ইসলাম সম্পরকে রিমেশ চাকমার প্রশ্নের জবাব!

অমুসলিম ভাই Rimesh Chakma বন্ধু Mohammed Nur ভাইকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন করে। নূর ভাইয়ের ইসলাম সম্পরকে তেমন জ্ঞান না থাকায় আমাকে ইনবক্সে প্রশ্ন গুলো পা্ঠান। এরপর প্রশ্ন গুলোর আল্লাহর দয়ায় আমি দিয়ে দিই। 
ইসলাম ধর্ম নিয়ে প্রশ্নের জবাব

রিমেশ চাকমাঃ মুসলিম ভাই বোনেরা পারলে ঠান্ডা মাথায় উত্তর দিন >>>>আমি ধর্ম নিয়ে কথা বলতে চাই না তবুও আজ বলতে হচ্ছে কারণ তোমরা অনেক সময় অন্য ধর্মের মানুষদের বিভিন্ন মিথ্যা যুক্তি দেখিয়ে প্রশ্ন করো এবার তোমরা তোমাদের ধর্মের ভুলগুলো দেখুন আর অবশ্যই যদি খাঁটি মুসলিম হও যদি  উত্তর দিতেন বুকের পাতা থাকে তাহলে আশা করি নিচের প্রশ্নগুলোর উত্তর ঠিকমত পাবো।আসলে আমি যা সত্তি তাই বলি,
(১) ইসলাম ধর্মে পূনজন্ম নেই অর্থাৎ, একবার পৃথিবী থেকে চলে গেলে আর পৃথিবীতে আসে না তোমাদের আল্লহ নাকি পাপ করলেও শাস্তি দিয়ে তার জমিনে রাখেন।আমার প্রশ্ন এখানে, যদি পুনজন্ম না থাকে তাহলে তোমাদের ধর্মে কেন পঙ্গু মানুষ দেখা যায় আর তোমাদের কেউ কেউ বলে আল্লাহ নাকি অন্য খারাপ লোকদের সৎ পথে নিয়ে আনতে ঐ পঙ্গু মানুষদের বানায় যদি উত্তর এটাই হয় তাহলে তোমাদের আল্লাহ সুষ্ঠু বিচার করে না কারন, পৃথিবীতে জন্মানোর আগে ঐ পঙ্গুর কোনো পাপ ছিল না তাহলে আল্লাহ তাকে এভাবে পৃথিবীতে পাতালো কেন তার মনে হয় না তোমাদের মত ভালোভাবে কথা বলতে, ভালোভাবে হাটতে,দেখতে,খাইতে ইত্যাদি তাহলে তিনি কেন কোনো পাপ না করে এমন শাস্তি পেয়েছেন? তাহলে  তোমাদের আল্লাহকে যদি কোনো একজন খুনি বলে, আল্লাহ তুমি ওই সৎ ব্যক্তিকে মেরে পেল যদি তাকে মার তাহলে আমি আর খারাপ কাজ করব না তখন আল্লাহ কী ওই সৎ ব্যক্তিকে মেরে দেবেন? উত্তর দিন
বিদ্র: (রাগ করবেন না তোমাদের ধর্মের ভুলগুলো দেখিয়ে দিলাম।আর বলে রাখি কারোর মাথার ময়লা না দেখে নিজেরটা আগে দেখ।  আমি কিন্তু বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী)
সাঙমাগুন মরে এক্কা বল দু দে।

প্রশ্ন : দুনিয়ায় অনেক মানুষ বধির, বোবা, অন্ধ ও পঙ্গু হয়ে জন্মে। যদি এইটা তাদের পূর্বজন্মের পাপের কারণে না হয়, তবে আল্লাহ কেন তাদের এই শাস্তি দিল? তাদের কি কথা বলতে, শোনতে, দেখতে কিংবা হাটতে ইচ্ছা হয়না? তাদের প্রতি কি আল্লাহ জুলুম করেননি?

(1) নং প্রশ্নের জবাবঃ
উত্তরঃ যারা পুনর্জন্মে বিশ্বাস করে তাদের ধারণা, প্রত্যেক মানুষ তার কর্মের ভিত্তিতে দুনিয়ায় পুনরায় ফিরে আসবে। যেমন, কেউ পুর্ব জন্মে ভাল কাজ করলে পরের জন্মে মানুষ হয়ে জন্মাবে এবং সুখে শান্তিতে বসবাস করবে। আর খারাপ কাজ করলে পরের জন্মে বধির, বোবা, অন্ধ, বানর, কুকুর, হাতি ইত্যাদি হয়ে জন্মাবে।
তাদের এই ধারণা অনুসারে তাদেরকে প্রশ্ন করুন, পৃথিবীর মধ্যে ভাল মানুষের সংখ্যা বেশি নাকি খারাপ মানুষের সংখ্যা বেশি। যদি বলে খারাপ মানুষের সংখ্যা বেশি, তাহলে পুনরায় জিজ্ঞাসা করুন বর্তমান পৃথিবীতে মানুষ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে নাকি কমে যাচ্ছে? যদিও তাদের পুনর্জন্ম ধারণা অনুসারে মানুষ কমে যাওয়ার কথা এবং বেশিরভাগ মানুষ বধির, বোবা, অন্ধ অথবা পঙ্গু হওয়ার কথা।
উপরোক্ত আলোচনায় পুনর্জন্মবাদ ধারণাটি যে ভুল তা প্রমাণ হলো।
এইবার এর পরের প্রশ্ন হলো, আল্লাহ কেন কিছু মানুষদের বোবা, বধির, অন্ধ ইত্যাদি করে পাঠান?
উত্তর : আল্লাহ এই দুনিয়া সৃষ্টি করেছেন, মানুষও পাঠিয়েছেন। কিন্তুু তার সৃষ্টির মধ্যে রয়েছে বৈচিত্র্য।  একটু চিন্তা করুন দুনিয়ার কোথাও উচুঁ আবার কোথাও নিচু অথবা সমতল। আবার মানুষের মধ্যে কেউ সাধা, কেউ কালো, কেউ লম্বা, কেউ খাটো, কেউ সুস্থ, কেউ অসুস্থ। কেউ গরীব আবার কেউবা ধনী। আর আল্লাহ তার দুনিয়া এইভাবে সাজিয়েছেন যাতে দুনিয়ার ভারসাম্য ঠিক থাকে। 
এখন আপনি যদি প্রশ্ন করেন, আল্লাহ উচুঁ পাহাড় সৃষ্টি করেছেন কেন? আল্লাহ সবাইকে সুস্থতা দেননি কেন? সাগরের সব পানি লোনা কেন? ইত্যাদি, ইত্যাদি। তবে ধরেই নিবেন আপনার বিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান নেই। 
ইসলাম ধর্মে পুনর্জন্ম নেই বরং পরকাল আছে। কোন মানুষ যদি দুনিয়াতে পাপ কর্ম করে, তবে তার জন্য দুনিয়াতে সাময়িক শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু তার আসল শাস্তি হবে পরকালে। এটাই বিবেকের দাবি!
ধরুন কেউ একজন ১০০ মানুষ হত্যা করেছে। তার বিনিময়ে তাকে ফাসিঁ দেয়া হলো। এইবার বলুন একজনের প্রাণের বিনিময় একশত মানুষের প্রাণ এইটা সমান বিচার হলো?
যেহেতু সে ১০০ শত মানুষ হত্যা করেছে সেহেতু তাকে ১০০ বার ফাসিঁ দেয়া উচিত নয় কি?
আর এইটা কি দুনিয়ার জীবনে সম্ভব?

(২) রিমেশ চাকমাঃ তোমরা সবসময় বলেন আমরা বৌদ্ধরা আর হিন্দুরা নাকি নিজে মূর্তি বানিয়ে নিজেরা পূজা করি অর্থাৎ, আমরা সৃষ্টি করি আমরা তাকে পূজা করি এইটা নাকি মূর্খের ধর্ম তাহলে তোমাদের আল্লাহ কয়টা কুরআন পৃথিবীতে রেখে গেছেন অবশ্যই একটা তাহলে সেখান থেকে কোটি কোটি কুরআন সৃষ্টি হলো কি করে ঐগুলো তো মানুষের বানানো কাগজ দিয়ে তৈরি করা, তোমাদের বানানো খালি দিয়ে তৈরি তাহলে তোমরা কেন কুরআনকে মান্য করো? তাহলে আমাদের ধর্ম যদি মূর্খের ধর্ম হয় তোমাদের ধর্ম কীসের ধর্ম হবে অবশ্যই  আমাদের ধর্মের চেয়েও অধম উত্তর দিন?

(2) প্রশ্নের জবাব :
উত্তর : মূর্তি তৈরি করে তার পূজা করা আর একটি কুরআন থেকে লক্ষ লক্ষ কুরআন তৈরি করে সেটাকে মান্য করা একই বিষয় নয়। কুরআন* আমরা দেখেছি, তাই সেটাকে দেখে লক্ষ লক্ষ কুরআন তৈরি করার সুযোগ পেয়েছি এবং সেটাকে মেনে প্রকৃত সৃষ্টিকর্তার সন্ধান* পেয়েছি। কিন্তু আল্লাহকে কে দেখেছে,  যে দেখে দেখে আল্লাহর মূর্তি তৈরি করেছে? না কেউ দেখিনি। সুতরাং না দেখে কারও কাল্পনিক মূর্তি তৈরি করে তার পূজা করব এমন মূর্খ আমরা নয়। এই কাল্পনিক কাজ তারাই করতে পারে যাদের ধর্মটাই কাল্পনিক এবং যাদের মনমানসিকতা কল্পনার সাথে সম্পর্কযুক্ত বাস্তবতার সাথে নয়। তাছাড়া, মানুষ যে মূর্তি গুলো বানায় তা কি জীবন্ত মানুষ অপেক্ষা সুন্দর? সৃষ্টিকর্তা কি এমন অসুন্দর হতে পারে?
সৃষ্টিকর্তা কর্তা কি সৃষ্টির সাদৃশ্য হতে পারে?
সাদৃশ্য হলেও কি সৃষ্টি অপেক্ষা অসুন্দর হতে পারে? দুনিয়ার জগতে কেউ যদি কোন সম্মানিত মানুষের এতো অসুন্দর করে মূর্তি ছবি বানাই তা যদি শাস্তিযোগ্য কাজ হয়, তবে যারা সৃষ্টিকর্তার অসুন্দর ছবি ও মূর্তি বানাই তাদের শাস্তি কি হওয়া উচিত? 
সৃষ্টিকর্তা অবশ্য কেমন সেটা তিনিই ভাল জানেন।
*কুরআন আমাদের পূর্বপুরুষ শোনেছেন। আর শোনা জিনিস লেখা যায়। বাট অদেখা জিনিস না দেখে অংকন করা যায়না। যতই অংকন করেনা কেন তা হবে কাল্পনিক। গৌতম বৌদ্ধ মানুষ তিনি অবশ্য স্রষ্টা নন। গৌতম বৌদ্ধ নিজে কখনো তার মূর্তি তৈরির কথা বলেননি। বল্লে প্রমাণ দিন।
You sent April 18, 2017
*সন্ধান বলতে এইরূপ কিছুই নয় যে তাকে দেখতেও হবে। সন্ধান বলতে তার অস্তিত্ব অনুভব করেছি যে, অবশ্যই আল্লাহ আছেন। কুরআন তার দলিল।

(৩) রিমেশ চাকমাঃ তোমরাই হিন্দু ভাইবোনদের বলো রাম নাকি ভগবান হয়েও অপারক, শক্তিহীন,অন্যের সাহায্য নিতে হয়,অর্থাৎ সে নাকি রাবন এর চেয়ে শক্তিহীন কারণটা হলো এটাই যে রাবন রামের তুলনায় অনেক তাড়াতাড়ি লঙ্কায় পৌঁছাতে পারে তাও আবার হনুমানের সাহায্য নিয়ে, এখানে প্রশ্ন হলো যদি রাম অপারক হয় তাহলে তোমাদের আল্লাহও অপারক, শক্তিহীন কারণ তোমাদের আল্লাহওতো নারি পুরুষ সারা মানুষ বানাতে পারে না তারও মানুষের সাহায্য নিতে হয় আর যদি সাহস থাকে, শক্তি থাকে নারি পুরুষের সাহায্য ছাড়া মানুষ বানিয়ে দেখাক, এখানে প্রশ্ন হলো তোমরা তাহলে কেন বল আল্লহ সর্ব শক্তিমান? উত্তর দিন
(3) প্রশ্নের জবাব :
উত্তর : আল্লাহ নারী পুরুষের মিলন ছাড়া মানুষ বানাতে পারেনা এমন প্রশ্ন নাস্তিকদের আস্তিকদের নয়। অথচ একজন আস্তিক এই প্রশ্ন করেছে যে কিনা হিন্দু বা বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী। 
রাম বা কৃষ্ণ নারী পুরুষ ছাড়াই কোন মানুষ বানাতে পারার উদাহরণ হিন্দু বা বৌদ্ধ ধর্ম গ্রন্থ থেকে দিতে পারেনি বলে ইসলাম ধর্ম গ্রন্থ থেকে আল্লাহর এই ক্ষমতার উদাহরণ দিতে পারবোনা সে ধারণা একেবারেই ভুল।
ইসলাম ধর্ম গ্রন্থে আদম ও হাওয়া (আ) নামক যে প্রথম মানুষদের কথা বলা হয়েছে তাদেরকে আল্লাহ নারী পুরুষের সাহায্য ছাড়াই সৃষ্টি করেছেন।
শুধু কি তাই আল্লাহ যে, ইচ্ছা করলে পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই মানুষ সৃষ্টি করতে পারেন তার উদাহরণ ঈসা (আ)। আল্লাহ যে বন্ধা নারী থেকে সন্তান উৎপাদন করতে পারেন তার উদাহরণ জাকারিয়া (আ) এর স্ত্রী। অতএব ইসলাম ধর্মের আল্লাহ যে সব কিছুই করার ক্ষমতা রাখে তা বেদে উল্লেখ না থাকলেও কুরআনে উল্লেখ আছে।

রিমেশ চাকমার রিকমেন্ট


Abubakar Siddiq
17 April 2017


Comments

Popular posts from this blog

Application for permission to visit National Museum.

মিলাদুন্নবী ও সূরা আহযাবের 56 নং আয়াত:

ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসন (প্রথম পর্ব)

রাসূল (সা) প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন কেন?

সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (রা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ