প্রয়োজন ধর্মীয় সংস্কার, চাই সচেতন মুসলিম -ইবনে আব্দুল মালেক।

বাগানের মালী বাগান নিয়মিত সঠিক ভাবে
পরিচর্যা না করলে, যেমনি বাগানে অসংখ্য
পরগাছার জন্ম নেয়, ঠিক তেমনি ঈমান ও
ইসলাম নামক এই বাগানের নিয়মিত ও সঠিক
ভাবে যত্ন না নিলে তাতে অসংখ্য
কুসংস্কার এর জন্ম নিবে এটাই স্বভাবিক.
আমাদের উপমহাদেশের মুসলিমদের মধ্য তাই
হয়েছে ও হচ্ছে.অযত্ন অবহেলায় আমাদের
ঈমান ও ইসলাম নামক দুটি বাগানেয় যেন
অসংখ্য পরগাছা জন্ম নিয়েছে.
এই কারণেয় ধর্মীয় কুসংস্কারের দিক দিয়ে
হিন্দু,বৌদ্ধ ও শিখ ধর্মের পাশে অবস্থান
করছে উপমহাদেশের মুসলিমগণ.
হয়তো তাই, মুসলিম হও্যা সত্বেও যেন
ইসলামের জন্ম ভূমির মুসলিমদের সাথে
আমাদের উপমহাদেশের মুসলিমদের ঈমান ও
আমলের বিরাটা অমিল.
চিন্তাশীল মাত্রই উপলব্ধি করতে পারবে এই
দুইয়ের মধ্যে কারা সঠিক ও কুরান সুন্নাহর
কাছাকাছি. তাদের জন্য ইহা উপলব্ধি করা
মোটেও কষ্টের নয়.
কিন্তু যারা উপলব্ধি করতে পারেনা তাদের
জন্যই সংক্ষিপ্ত এই আলোচনা,
আমাদের উপমহাদেশের মুসলিমদের মধ্যে
ঈমান ও ইসলাম নামক দুটি বাগানেয় যেন
পরগাছা নামক অসংখ্য কুসংস্কারের জন্ম
হচ্ছে প্রতিনিয়ত. ফলে আমাদের ও ইসলামের
জন্ম ভূমির মানুষগুলোর মধ্যে দিন দিন
পার্থক্য তৈরি হচ্ছে,
একদল ঈমান ও ইসলামের মৌলিক
দিকগুলোকে প্রধান্য দেয় বেশি অন্যদল তার
অমৌলিক ও নিজেদের সমাজের
কুসংস্কার্গুলোকে প্রধান্য দেয় বেশি.
যেমন, ঈমানের মূল ভিত্তি তাওহিদ.এই
তাওহিদ প্রচার করা সকল নবী রাসূলগণের
প্রধান কর্তব্য ছিল.
তাই, ইসলামের জন্মভূমির মানুষগুলো এই
ব্যাপারে খুবই সচেতন.
কিন্তু আমাদের উপমহাদেশের অধিকাংশ
মসজিদে সেই তাওহিদের ব্যাপারে কখনো
আলোচনাও করেনা. তাই এদের সামনে যখন
কোন মুসলিম মাজার বা পীরকে সিসদাহ
করে তখন এদের মুখে নাউযুবিল্লাহ শব্দটি
পর্যন্ত আসেনা.
কিন্তু তাদের সামনে যদি বলেন" রাসূল (সা:)
নূরের সৃষ্ট " তখন আপনি যতই তাওহীদের
বিপরীত কাজ করেননা কেন,
তাদের কাছে আপনি সাচ্চা ঈমানদার মূমিন.
অথচ,এটা ঈমানের কোন অংশই নয় বরং
কুসংস্কার ও ভ্রান্ত বিশ্বাস.
এভাবে অনেক কুবিশ্বাস যেন আমাদের ঈমান
আকিদাকে ঘিরে রেখেছে, প্রতিনিয়ত
মুসলিম নামের লোক গুলো তাওহিদের
বিপরীত কাজ করতেছে. আর এসব হচ্ছে
আল্লাহর নবীর নামে বাড়াবাড়ি মুলক কথা
বলে অথবা অলি বুজুর্গদের নামে আজগুবি
গল্প কাহিনি বলে.
অধিকাংশ মানুষ আল্লাহ র কথা বেমালুম
ভুলে গেছে. কোন বিপদে পড়লে যেন
আল্লাহকে ডাকার পরিবর্তে 'ইয়া
রাসূলুল্লাহ' বলে স্বয়ং আল্লাহর রাসূল (সা)
কে ডাকা শুরু করেছে. কেউবা বিপদে পড়লে
ভিবিন্ন অলি ভূজুর্গদের নাম ধরে ডাকে
যেমন,ইয়া খাজা,ইয়া গাউসুল আজম,ইয়া বাবা
জান কেবলা ইত্যাদি.আবার অনেকেই বিপদে
আপদে মানত করে আল্লাহর নামের পরিবর্তে
ভিবিন্ন মাজারের নামে.
মাজার গুলো যেন আমাদের ঈমান ধংসের
জন্য তৈরি হচ্ছে. প্রতিনিয়ত এই মাজার
গুলোতে তাওহীদের বিপরীত কাজ চলতেছে
এক শ্রেণীর মাজার ব্যবাসায়ী এর আঞ্জাম
দিচ্ছে. হিন্দুদের সংস্প্রসে যেন মাজার
গুলো আমাদের ঈমান ধংসের কাজ  আরও
বেগবান করে তুলছে.
হয়তো আমাদের ঈমানের আর শেষ রক্ষা
হবেনা.
এবার আসি ইসলামের মৌলিক বিষয় নিয়ে,
ইসলামের মৌলিক বা মূল ভিত্তি হচ্ছে ফরজ
নামাজ. ফরজ নামাজের ব্যাপারে ইসলামের
জন্মভূমির মানুষ গুলো খুবই সচেতন.তারা সাত
বছরের বাচ্চা থেকে শুরু করে সবাই
পাচও্যাক্ত সালাত পড়ে.সালাতের সময়
মসজিদ গুলো কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়.
আর আমাদের উপমহাদেশের. শুধু সাত বছরের
বাচ্চা বা তরুণরা নয়, ষাট বছরের বুড়ুরা পর্যন্ত
পাচ ও্যাক্ত সালাত ঠিক মতো
পড়েনা,মসজিদ গুলো থাকে ফাকা, সেদিকে
কারও দৃষ্টি থাকেনা বরংশবেবরাতে নফল
নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে জায়গাও পাওয়া
যাবেনা, ঐ-রাতে মসজিদ থাকে কানায়
কানায় পূর্ণ.ঐ রাতে বাচ্চা যদি নামাজ
নাপড়েন মা কত যে  বকে তার কোন ইয়াত্তা
নেই.
অথচ, কুরান বা হাদিসে এই রাতে নফল
নামাজ পড়তে হবে এমন কোন সুস্পষ্ট কথা
পাওয়া যায়না.
আমাদের ইবাদত পদ্ধতি যেন রাসূল (সা:) এর
সুন্নত মুক্ত হয়ে পড়েছে. আযান থেকে শুরু
করে নামাজ,জিকির,দরুদ পাঠ,জিয়ারত,
প্রভৃতি ইবাদত পদ্ধতি যেন নিজেদের মনগড়া
নিয়ম থেকে মুক্ত নয়.
পাচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে না পারলেও তাদের
মনে কোন ভয় জাগেনা কিন্ত সবে বরাত,সবে
মিরাজের রাতে নফল নামাজ অবশ্যয় পড়তে
হবে. তারা
নফল ইবাদতকে ফরজের মতো ভাবে ফলে
ফরজ চলে যাক তাতে কি নফল ইবাদত করতেই
হবে. অনেকেই আছে যাদের হজ্বে যাওয়ার
সামর্থ থাকলেও হজ্বে না গিয়ে প্রতি বছর
আজমির শরীফে যায়. কুরান পাঠের মতো
শারীরিক ইবাদতকে যেন আর্থিক ইবাদতে
পরিণত করেছে. এই ভাবে আমরা ইসলামের
আসল সুন্নত থেকে দূরে সরে যাচ্ছি.
আমাদের এই দূরে যাওয়া থেকে রোধ করার
জন্য প্রয়োজন সংস্কার.
চাই সচেতন মুসলিম.
কিন্তু এমন সচেতন মুসলিম কি আমাদের
সমাজে আছে যে বা যারা আমাদের ঈমান ও
ইসলামের মধ্যে গজিয়ে উঠা
পরগাছাগুলো উপড়িয়ে ফেলার জন্য এগিয়ে
আসবে?

Comments

  1. এই ভাবে আমরা ইসলামের
    আসল সুন্নত থেকে দূরে সরে যাচ্ছি.
    আমাদের এই দূরে যাওয়া থেকে রোধ করার
    জন্য প্রয়োজন সংস্কার.
    চাই সচেতন মুসলিম.
    কিন্তু এমন সচেতন মুসলিম কি আমাদের
    সমাজে আছে যে বা যারা আমাদের ঈমান ও
    ইসলামের মধ্যে গজিয়ে উঠা
    পরগাছাগুলো উপড়িয়ে ফেলার জন্য এগিয়ে
    আসবে?

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

Application for permission to visit National Museum.

মিলাদুন্নবী ও সূরা আহযাবের 56 নং আয়াত:

ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসন (প্রথম পর্ব)

রাসূল (সা) প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন কেন?

সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (রা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ