বিশেষ ব্যক্তিদের নামের শেষে সাঃ আঃ রাঃ রহঃ হাফিঃ দোয়া সূচক বাক্যের ব্যবহার ব্যক্তি ভেদে ভিন্নতা কেন?।

বিশেষ ব্যক্তিদের নামের শেষে দোয়া সূচক বাক্য সমূহ সুন্নী ইসলামে একটি বিশেষ ধারায় ব্যবহার হয়ে থাকে। অর্থাৎ সম্মান ও মর্যাদা ভেদে তারা দোয়া সূচক শব্দ সমূহ একেক মর্যাদার মানুষের একেকটি ব্যবহার করে থাকেন।

নামের পর দোয়া সূচক বাক্য সাঃ আঃ রাঃ রহঃ হাফিঃ ব্যবহার।

যেমনঃ নবী মুহাম্মদের নামের পর বলা হয় (সাঃ), অন্যান্য নবী ও ফেরেশতাদের নামের পরে বলা হয় (আঃ) সাহাবীদের নামের পর বলা হয় (রাঃ) সর্বশেষ অন্যান্য নেককার বান্দা যেমন, তাবেঈ, তাবে তাবেঈ, ফকিহ, মুহাদ্দেসদের নামের পর বলা হয় (রহঃ)। এছাড়াও সাধারণ জীবিত মুসলিমদের নামের পরে বলা হয় (হাফিঃ)।
এই কথা সত্য যে অর্থগত দিক বিবেচনা করলে সবার নামের পর ইচ্ছা মতো যেকোন একটা বলা দোষের কিছু নেই তবুও সুন্নি ইসলাম তাদের মরযাদায় ভিন্নতার কারণে দোয়া সূচক শব্দের ব্যবহারে ভিন্নতাকে পছন্দ করেছে। সেই সালাফদের মধ্যে থেকে এই ধারা অব্যাহত আছে। আমিও (লেখক) তাতে একমত।
দুনিয়ার সকল সুন্নী বিশেষজ্ঞ এই বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করেন।
তবে শিয়াদের ক্ষেত্রে ভিন্নতা দেখা যায়, যেমন আমরা (সুন্নিরা) পূর্বের সকল নবীদের নামের পর (আঃ) বাক্যটি লিখি। কিন্তু শিয়ারা তাদের ইমাম ও আহলে বাইতের সকল সদস্যদের নামের পর (আঃ) ব্যবহার করে থাকেন।
যে কারণে তারা নবী নাকি সাহাবী সেটা প্রশ্নবিদ্ধ হয় সাধারণ পাবলিকের ক্ষেত্রে। সম্ভবত সুন্নী ইসলামের ফকিহরা এই কারণেই দোয়া সূচক বাক্য সমূহ সম্মান ও মরযাদার ভিত্তিতে ভিন্নতাকে পছন্দ করেন। অন্যতায় সবার মর্যাদায় সাধারণ মুসলিম তালগোল পাকিয়ে ফেলবেন।
আমার এই পোস্ট লেখার কারণ ছিল আমাদের দেশে কথিত সুন্নী তথা মাজার পুজারীদের কিছু কিছু গ্রুপ কথিত অলি বুজুরগদের নামের শেষে (আঃ) বা (রাঃ) লিখে থাকেন। যে দোয়া দুটি আমরা সুন্নীরা যথাক্রমে পূর্বের নবী ও সাহাবীদের নামের শেষে ব্যবহার করে থাকি। সম্ভবত অতিরিক্ত ও অতিরঞ্জিত ভক্তি থেকেই এই কাজটি করেছেন। অথচ সালাফদের মাযহাব থেকে যতই বিচ্যুত হবো ততই ভ্রান্তি ও ফেরকার মধ্যে জড়িয়ে পড়ব।


কথিত পীর বা আউলিয়ার নামের পর রাদিয়াল্লাহু আনহু লেখা, নামের পর দোয়া সূচক বাক্যের ব্যবহার সাঃ আঃ রাঃ রহঃ হাফিঃ
কথিত পীর বা আউলিয়ার নামের পর রাদিয়াল্লাহু আনহু লেখা
কথিত পীর বা আউলিয়ার নামের পর রাদিয়াল্লাহু আনহু লেখা, নামের পর দোয়া সূচক বাক্যের ব্যবহার সাঃ আঃ রাঃ রহঃ হাফিঃ
কথিত পীর বা আউলিয়ার নামের পর রাদিয়াল্লাহু আনহু লেখা

কিছু দোয়া সূচক বাক্যের সংক্ষিপ্ত ও পূর্ণ রূপ এবং অর্থঃ
(সাঃ) সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অর্থ তার উপর সালাত ও শান্তি বর্ষিত হৌক।
(আঃ) আলাহিস সালাম অর্থ তার উপর শান্তি বর্ষিত হৌক।
(রাঃ) রাদিয়াল্লাহু আনহু অর্থ তার উপর আল্লাহ রাজি হৌক।
(রহঃ) রাহেমাহুল্লাহ অর্থ তার উপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হৌক।
(হাফিঃ) হাফেজাহুল্লাহ অর্থ আল্লাহ তাকে হেফাজত করুক।
আল্লাহ আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুক- আমিন।
লেখকঃ আবুবকর সিদ্দিক
11/02/2022

Comments

Popular posts from this blog

Application for permission to visit National Museum.

মিলাদুন্নবী ও সূরা আহযাবের 56 নং আয়াত:

ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসন (প্রথম পর্ব)

রাসূল (সা) প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন কেন?

সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (রা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ