ধীরে ধীরে হিন্দু মুশরিকদের সাথে মিশে যাচ্ছে সুন্নি বিদাতিরা!!!

ﺑِﺴْﻢِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺍﻟﺮَّﺣْﻤَـٰﻦِ ﺍﻟﺮَّﺣِﻴﻢِ
 ইসলামের সোনালি যুগে তথা সাহাবী, তাবেঈ ও তাবে-তাবেঈর যুগে ইসলাম তার আসল রূপে সজ্জিত ছিল যেভাবে রাসূলুল্লাহ (সা) করেছেন এবং রেখে গেছেন। কিন্তু সেই তিন যুগের পর থেকে মুসলমানরা তাদের সে সোনালি ঐতিহ্য হারাতে বসে যখন মুসলমানরা তাদের নিজেদের ধর্মীয় নীতিমালার ব্যপারে উদাসীন হয়ে পড়ে, যখন ইসলাম পৃথিবীর সকল জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।
ইসলাম পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ার সাথে মুসলমানদের সাথে মিলিত হয় বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের সাথে। অনেক অমুসলিম মুসলমানদের সংস্পর্শে এসে ইসলামের ছায়াতলে আসলেও অনেক সময় এইসব নওমুসলিম দের পূর্ব অনুসৃত ধর্মের অনেক নিয়ম কানন তাদের মধ্যে রয়ে যায়। আবার অনেকেই আছে যারা ইসলামকে ভালভাবে জেনেই ইসলাম কবুল করেছেন। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এইরকম হয়না।
ইতিমধ্যে আমি যা আলোচনা করেছি তা অমুসলিম ধর্ম ও তাদের সাংস্কৃতির সাথে মুসলমানদের ধর্ম ও সাংস্কৃতির সাথে সংমিশ্রণের একটি মৌলিক দিক।
যদি এই মৌলিক দিকটি সামনে রেখে আমাদের উপমহাদেশের মুসলমানদের কথা চিন্তা করি। তবে দেখা যাবে এই অঞ্চলের আদি ধর্ম তথা হিন্দু ধর্মের বিশ্বাস ও সাংস্কৃতির সাথে মুসলমানদের অনেক বিশ্বাস ও সাংস্কৃতির অনেক মিল পাওয়া যায়। যদিও সব মুসলিম নয়।
এক্ষেত্রে এগিয়ে আছে এই অঞ্চলের আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত দাবিদার দলটি। এই জন্য আরবের সুন্নি মুসলিম এবং তাদের সাথে মিল রেখে উপমহাদেশের যেসব মুসলিম তাদের ধর্ম কর্ম পালন করেন তাদের কাছে উপমহাদেশের "আহলে সুন্নত ওয়াল জামাত" দাবিদার এই দলটি ভ্রান্ত। এবং এই দলের অনুসারীদের তারার বিদাতি বলে সম্বোধন করে।
উপমহাদেশের সুন্নি দাবিদার এই দলটি ধীরে ধীরে প্রতিবেশী ধর্ম হিন্দুর সাথে মিশে যাচ্ছে। তাদের আচার আচরণ বিশ্বাস সবই যেন হিন্দুদের সাথে মিলে যাচ্ছে। কয়েকটি উদাহরণ দিয়েই আমি আমার আলোচনার ইতি টানব ইন্সাআল্লাহ।



উদাহরন ১: সুন্নিদের মাজার ও হিন্দুদের মন্দির!!
আমরা সবাই জানি হিন্দুদের মন্দিরে মূর্তি আছে।
মূলত হিন্দুরা মূর্তি পূজা করেনা বরং তারা এক ঈশ্বরের পূজা করে। মূর্তি কেবল তাদের ইবাদতের উসিলা মাত্র। এই বিষয়টি প্রথম জেনেছিলাম একজন হিন্দু ক্লাসমেটের নিকট থেকে। তাকে যখন প্রশ্ন করেছিলাম, আপনারা মূর্তি পূজা করেন কেন? তখন সে বলেছিল, আপনাদের যেমন মাজার আমাদেরও তেমনি মূর্তি আমরা মূর্তি পূজা করিনা বরং এর উসিলায় এক ঈশ্বরের পূজা করি"
তার এই কথা ঠিক কুরআনে উল্লেখিত মক্কার মুশরিকদের কথার ন্যায় যেখানে আল্লাহ বলেন,
"তারা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যে সবের ইবাদত করে, সেগুলো না তাদের কোন ক্ষতি করতে পারে, আর না উপকার করতে পারে। তখন তারা বলে, এরা আল্লাহর নিকট আমাদের সাফায়াত কারী"...
( আলকুরআন, সূরা ইউনূস, ১০/১৮)
যদি উপরোক্ত আলোচনা টুকু স্বরনে রাখেন, তবে সুন্নিদের মাজার গুলোও একই উদ্দেশ্যে তৈরি, যে উদ্দেশ্যে হিন্দুরা মূর্তি তৈরি করে।
হিন্দুরা যেমন তাদের মন্দিরের মূর্তি গুলোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন উৎসব করে, ঠিক তেমনি সুন্নি নামক এই বিদাতিরা তাদের নির্মিত মাজার গুলোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন উৎসব করে।
হিন্দুরা যেমন মূর্তির উদ্দেশ্যে মানত করে ঠিক তেমনি সুন্নি বিদাতিরা মাজারের উদ্দেশ্যে মানতে করে।
হিন্দুরা যেমন মূর্তির সামনে দেয়া খাবার গুলো তথা প্রসাদ রোগ মুক্তি কিংবা পূণ্যের আশায় খাই, ঠিক তেমনি সুন্নি বিদাতিরা মাজারের সামনে দেয়া পানি কিংবা তাবারুক রোগ মুক্তি কিংবা পূণ্যের আশায় খাই।
হিন্দুরা যেমন মূর্তির উদ্দেশ্যে সিসদাহ করে ঠিক তেমনি বিদাতিরা ও মাজারের কবর গুলোকে সিসদাহ করে। সুন্নি বিদাতিরা হিন্দুদের মত আচরণ করার কারণে বতর্মান সময়ে মাজার গুলোতে হিন্দুদের উপস্থিতি বেড়েই চলছে।
হিন্দুদের মূর্তি পূজার সাথে সুন্নি বিদাতিদের মাজার পূজার এতো সাদৃশ্য দেখে কবি নজরুল যথার্থই বলেছেন,
তাওহীদের এই চির সেবক, ভুলিয়া গিয়েছে সে তাকবীর।
দূর্গা নামের কাছাকাছি প্রায় দর্গায় গিয়ে লুটায় শীর"



উদাহরণ-২: মিলাদুন্নবী ও জন্ম অষ্টমী : মুসলমানদের উৎসব বলতে দুটি উৎসবকে বুঝানো হয়, যা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা নামে পরিচিত। মুসলমানদের নবীর জন্মদিন উপলক্ষে ইসলামে কোন উৎসব ছিলনা। এমনকি মুহাম্মদ (সা) কোন মাসের কত তারিখে জন্মেছে সে ব্যাপারেও কোন বিশুদ্ধ দলিল পাওয়া যায়না। তারমধ্যে জন্ম উৎসব উদযাপনের প্রশ্ন কি করে আসে??
কিন্তুু হিন্দুরা তাদের ধর্মের প্রচারক শ্রীকৃষ্ণের জন্ম উৎসব পালন করে যা জন্ম অষ্টমী নামে পরিচিত।
দূর্ভাগ্যবশত মুসলমান নামদারি সুন্নি বিদাতিরা ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সা) এর জন্ম উৎসব পালন করে যা মিলাদুন্নবী নামে পরিচিত। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, যে নবীর জন্ম তারিখ পর্যন্ত সঠিক জানা নেই, সেই নবীর জন্ম উৎসব পালন জায়েজ বানানোর জন্য কুরআন হাদিস থেকে দলিল দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে!!
সারকথা হলো, হিন্দুদের জন্ম অষ্টমী, খ্রিস্টানদের খ্রিস্ট মাস ডে কিংবা সুন্নি বিদাতিদের মিলাদুন্নবী একই সূত্রে গাথা।



উদাহরণ ৩: জুলুস ও রথ যাত্রা : শহরে বেশ কয়েকবার দেখার সুযোগ হয়েছে হিন্দুদের রথ যাত্রা। যা জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা নামেও পরিচিত। ফুল দিয়ে সাজানো গাড়িতে কিছু মূর্তি সাথে সাউন্ড বক্স অথবা মাইক। এবং গাড়ির সামনে লম্বা দড়ি। যে দড়ি ধরে হিন্দুরা পুরো শহর গোরে।
হিন্দুদের এই ভাবে শহর গোরে আনন্দ উদযাপন করে।
সুন্নি বিদাতিরাও রথযাত্রার মত ১২ রবিউল আওয়ালের দিন ফুল দিয়ে সাজানো গাড়িতে একজন পীর সাথে সাউন্ড বক্স অথবা মাইক। এবং গাড়ির পিছনে লম্বা দড়ি। যে দড়ি ধরে সুন্নি বিদাতিরা পুরো শহর গোরে। যা জুলুস নামে পরিচিত। বর্ণনা লক্ষ্য করুন, কি মিল জুলস ও রথযাত্রার মধ্যে। এইভাবে রাস্তায় রাস্তায় মিছিল করে জুলস উদযাপন করে সুন্নি বিদাতিরা হিন্দুদের রথযাত্রার মতো।
এইভাবে অনেক ক্ষেত্রেই ধীরে ধীরে হিন্দু মুশরিকদের সাথে মিশে যাচ্ছে সুন্নি বিদাতিরা।
এই কারণে কবি নজরুল যথার্থই বলেছেন, "তাওহীদের এই চির সেবক, ভুলিয়া গিয়েছে সে তাকবীর। দূর্গা নামক কাছাকাছি প্রায় দর্গায় গিয়ে লুটায় শীর। ওদের যেমন রাম নারায়ণ, এদের তেমনি মানিক পীর। ওদের চাল ও কলার সঙ্গে, মিশিয়ে গেছে এদের ক্ষীর"
রাসূল (সা) বলেন, যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের সাথে সাদৃশ্য রাখল, সে তাদের অন্তর্ভুক্ত (আবূ দাউদ : ৩৫১৪)।
আল্লাহর বাণী : হে ঈমানদারগণ, তোমরা পরিপূর্ণ ভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের অনুসরণ করোনা। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু ( আলকোরান, সূরা বাকারা, ২০৮)।
ইসলাম ছাড়া অন্যকোন ধর্ম গ্রহণ করলে তা কখনো গ্রহণযোগ্য হবেনা। কিয়ামতের দিন সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে"(আলকুরান, আল ইমরান ৮৫)।
11/12/16

Comments

  1. #একটু চিন্তা করে দেখুন বিবেকবানরা#
    এই নব ঈদ ঈদেমিলাদুন্নবী সত্যি যদি হত,তবে হাদিস গ্রন্ত গুলতে ঈদ অধ্যায়ে অনেক হাদিস পাওয়া যেত যেমনটা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা সম্পরকে পাওয়া যায়।
    এ ঈদেও নামায ও খুতবা থাকত যেমনটা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহায় আছে।
    এ ঈদের কথাও বুখারী,মুসলিম,আবুদাউদ,ইবনে
    মাজাহ,তিরমিযী ইত্যাদি গ্রন্তের মধ্যে থাকত যেমনটা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা সম্পর্কে পাওয়া যায়।
    এ ঈদ সম্পর্কেও মুসলিমদের মধ্যে মতভেদ থাকতনা যেমনটা ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা সম্পর্কে নেই।
    আহ!! খুবই দুঃখের বিষয় এই যে, ইমাম বুখারী,ইমাম মুসলিম,ইমাম আবুদাউদ,ইমাম ইবনে মাজাহ,ইমাম তিরমিযী প্রভৃতি প্রসিদ্ধ হাদিসের ইমামগণ ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা সম্পর্কে প্রায় ১৫-৩০ টি করে হাদিস সংরক্ষণ করেছে।
    কিন্তু সবচেয়ে বড় ,সকল ঈদের সেরা ঈদ জসনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী সম্পর্কে একটি করে হাদিসও সংরক্ষণ করেনি।
    তবে কি তারা,ওহাবি,মউদুদী,লা-মাযহাবী ও নবী বিদ্ধেষী ছিল?
    না আপনারা নবী প্রেমের নামে ভন্ডামী করতেছেন???

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

Application for permission to visit National Museum.

মিলাদুন্নবী ও সূরা আহযাবের 56 নং আয়াত:

ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসন (প্রথম পর্ব)

রাসূল (সা) প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন কেন?

সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (রা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ