ وَلِیُّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا ۙ یُخۡرِجُہُمۡ مِّنَ الظُّلُمٰتِ اِلَی النُّوۡرِ۬ؕ وَ الَّذِیۡنَ کَفَرُوۡۤا اَوۡلِیٰٓـُٔہُمُ الطَّاغُوۡتُ ۙ یُخۡرِجُوۡنَہُمۡ مِّنَ النُّوۡرِ اِلَی الظُّلُمٰتِ ؕ اُولٰٓئِکَ اَصۡحٰبُ النَّارِ ۚ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ
"যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ তাদের অভিভাবক, তিনি তাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন। আর যারা কুফরী করে, তাদের অভিভাবক হল তাগূত। তারা তাদেরকে আলো থেকে বের করে অন্ধকারে নিয়ে যায়। তারা আগুনের অধিবাসী, সেখানে তারা স্থায়ী হবে। (সূরা বাক্বারাহ 2/257)
اٰمَنَ الرَّسُوۡلُ بِمَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡہِ مِنۡ رَّبِّہٖ وَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ؕ کُلٌّ اٰمَنَ بِاللّٰہِ وَ مَلٰٓئِکَتِہٖ وَ کُتُبِہٖ وَ رُسُلِہٖ ۟ لَا نُفَرِّقُ بَیۡنَ اَحَدٍ مِّنۡ رُّسُلِہٖ ۟ وَ قَالُوۡا سَمِعۡنَا وَ اَطَعۡنَا ٭۫ غُفۡرَانَکَ رَبَّنَا وَ اِلَیۡکَ الۡمَصِیۡرُ
"রাসূল তার নিকট তার রবের পক্ষ থেকে নাযিলকৃত বিষয়ের প্রতি ঈমান এনেছে, আর মুমিনগণও। প্রত্যেকে ঈমান এনেছে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাকুল, কিতাবসমূহ ও তাঁর রাসূলগণের উপর, আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না। আর তারা বলে, আমরা শুনলাম এবং মানলাম। হে আমাদের রব! আমরা আপনারই ক্ষমা প্রার্থনা করি, আর আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল। ২/২৮৫
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اٰمِنُوۡا بِاللّٰہِ وَ رَسُوۡلِہٖ وَ الۡکِتٰبِ الَّذِیۡ نَزَّلَ عَلٰی رَسُوۡلِہٖ وَ الۡکِتٰبِ الَّذِیۡۤ اَنۡزَلَ مِنۡ قَبۡلُ ؕ وَ مَنۡ یَّکۡفُرۡ بِاللّٰہِ وَ مَلٰٓئِکَتِہٖ وَ کُتُبِہٖ وَ رُسُلِہٖ وَ الۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلٰلًۢا بَعِیۡدًا
হে মুমিনগণ, তোমরা ঈমান আন আল্লাহর প্রতি, তাঁর রাসূলের প্রতি এবং সে কিতাবের প্রতি যা তিনি তাঁর রাসূলের উপর নাযিল করেছেন এবং সে কিতাবের প্রতি যা তিনি পূর্বে নাযিল করেছেন। আর যে আল্লাহ, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ, তাঁর রাসূলগণ এবং শেষ দিনকে অস্বীকার করবে, সে ঘোর বিভ্রান্তিতে বিভ্রান্ত হবে। (সূরা আন নিসা, ৪/১৩৬)
وَ الَّذِیۡنَ یُؤۡمِنُوۡنَ بِمَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡکَ وَ مَاۤ اُنۡزِلَ مِنۡ قَبۡلِکَ ۚ وَ بِالۡاٰخِرَۃِ ہُمۡ یُوۡقِنُوۡنَ
আর যারা ঈমান আনে তাতে, যা তোমার প্রতি নাযিল করা হয়েছে এবং যা তোমার পূর্বে নাযিল করা হয়েছে। আর আখিরাতের প্রতি তারা ইয়াকীন রাখে। (সূরা আল বাক্বারাহ, ২/৪)
قُوۡلُوۡۤا اٰمَنَّا بِاللّٰہِ وَ مَاۤ اُنۡزِلَ اِلَیۡنَا وَ مَاۤ اُنۡزِلَ اِلٰۤی اِبۡرٰہٖمَ وَ اِسۡمٰعِیۡلَ وَ اِسۡحٰقَ وَ یَعۡقُوۡبَ وَ الۡاَسۡبَاطِ وَ مَاۤ اُوۡتِیَ مُوۡسٰی وَ عِیۡسٰی وَ مَاۤ اُوۡتِیَ النَّبِیُّوۡنَ مِنۡ رَّبِّہِمۡ ۚ لَا نُفَرِّقُ بَیۡنَ اَحَدٍ مِّنۡہُمۡ ۫ۖ وَ نَحۡنُ لَہٗ مُسۡلِمُوۡنَ
তোমরা বল, ‘আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা নাযিল করা হয়েছে আমাদের উপর ও যা নাযিল করা হয়েছে ইবরাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকূব ও তাদের সন্তানদের উপর আর যা প্রদান করা হয়েছে মূসা ও ঈসাকে এবং যা প্রদান করা হয়েছে তাদের রবের পক্ষ হতে নবীগণকে। আমরা তাদের কারো মধ্যে তারতম্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত’। (সূরা আল বাক্বারা, ২/১৩৬)
وَ الَّذِیۡنَ یُنۡفِقُوۡنَ اَمۡوَالَہُمۡ رِئَآءَ النَّاسِ وَ لَا یُؤۡمِنُوۡنَ بِاللّٰہِ وَ لَا بِالۡیَوۡمِ الۡاٰخِرِ ؕ وَ مَنۡ یَّکُنِ الشَّیۡطٰنُ لَہٗ قَرِیۡنًا فَسَآءَ قَرِیۡنًا
"আর যারা নিজ ধন-সম্পদ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ব্যয় করে এবং ঈমান আনে না আল্লাহর প্রতি এবং না শেষ দিনের প্রতি। আর শয়তান যার সঙ্গী হয়, সঙ্গী হিসেবে কতইনা নিকৃষ্ট সে! (সূরা আন নিসা, 4/38)
اَعَدَّ اللّٰہُ لَہُمۡ جَنّٰتٍ تَجۡرِیۡ مِنۡ تَحۡتِہَا الۡاَنۡہٰرُ خٰلِدِیۡنَ فِیۡہَا ؕ ذٰلِکَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ
"আল্লাহ তাদের জন্য তৈরি করেছেন জান্নাতসমূহ, যার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হবে নহরসমূহ, তাতে তারা চিরদিন থাকবে, এটিই মহাসফলতা। (সূরা আত তাওবা, 9/89)
وَ لِلّٰہِ مُلۡکُ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ یَوۡمَ تَقُوۡمُ السَّاعَۃُ یَوۡمَئِذٍ یَّخۡسَرُ الۡمُبۡطِلُوۡنَ
"আর আসমানসমূহ ও যমীনের মালিকানা আল্লাহরই এবং যেদিন কিয়ামত সংঘটিত হবে সেদিন বাতিলপন্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (সূরা আল জাত্বিয়া, ৪৫/২৭)
وَ مَنۡ یَّعۡمَلۡ مِنَ الصّٰلِحٰتِ مِنۡ ذَکَرٍ اَوۡ اُنۡثٰی وَ ہُوَ مُؤۡمِنٌ فَاُولٰٓئِکَ یَدۡخُلُوۡنَ الۡجَنَّۃَ وَ لَا یُظۡلَمُوۡنَ نَقِیۡرًا
"আর পুরুষ কিংবা নারীর মধ্য থেকে যে নেককাজ করবে এমতাবস্থায় যে, সে মুমিন, তাহলে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে এবং তাদের প্রতি খেজুর বীচির আবরণ পরিমাণ যুলমও করা হবে না। (সূরা আন নিসা, ৪/১২৪)
وَ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ اتَّبَعَتۡہُمۡ ذُرِّیَّتُہُمۡ بِاِیۡمَانٍ اَلۡحَقۡنَا بِہِمۡ ذُرِّیَّتَہُمۡ وَ مَاۤ اَلَتۡنٰہُمۡ مِّنۡ عَمَلِہِمۡ مِّنۡ شَیۡءٍ ؕ کُلُّ امۡرِیًٴۢ بِمَا کَسَبَ رَہِیۡنٌ
"আর যারা ঈমান আনে এবং তাদের সন্তান-সন্ততি ঈমানের সাথে তাদের অনুসরণ করে, আমরা তাদের সাথে তাদের সন্তানদের মিলন ঘটাব এবং তাদের কর্মের কোন অংশই কমাব না। প্রত্যেক ব্যক্তি তার কামাইয়ের ব্যাপারে দায়ী থাকবে। (সূরা আত তূর, ৫২/২১)
اِنَّ الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ ۙ اُولٰٓئِکَ ہُمۡ خَیۡرُ الۡبَرِیَّۃِ
নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে তারাই সৃষ্টির সর্বোৎকৃষ্ট। (সূরা আল বায়্যিনাহ, ৯৮/৭)
তাওহীদঃ توحيد
তাওহীদ আরবি শব্দ আহাদ বা আহাদা থেকে এসেছে। তাওহীদের বাংলা সরল অর্থ একাত্ববাদ। ইসলামের পরিভাষায় মহান সৃষ্টিকর্তাকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে বিশ্বাস করা, তার জাত, রাজত্ব, ক্ষমতা, গুণ ও বৈশিষ্ট্যে কোন কিছুতেই অংশীদার সাব্যস্ত না করা। শুধুমাত্র তার ইবাদত করা, তার নিকট দোয়া করা এবং তার ইবাদত ও দোয়ায় কোন সৃষ্টিকে শরীক না করাকেই তাওহীদ বলে।
ইতিপূর্বে ঈমানের গুরুত্ব আলোচনা করেছিলাম। আর ঈমানের মূল ভিত্তি তাওহীদ। ঈমানকে যদি চোখ ধরা হয়, তবে তাওহীদ হচ্ছে সেই চোখের মধ্য মনি। আর মধ্য মনি ছাড়া চোখ হবে দৃষ্টি শক্তিহীন অপ্রয়োজনীয় কিছু। যার কোন ফল নাই।
যদি প্রশ্ন করা হয়, কোরানে কোন বিষয়ে বেশি আলোচনা করা হয়েছে? উত্তর হবে, তাওহীদ।
এরপর যদি প্রশ্ন করা হয়, সকল নবী রাসূলগনের দাওয়াতের প্রথম অংশ কি? উত্তর হবে, তাওহীদ।
আবার যদি প্রশ্ন করা হয়, কি জন্য সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে? উত্তর হবে, তাওহীদ বিশ্বাসে বিশুদ্ধতা অর্জন না করলে।
এইভাবেই দেখা যায় তাওহীদ হচ্ছে একজন মুসলিমের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দুনিয়ায় যত নবী রাসূলগণ প্রেরিত হয়েছে সবার দাওয়াতের মৌলিক ও প্রথম মিশন ছিল তাওহীদ প্রতিষ্ঠিত করা।
আল্লাহ বলেন,
وَ مَاۤ اَرۡسَلۡنَا مِنۡ قَبۡلِکَ مِنۡ رَّسُوۡلٍ اِلَّا نُوۡحِیۡۤ اِلَیۡہِ اَنَّہٗ لَاۤ اِلٰہَ اِلَّاۤ اَنَا فَاعۡبُدُوۡنِ
আর তোমার পূর্বে এমন কোন রাসূল আমি পাঠাইনি যার প্রতি আমি এই ওহী নাযিল করিনি যে, ‘আমি ছাড়া কোন (সত্য) ইলাহ নেই; সুতরাং তোমরা আমার ইবাদাত কর।’
(সূরা আল আম্বিয়া, ২১/২৫)
وَ لَقَدۡ بَعَثۡنَا فِیۡ کُلِّ اُمَّۃٍ رَّسُوۡلًا اَنِ اعۡبُدُوا اللّٰہَ وَ اجۡتَنِبُوا الطَّاغُوۡتَ
আর আমি অবশ্যই প্রত্যেক জাতিতে একজন রাসূল প্রেরণ করেছি যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদাত কর এবং পরিহার কর তাগূতকে। (সূরা আন নাহল, ১৬/৩৬)
قُلۡ اِنَّمَا یُوۡحٰۤی اِلَیَّ اَنَّمَاۤ اِلٰـہُکُمۡ اِلٰہٌ وَّاحِدٌ ۚ فَہَلۡ اَنۡتُمۡ مُّسۡلِمُوۡنَ
বল, ‘আমার প্রতি ওহী প্রেরণ করা হয় যে, তোমাদের ইলাহ একক ইলাহ। সুতরাং তোমরা কি আত্মসমর্পণকারী হবে’? (সূরা আল আম্বিয়া, ২১/১০৮)
যে নিজেকে মুসলিম দাবি করল কিন্তু তাওহীদ সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করলোনা, তবে দাবিটাই অর্থহীন।
নিম্নে কোরান হতে তাওহীদের গুরুত্ব বিষয়ে আরও আয়াত তুলে ধরা হলো।
তাওহীদের বিপরীত শব্দ শিরক। তাওহীদ ও শিরক কখনো এক হয়না। যখন কেউ তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে তখন সে শিরক থেকে মুক্ত। আর শিরক করলে সে তাওহীদের প্রতিষ্ঠিত থাকবেনা। কোরানের আয়াত গুলোতে বলা হয়নি যে, তাওহীদ প্রতিষ্ঠিত কর। বরং বলা হয়েছে শির্ক করোনা। এখানে শিরক করোনা মানে তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত থাক। যেমন, কাউকে ঘর থেকে বাহির হতে নিষেধ করা মানে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়াকেই বুঝায়। নিচে কোরানের কিছু আয়াত তুলে ধরা হয়েছে।
আল্লাহ বলেনঃ
اَلَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا وَ لَمۡ یَلۡبِسُوۡۤا اِیۡمَانَہُمۡ بِظُلۡمٍ اُولٰٓئِکَ لَہُمُ الۡاَمۡنُ وَ ہُمۡ مُّہۡتَدُوۡنَ
"যারা ঈমান এনেছে এবং নিজ ঈমানকে যুলমের (শিরকের) সাথে সংমিশ্রণ করেনি, তাদের জন্যই নিরাপত্তা এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত"। (সূরা আন আনাম, ৬/৮২)
কোরানের এই আয়াতে আল্লাহ স্পষ্ট বলছে, শিরক না করে তাওহীদের প্রতিষ্ঠিত থাকা মানুষের জন্য নিরাপত্তা আছে দুনিয়া এবং আখিরাতে। এবং তারাই হিদায়েত প্রাপ্ত।
ذٰلِکَ ہُدَی اللّٰہِ یَہۡدِیۡ بِہٖ مَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ ؕ وَ لَوۡ اَشۡرَکُوۡا لَحَبِطَ عَنۡہُمۡ مَّا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ
"এ হচ্ছে আল্লাহর হিদায়াত, এ দ্বারা তিনি নিজ বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা হিদায়াত করেন। আর যদি তারা শির্ক করত, তবে তারা যা আমল করছিল তা অবশ্যই বরবাদ হয়ে যেত"। (সূরা আন আনাম, ৬/৮৮)
উপরোক্ত আয়াতে স্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে, তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত না থেকে যদি নবীগণ শিরকে লিপ্ত হতো, তবে তাদের সকল নেক আমল বরবাদ হয়ে যেত।
قُلۡ تَعَالَوۡا اَتۡلُ مَا حَرَّمَ رَبُّکُمۡ عَلَیۡکُمۡ اَلَّا تُشۡرِکُوۡا بِہٖ شَیۡئًا ...
"বল, ‘এসো, তোমাদের উপর তোমাদের রব যা হারাম করেছেন, তা তিলাওয়াত করি যে, তোমরা তার সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না..." ৬/১৫১
উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ তার সাথে শিরক করতে নিষেধ করছে। শিরক করতে নিষেধ করা মানেই তাওহীদের প্রতিষ্ঠিত থাকার নিরদেশ দেয়া হয়েছে।
وَ اِذۡ قَالَ لُقۡمٰنُ لِابۡنِہٖ وَ ہُوَ یَعِظُہٗ یٰبُنَیَّ لَا تُشۡرِکۡ بِاللّٰہِ ؕؔ اِنَّ الشِّرۡکَ لَظُلۡمٌ عَظِیۡمٌ
"আর স্মরণ কর, যখন লুকমান তার পুত্রকে উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছিল, ‘প্রিয় বৎস, আল্লাহর সাথে শিরক করো না; নিশ্চয় শিরক হল বড় যুলম"। (সূরা লোকমান, ৩১/১৩)
উপরোক্ত আয়াতে লোকমান হাকিম তার সন্তানদের আল্লাহর সাথে শিরক করতে নিষেধ করেছে, সাথে এটাও বলছে শিরক বড়ই জুলুম।
وَ مَا قَدَرُوا اللّٰہَ حَقَّ قَدۡرِہٖ ٭ۖ وَ الۡاَرۡضُ جَمِیۡعًا قَبۡضَتُہٗ یَوۡمَ الۡقِیٰمَۃِ وَ السَّمٰوٰتُ مَطۡوِیّٰتٌۢ بِیَمِیۡنِہٖ ؕ سُبۡحٰنَہٗ وَ تَعٰلٰی عَمَّا یُشۡرِکُوۡنَ
"আর তারা আল্লাহকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়নি। অথচ কিয়ামতের দিন গোটা পৃথিবীই থাকবে তাঁর মুষ্টিতে এবং আকাশসমূহ তাঁর ডান হাতে ভাঁজ করা থাকবে। তিনি পবিত্র, তারা যাদেরকে শরীক করে তিনি তাদের ঊর্ধ্বে। (সূরা যুমার, ৩৯/৬৭)
উপরোক্ত আয়াতে তাওহীদ বিনষ্টকারী মুশরিকদের উদ্দেশ্যে আল্লাহ বলেছেন, তারা তাকে যথাযোগ্য মর্যাদা দেয়নি।
কোরানে এই বিষয়ে আরও অনেক আয়াত পাওয়া যায়, যেখানে আল্লাহ তাওহীদের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে শিরক থেকে বেচে থাকার নির্দেশ দিয়েছে। আশা করি কোরান হতে তাওহীদের গুরত্বটা বুঝতে সক্ষম হয়েছি।
বিঃদ্রঃ আমার চলমান লেখা বইয়ের অংশবিশেষ আপনাদের জন্য পোস্ট করলাম।
👉 পরিশেষে সকল ভালো কাজই আল্লাহর জন্য।
✍️ Abubakkar Siddiq (2022)
Comments
Post a Comment