হাদিসের নামে রাসূল সাঃ এর শানে প্রচলিত কথা গুলোকে কুরআন দিয়ে যাচাই করুন।

💚❤️ হাদিসের নামে রাসূল সাঃ শানে প্রচলিত কথা গুলোকে কুরআন দিয়ে যাচাই করুন। ❤️💚

আর যদি কুরআনের বিরুদ্ধে যায়, সাথে সাথেই তা পরিত্যাগ করুন। কেননা কুরআন হচ্ছে সত্য মিথ্যা যাচাইয়ের উত্তম মানদন্ড!
شَہۡرُ رَمَضَانَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ فِیۡہِ الۡقُرۡاٰنُ ہُدًی لِّلنَّاسِ وَ بَیِّنٰتٍ مِّنَ الۡہُدٰی وَ الۡفُرۡقَانِ ۚ
রমযান মাস, যাতে কুরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। (Al-Quran: 2/185)
হাদিসের ব্যাপারটা হলো, কেউ সহীহ্ বলছে আবার কেউ জয়িফ বলছে। অথবা কেউবা নিজের বক্তব্যকে হাদিসের নামে চালিয়ে দিচ্ছে।
ধরুন, এইরকম হাদিস প্রতিদিন সামনে আসতেছে।
তাহলে আপনার জন্য এখন কি করা সহজ?
👉 আপনি কি অন্ধভাবে মেনে নিবেন?
👉 আপনি কি প্রতিদিন রেফারেন্স খুঁজবেন?
👉 আপনি কি হাদিস সহীহ্ কিনা যাচাই করবেন?
👉 আপনি কি কোন কোন মুহাদ্দিস সহীহ বলেছেন সেটা জানার চেষ্টা করবেন?
👉 আপনি কি সব মুহাদ্দিসের বক্তব্য জানতে পারবেন?
👉 প্রতিদিন কি আপনি এইরকম হাদিস চেক করবেন?
👉 এইসব কি আপনার দ্বারা সহজ ও সম্ভব?
না এইসব আপনার আমার কারও দ্বারা সম্ভব না।
আপনার আমার জন্য যেটা সহজ ও সম্ভব!
আমরা যখনই কুরআন পড়ব বুঝে পড়ব।
এরপর যেকেউ হাদিস বরণনা করলে সহীহ্ কি না তা সহজেই জানতে পারব।

উদাহরণঃ ১।
কেউ আপনাকে বল্ল, রাসূল সাঃ মারা যায়নি, এই বিষয়ে সহীহ হাদিস আছে!
তখন আপনি যদি কুরআন বুঝে পড়ে থাকেন, তবে সহজেই বুঝতে পারবেন, এই লোকটা মিথ্যা বলছে।কেননা কুরআনে একাধিক আয়াত আছে প্রত্যেক প্রাণী মরণশীল। রাসূল সাঃও মারা যাবেন। ref: quran-3/185, 3/144, 39/30
বিস্তারিত পড়ুন Death
উদাহরণঃ ২।
কেউ বল্ল, রাসূল সাঃ গায়েব জানেন, এই বিষয়ে সহীহ হাদিস আছে!
তখন আপনি যদি কুরআন বুঝে পড়ে থাকেন, তবে সহজেই বুঝতে পারবেন, এই লোকটা মিথ্যা বলছে। কেননা কুরআনেই বলা হয়েছে আল্লাহ ছাড়া আর কেউ গায়েব জানেনা। আল্লাহ তার নবীদের প্রয়োজন মাফিক গায়েবের বিষয়ে জানান। ref: quran-6/50, 6/59
বিস্তারিত পড়ুন invisible
উদাহরণঃ ৩।
কেউ একজন বল্ল, রাসূল সাঃ মানুষ নন। এই বিষয়ে সহীহ হাদিস আছে। তখন আপনি যদি কুরআন বুঝে পড়ে থাকেন, তবে সহজেই বুঝতে পারবেন, এই লোকটা মিথ্যা বলছে। কেননা কুরআনে মুহাম্মদ সাঃ যে একজন মানুষ সেটা অনেকবার বলা হয়েছে। ref: quran-17/94, 18/110
বিস্তারিত পড়ুন Human
উদাহরণঃ ৪।
কেউ যদি বলে, নবীজি সাঃ বলেছেন, তিনি কিয়ামতের মাঠে উম্মতদের ছাড়া জান্নাতে প্রবেশ করবেনা!
তখন আপনি যদি কুরআন বুঝে পড়ে থাকেন, তবে সহজেই বুঝতে পারবেন, এই লোকটা মিথ্যা বলছে। কেননা, কুরআনের একাধিক আয়াত আছে, প্রত্যেক ব্যক্তিই তার নিজের বোঝা নিজেই বহন করবে। কেউ যদি অনু পরিমাণ ভালো কাজ করে, তাকে তার প্রাপ্য দেয়া হবে। কেউ যদি অনু পরিমাণ মন্দ কাজ করে, তাকেও তার প্রাপ্য দেয়া হবে। কারও উপর জুলুম করা হবেনা। মুহাম্মদ সাঃ কেন অপরাধীদের জন্য আল্লাহর কাছে বিতর্ক করবে? কেন অপরাধীদের পক্ষ হয়ে কথা বলবেন? তিনি কি তার দায়িত্ব পালন করে যায়নি? অবশ্যই তিনি তার দায়িত্ব তিনি পালন করেছেন। এরপর আমাদের হিসাব আমাদেরকেই দিতে হবে।
وَ لَا تَکۡسِبُ کُلُّ نَفۡسٍ اِلَّا عَلَیۡہَا ۚ وَ لَا تَزِرُ وَازِرَۃٌ وِّزۡرَ اُخۡرٰی
আর প্রতিটি ব্যক্তি যা অর্জন করে, তা শুধু তারই উপর বর্তায় আর কোন ভারবহনকারী অন্যের ভার বহন করবেনা।
Al-Quran: 6/164, ১৭/১৫, ৩৫/১৮, ৩৯/০৭, ৫৩/৩৮, ৯৯/৭-৮

উদাহরণঃ ৫।
কেউ যদি বলে, রাসূল সাঃ আমাদের জন্য সুপারিশ করবেন।
তখন আপনি যদি কুরআন বুঝে পড়ে থাকেন, তবে সহজেই বুঝতে পারবেন, এই লোকটা মিথ্যা বলছে। কোরানে এই ধরনের কথা বলা হয়নি যে, রাসূল সাঃ তার উম্মতগণের জন্য সুপারিশ করবেন। কুরআনে যেটা বলা হয়েছে, আখিরাতে কোন সুপারিশকারীর সুপারিশ গ্রহণ করা হবেনা, যাদের তারা নিজেরাই সুপারিশকারী মনে করত। তবে আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছে করেন, তার জন্যই জান্নাতিদের কাউকে সুপারিশ করার অনুমতি দেবেন। এটাতো আল্লাহ কাউকে নিরদিষ্ট করে দেননি। তাহলে কুরআনের বাহিরে গিয়ে আল্লাহর রাসূল সাঃ কি এটা নিজের জন্য নিরদিষ্ট করতে পারেন?
وَٱتَّقُواْ يَوۡمٗا لَّا تَجۡزِي نَفۡسٌ عَن نَّفۡسٖ شَيۡـٔٗا وَلَا يُقۡبَلُ مِنۡهَا شَفَٰعَةٞ وَلَا يُؤۡخَذُ مِنۡهَا عَدۡلٞ وَلَا هُمۡ يُنصَرُونَ
"আর সে দিনের ভয় কর, যখন কেউ কারও সামান্য উপকারে আসবে না এবং কারও পক্ষে কোন সুপারিশও কবুল হবে না; কারও কাছ থেকে ক্ষতিপূরণও নেয়া হবে না এবং তারা কোন রকম সাহায্যও পাবে না"
(Al-Baqarah, Ayah 48)
ref: al-quran, 2/123, 2;254
আশা করি এই পাঁচটি উদাহরণ আপনার বুঝার জন্য যথেষ্ট হবে। আমি আমার সংক্ষিপ্ত আলোচনায় কোন জটিলতার আশ্রয় গ্রহণ করেনি। কেননা আমার ইচ্ছা আপনারা সহজেই বুঝুন। তাই কোন রকম জটিলতা ছাড়াই সহজভাবেই আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
তাতে যা বুঝানোর চেষ্টা করেছি তা হলোঃ
কুরআনকে ভালো করে পড়ুন, বুঝুন এবং জানুন। এরপর কুরআনের বিপরীত যেকোন কথাকেই পরিত্যাগ করুন। কেননা কুরআনের বিপরীতে কোন কথা আল্লাহর রাসূল সাঃ বলেনি, বলবেওনা। এইটা তার দ্বারা অসম্ভব। অতএব, রাসূল সাঃ এর নামে যতো কুরআন বিরোধী হাদিস পাবেন তা পরিত্যাগ করবেন৷

আল্লাহর বাণীঃ
وَ قُلۡ جَآءَ الۡحَقُّ وَ زَہَقَ الۡبَاطِلُ ؕ اِنَّ الۡبَاطِلَ کَانَ زَہُوۡقًا
আর বল, ‘সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল’।
(Al-Quran: 17/81)

وَ لَا تَلۡبِسُوا الۡحَقَّ بِالۡبَاطِلِ وَ تَکۡتُمُوا الۡحَقَّ وَ اَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ
আর তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করো না এবং জেনে-বুঝে হককে গোপন করো না। (Al-Quran: 2/42)

❤️ পরিশেষে আমার সকল ভাল কাজই আল্লাহর জন্য।
✍️ আবুবকর সিদ্দিক। 30/05/2022

Muhammad Mohammad Mohammed
হাদিসের নামে রাসূল সাঃ এর শানে প্রচলিত কথা গুলোকে কুরআন দিয়ে যাচাই করুন।

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

Application for permission to visit National Museum.

মিলাদুন্নবী ও সূরা আহযাবের 56 নং আয়াত:

ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসন (প্রথম পর্ব)

রাসূল (সা) প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন কেন?

সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (রা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ