হাদিসের দোহাই দিয়ে রাসূল সাঃ শানে প্রচলিত আজগুবি, বিভ্রান্তিকর ও শিরকী কথা বলার আগে কুরআনের আয়াত দিয়ে তা যাচাই করুন

❤️❤️❤️ Bismillahir Rahmanir Raheem ❤️❤️❤️ 

হাদিসের দোহাই দিয়ে রাসূল সাঃ শানে প্রচলিত আজগুবি, বিভ্রান্তিকর ও শিরকী কথা বলার আগে কুরআনের আয়াত দিয়ে তা যাচাই করুন ✋ 

উযাইর (রহঃ) ছিলেন ইহুদিদের মধ্যে একজন নেককার আল্লাহর বান্দাহ! তার শান বাড়াতে গিয়ে শেষপর্যন্ত ইহুদিরা তাকে আল্লাহর পুত্র বলে ঘোষণা করেছিল। (নাউজুবিল্লাহ)। 
ঈসা (আঃ) ছিলেন, খ্রিস্টানদের নবী। এবং মরিয়ম (আঃ) ছিলেন ঈসা (আঃ) এর মা। বলা যায় ঈসা (আঃ) এর জন্মটা ছিল অলৌকিক নিরদশন। খ্রিষ্টান সম্প্রদায় "আদম ও হাওয়া আঃ আল্লাহ তাদের পিতা মাতার ঔরস ছাড়াই সৃষ্টি করেছিল" এই কথা বিশ্বাস করলেও ঈসা আঃ যে মানুষ ও আল্লাহর বান্দাহ, এই কথাটি তারা তা বিশ্বাস করতে চাইনা। খ্রিস্টানরা মনে করে যে, মরিয়ম আঃ ও ঈসা আঃ যদি মানুষ হন তাতে তাদের (মরিয়ম ও ঈসা) সম্মান ও মরযাদা কমে যাবে। এই ধ্যানধারণা থেকেই তারা তাদের ভ্রান্ত বিশ্বাসে অনড় থাকে।
এই হলো আহলে কিতাবিদের ধ্যানধারণা। 

এইবার আসি #উম্মতি_মুহাম্মদীর ধ্যানধারণা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করিঃ
মুহাম্মাদ সাঃ ও আব্দুল কাদের জীলানি রহঃ ও অলিদের সম্পর্কে আমাদের কথিত সুন্নীদের ধ্যানধারণাও প্রায় একই অবস্থানে রয়েছে।
তারাও নবী ও বিভিন্ন আউলিয়াদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্য এমন সব কথা বলে, যা শিরক ও বাড়াবাড়ি। বরতমান সময়ে মুসলিম উম্মাহর মধ্যে এই রোগটি ধারুন ভাবে বিস্তার লাভ করেছে। যা মুসলমানদের ঈমান আক্বিদার জন্য অত্যন্ত বিপদজনক। অতএব, আমাদের সবাইকে রাসূল সাঃ এর শানে কুরআন নির্ভর কথা বলা সময়ের দাবি। রাসূল সাঃ এর শান নিয়ে বরণিত হাদিস গুলোকেই তারা তাদের বিভ্রান্তির মূখ্য হাতিয়ার বানাচ্ছে। আমি দেখেছি, রাসূল সাঃ এর শানে বরণীত অধিকাংশ হাদিসই কুরআনের স্পষ্ট আয়াতের বিপরীতে যায় অথবা এক হাদিস অপর হাদিসের বিপক্ষে।
হাদিস বিশারদগণ এইসব নিয়ে তেমন গুরুত্ব দেয়নি। তারা কুরআনের বিপক্ষে বরণীত হাদিস গুলোকে বাতিল ঘোষণা না করে বরং সমন্বয় করার চেষ্টা করেছে। যা ছিল তাদের মানবীয় দূরবলতার বহিঃপ্রকাশ অথবা তারা হাদিস গুলোকে বাতিল ঘোষণা করতে ভয় করতেন।
কিন্তু তাদের এইসব সংকলিত কুরআন বিরোধী জাল হাদিস গুলো আজ মুসলমানদের ঈমান ও আক্বিদার জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে।
সাহাবীগণ (যারা জ্ঞানী ও প্রথম সারীর) কুরআনের বিপক্ষে যেকোন কথাকে বরজন করতেন। তাদের মধ্যে কেউ যখন রাসূল সাঃ শান নিয়ে কথা বলতেন, তখন তারা কুরআন দিয়েই কথা বলতেন। 

দুটি উদাহরণ দিয়েই বিষয়টি বুঝাচ্ছিঃ 

উদাহরণ - ১/ 
কিছু সাহাবীগণ যখন রাসূল সাঃ আল্লাহকে দেখেছেন কি দেখেনাই এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিল, এই বিষয়টি আয়শা রাঃ কানে আসলে তিনি তা সরাসরি অস্বীকার করে বলে উঠল, যে বলিবে মুহাম্মদ সাঃ তার প্রভুকে দেখেছে, সে যেন আল্লাহর শানে অপবাদ দিল। এরপর তিনি সূরা আনামের ১০৩ আয়াত পাঠ করেন। একটু লক্ষ্য করুন, যদি আয়শা রাঃ থেকে এই বিষয়ে স্পষ্ট বক্তব্য না আসত, তবে হাদিস বিশারদ ও ইসলামী চিন্তাবিদগণ কুরআনের বিপরীত অন্যান্য সাহাবীদের কথাকে গুরুত্ব দিত যা আমরা অন্যান্য বিষয়ে দেখতে পাই।
এই বিষয়ে হাদিসটি লিংকে দেখুনঃ
উদাহরণ - ২/
মুহাম্মদ সাঃ মৃত্যুর পর অনেক সাহাবীগণ তা বিশ্বাস করতেছিলনা। এমনকি ইসলামের অন্যতম খলিফা ও রূঢ় ব্যাক্তি হযরত উমর রাঃ ঘোষণা দিলেন, যে বলিবে মুহাম্মদ মারা গেছেন, তার গরদান কেটে নেব।
এই মূহুর্তে হযরত আবুবকর রাঃ এসে জনসম্মুখে ঘোষণা দিলেন, যারা মুহাম্মাদের ইবাদত করত তারা জানুক যে মুহাম্মদ মারা গেছেন, আর যারা আল্লাহর ইবাদত করে তারা জানুক যে আল্লাহ অমর ও অবিনশ্বর। এরপর তিনি সূরা আল ইমরানের ১৮৫ ও ১৪৪ নং আয়াত এবং সূরা যুমারের ৩৯ঃ৩০ নং আয়াত  তিলাওয়াত করেন।
👉 এই বিষয়ে হাদিসটি লিংকে দেখুনঃ https://abubakarnetwork.blogspot.com/2022/04/blog-post_29.html
👉 এই বিষয়ে আমার বিস্তারিত লেখা লিংকে দেখুনঃ 

এবার ভেবে দেখেছেন কি, যদি হযরত আবুবকর রাঃ কুরআনের আয়াত দিয়ে বক্তব্য না দিতেন, অথবা তার এই বক্তব্য আমাদের কাছে না পৌঁছাত, তবে অধিকাংশ মুসলিম কুরআনের বিপরীতে হযরত উমর রাঃ এর কথাকে বিশ্বাস করত। অর্থাৎ আল্লাহর মতোই মুহাম্মদ সাঃ কে অমর ও অবিনশ্বর মনে করত। নাউজুবিল্লাহ!
উপরের দুটি উদাহরণ ছিল সাহাবিদের মধ্যে থেকে যারা কুরআন সম্পর্কে জ্ঞান রাখতেন এবং যারা রাসূল সাঃ এর একান্ত কাছের সাহাবিদের মধ্যে অন্যতম। 
যাদের বিবেক আবেগ দিয়ে ডাকা ছিলোনা।
উল্লেখ্য কুরআন থেকে এবং সাহাবিদের থেকে স্পষ্ট কথা থাকা সত্ত্বেও অনেক কথিত নবী প্রেমিক রাসূল সাঃ জীবিত, মারা যায়নি, তা প্রমাণের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। 

এবার আসি কুরআন বিরোধী সহীহ্ হাদিসের কথায় যেসকল হাদিসের ব্যাপারে কোন সাহাবিদের এইভাবে কুরআনের আয়াত দিয়ে প্রতিবাদ করেনি বা যা আমাদের কাছে পৌছেনি তার থেকে দুটি উদাহরণ দেখি।

উদাহরণ ১/
একাধিক সহীহ্ হাদিসে আছে মহানবী সাঃ কিয়ামতের মাঠে তার উম্মতদের সাফায়াত করবেন। মুসলিম উম্মাহর মাঝে এই বিশ্বাস বদ্ধমূল হয়ে আছে। অথচ এই কথাটি শুধুমাত্র কুরআনে উল্লেখ নাই তা নয়। বরং কুরআনে এর বিপরীতে অসংখ্য আয়াত আছে। যারা কুরআনের পাঠক হয়তো তারা এই বিষয়ে আয়াত গুলো পড়েছেন। কিন্তু এই আয়াত গুলো অধিকাংশ মুসলিম মাথায় না নিয়ে হাদিস নির্ভর হয়ে এর বিপরীতে আক্বিদাহ পোষণ করে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
আসুন জেনে নিই কুরআনে সাফায়াত বিষয়ে কি বলা আছে? আল্লাহ বলেন,
وَٱتَّقُواْ يَوۡمٗا لَّا تَجۡزِي نَفۡسٌ عَن نَّفۡسٖ شَيۡـٔٗا وَلَا يُقۡبَلُ مِنۡهَا شَفَٰعَةٞ وَلَا يُؤۡخَذُ مِنۡهَا عَدۡلٞ وَلَا هُمۡ يُنصَرُونَ 
"আর সে দিনের ভয় কর, যখন কেউ কারও সামান্য উপকারে আসবে না এবং তার পক্ষে কোন সুপারিশও কবুল হবে না; কারও কাছ থেকে ক্ষতিপূরণও নেয়া হবে না এবং তারা কোন রকম সাহায্যও পাবে না" (Al-Baqarah, Ayah 48)
وَٱتَّقُواْ يَوۡمٗا لَّا تَجۡزِي نَفۡسٌ عَن نَّفۡسٖ شَيۡـٔٗا وَلَا يُقۡبَلُ مِنۡهَا عَدۡلٞ وَلَا تَنفَعُهَا شَفَٰعَةٞ وَلَا هُمۡ يُنصَرُونَ
"তোমরা ভয় কর সেদিনকে, যে দিন এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তি বিন্দুমাত্র উপকৃত হবে না, কারও কাছ থেকে বিনিময় গৃহীত হবে না, কার ও সুপারিশ ফলপ্রদ হবে না এবং তারা সাহায্য প্রাপ্ত ও হবে না" (Al-Baqarah, Ayah 123)
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَنفِقُواْ مِمَّا رَزَقۡنَٰكُم مِّن قَبۡلِ أَن يَأۡتِيَ يَوۡمٞ لَّا بَيۡعٞ فِيهِ وَلَا خُلَّةٞ وَلَا شَفَٰعَةٞۗ وَٱلۡكَٰفِرُونَ هُمُ ٱلظَّٰلِمُونَ 
"হে ঈমানদারগণ! আমি তোমাদেরকে যে রুযী দিয়েছি, সেদিন আসার পূর্বেই তোমরা তা থেকে ব্যয় কর, যাতে না আছে বেচা-কেনা, না আছে সুপারিশ কিংবা বন্ধুত্ব। আর কাফেররাই হলো প্রকৃত যালেম" (Al-Baqarah, Ayah 
254) 
وَأَنذِرۡهُمۡ يَوۡمَ ٱلۡأٓزِفَةِ إِذِ ٱلۡقُلُوبُ لَدَى ٱلۡحَنَاجِرِ كَٰظِمِينَۚ مَا لِلظَّٰلِمِينَ مِنۡ حَمِيمٖ وَلَا شَفِيعٖ يُطَاعُ 
"আপনি তাদেরকে আসন্ন দিন সম্পর্কে সতর্ক করুন, যখন প্রাণ কন্ঠাগত হবে, দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। পাপিষ্ঠদের জন্যে কোন বন্ধু নেই এবং সুপারিশকারীও নেই; যার সুপারিশ গ্রাহ্য হবে" (Ghafir, Ayah 18)
উপরোক্ত আয়াত গুলো স্পষ্ট বলা হয়েছে, কারও সাফায়াত গৃহীত হবেনা। সুতরাং আল্লাহু রাসূল সাঃ সাফায়াত করবেন এমন সুনিশ্চিত ধারণা কি কুরআনের বিপরীত নয়?
আরও দেখুন, আল্লাহ বলেন,
أَمِ ٱتَّخَذُواْ مِن دُونِ ٱللَّهِ شُفَعَآءَۚ قُلۡ أَوَلَوۡ كَانُواْ لَا يَمۡلِكُونَ شَيۡـٔٗا وَلَا يَعۡقِلُونَ 
"তারা কি আল্লাহ ব্যতীত সুপারিশকারী গ্রহণ করেছে? বলুন, তাদের কোন এখতিয়ার না থাকলেও এবং তারা না বুঝলেও?" (Az-Zumar, Ayah 43) 
قُل لِّلَّهِ ٱلشَّفَٰعَةُ جَمِيعٗاۖ لَّهُۥ مُلۡكُ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضِۖ ثُمَّ إِلَيۡهِ تُرۡجَعُونَ 
"বলুন, সমস্ত সুপারিশ আল্লাহরই ক্ষমতাধীন, আসমান ও যমীনে তাঁরই সাম্রাজ্য। অতঃপর তাঁরই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে" (Az-Zumar, Ayah 44) নবী, অলী, পীর বুজুর্গরা কিয়ামতের মাঠে সুপারিশ বা সাহায্য করবে এমনটা নিশ্চিত মনে করা আসলেই ঠিক না। কেননা কুরানে এরূপ নিশ্চিত কথা বলা হয়নি, কুরান যেটা বলে সেটা হচ্ছে,
إِنَّ رَبَّكُمُ ٱللَّهُ ٱلَّذِي خَلَقَ ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَٱلۡأَرۡضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٖ ثُمَّ ٱسۡتَوَىٰ عَلَى ٱلۡعَرۡشِۖ يُدَبِّرُ ٱلۡأَمۡرَۖ مَا مِن شَفِيعٍ إِلَّا مِنۢ بَعۡدِ إِذۡنِهِۦۚ ذَٰلِكُمُ ٱللَّهُ رَبُّكُمۡ فَٱعۡبُدُوهُۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ 
"নিশ্চয়ই তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ যিনি তৈরী করেছেন আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি কার্য পরিচালনা করেন। কেউ সুপারিশ করতে পাবে না তবে তাঁর অনুমতি ছাড়া ইনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত কর। তোমরা কি কিছুই চিন্তা কর না ?" (Yunus, Ayah 3) 
وَلَا تَنفَعُ ٱلشَّفَٰعَةُ عِندَهُۥٓ إِلَّا لِمَنۡ أَذِنَ لَهُۥۚ حَتَّىٰٓ إِذَا فُزِّعَ عَن قُلُوبِهِمۡ قَالُواْ مَاذَا قَالَ رَبُّكُمۡۖ قَالُواْ ٱلۡحَقَّۖ وَهُوَ ٱلۡعَلِيُّ ٱلۡكَبِيرُ 
"যার জন্যে অনুমতি দেয়া হয়, তার জন্যে ব্যতীত আল্লাহর কাছে কারও সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। যখন তাদের মন থেকে ভয়-ভীতি দূর হয়ে যাবে, তখন তারা পরস্পরে বলবে, তোমাদের পালনকর্তা কি বললেন? তারা বলবে, তিনি সত্য বলেছেন এবং তিনিই সবার উপরে মহান" (Saba', Ayah 23) 
يَوۡمَئِذٖ لَّا تَنفَعُ ٱلشَّفَٰعَةُ إِلَّا مَنۡ أَذِنَ لَهُ ٱلرَّحۡمَٰنُ وَرَضِيَ لَهُۥ قَوۡلٗا
দয়াময় আল্লাহ যাকে অনুমতি দেবেন এবং যার কথায় সন্তুষ্ট হবেন সে ছাড়া কারও সুপারিশ সেদিন কোন উপকারে আসবে না" (Ta-Ha, Ayah 109) 
কুরআনে এই বিষয়ে আরও আয়াত পাবেন। কিন্তু কোথাও সুনিশ্চিত ভাবে কাউকে কারও জন্য সুপারিশের অনুমতি দেওয়ার কথা বলা হয়নি। আল্লাহ যদি রাসূল সাঃ কে তার উম্মতের সুপারিশকারী হিসেবে নিরধারণ করতেন, তাহলে হাদিস গুলোকে কুরআনের ব্যাখ্যা হিসেবে ধরে নেয়া যেত। অথচ এরূপ কিছুই কুরআনে বলা হয়নি। 
বরং হাদিস গুলোর উপর নির্ভর করে অনেক উম্মতে মুহাম্মদী বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছে। যেমনটি বিভ্রান্ত হয়েছিল খ্রিস্টান সম্প্রদায়। খ্রিস্টান সম্প্রদায় বিশ্বাস করে, তাদের পাপের বোঝা ঈসা আঃ নিয়ে নিয়েছেন। এই কারণে দেখা যায়, খ্রিস্টান সম্প্রদায় পাপ করতে ভয় পায়না।
মুসলমানদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ বিশ্বাস করে যে, তারা যতোই পাপ করুক না কেন, তাদের রাসূল সাঃ সুপারিশ করে জান্নাতে নিয়ে যাবেন। চিন্তা করুন, কুরআন কি বলেছিল আর কুরআন বিরোধী হাদিসের দোহাই দিয়ে উম্মতি মুহাম্মাদী কি বলছে?!
👉 সাফায়াত বিষয়ে আমার বিস্তারিত লেখা উল্লেখিত লিংকে পাবেন, https://abubakarnetwork.blogspot.com/2020/10/blog-post.html 

উদাহরণ -২
কুরআনে বলা হয়েছে, আল্লাহ বলেন, 
قُلۡ  لَّاۤ  اَقُوۡلُ لَکُمۡ عِنۡدِیۡ خَزَآئِنُ اللّٰہِ وَ لَاۤ  اَعۡلَمُ الۡغَیۡبَ وَ لَاۤ  اَقُوۡلُ لَکُمۡ  اِنِّیۡ مَلَکٌ ۚ اِنۡ  اَتَّبِعُ  اِلَّا مَا یُوۡحٰۤی  اِلَیَّ ؕ قُلۡ ہَلۡ  یَسۡتَوِی الۡاَعۡمٰی وَ الۡبَصِیۡرُ ؕ اَفَلَا  تَتَفَکَّرُوۡنَ
বল, ‘তোমাদেরকে আমি বলি না, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডারসমূহ রয়েছে আর না আমি গায়েব জানি, আর না  তোমাদেরকে বলি, নিশ্চয় আমি ফেরেশতা। আমি কেবল তাই অনুসরণ করি যা আমার কাছে ওহী প্রেরণ করা হয়’। বল, ‘অন্ধ আর চক্ষুষ্মান কি সমান হতে পারে? অতএব তোমরা কি চিন্তা করবে না’? (আলকোরানঃ ৬/৫০) উপরোক্ত আয়াত দ্বারা এই কথা সুস্পষ্ট যে, নবীজি সাঃ কাউকে এই কথা বলেনি যে, তার নিকট আল্লাহর ধনভাণ্ডার রয়েছে। 
অনুরূপ ধারণা হযরত হূত (আঃ) ব্যপারেও তার কওমরা করত। তাদের উত্তরে হযরত হূত (আঃ) অনুরূপ জবাবই দিয়েছিল। দেখুন, সূরা হুদের ৩১ নং আয়াত।
কুরআনে এটাও বলা আছে, ধনভান্ডারের চাবি আল্লাহর কাছে এবং  ধনভাণ্ডার কেবলমাত্র আল্লাহর। কেননা ধনভাণ্ডার আল্লাহর রুবুবিয়াতের অংশ। এটা দিয়ে তিনি তার সৃষ্টির উপর করতৃত্ব চালান। অর্থাৎ তার ইচ্ছা মতো সৃষ্টি রিযিক পান, ধনসম্পদের মালিক হন।
এই বিষয়ে আমার বিস্তারিত লেখা লিংকে দেখুনঃ
এইবার কুরআনে আল্লাহর রাসূল বলছেনঃ আল্লাহ তাকে ধনভাণ্ডার দিয়েছেন এরূপ কথা তিনি কাউকে বলেনি। অথচ সহীহ্ আছে আল্লাহ তাকে ধনভাণ্ডার দিয়েছেন! 
এখন চিন্তা করুন, কুরআন সত্য নাকি হাদিসের নামে বরণিত কথা সত্য? 
এইভাবে দেখা যায়, সহীহ্ হাদিসের নামে কুরআন বিরোধী অনেক হাদিস প্রচলিত আছে যা বেশির ভাগই রাসূল সাঃ শানে বাড়াবাড়ি করতে কাজে লাগানোর সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এবং কুরআন দিয়ে যেসবের জবাব দিতে গেলে তারা কুরআনের আয়াতকে ব্যার্থ করার চেষ্টা করে। (নাউজুবিল্লাহ) যদি হাদিসের নামে কুরআন বিরোধী এইসব কথা প্রচলিত না থাকত, তবে মুসলিমদের এতো মতবিরোধ দেখা যেত না। মানুষদের বিভ্রান্ত করার এতো সুযোগও তারা পেতনা। 

আশা করি কুরআন বিরোধী সহীহ্ হাদিসের কুফল বুঝাতে সক্ষম হয়েছি। অর্থাৎ উপরোক্ত আলোচনা থেকে এই বিষয়টি বুঝানোর চেষ্টা করেছি, রাসূল সাঃ শানে বরণিত অনেক সহীহ হাদিস আছে যা আসলে হাদিস নয়। কেননা আল্লাহর রাসূল সাঃ কুরআন বিরোধী কোন কথা বলতে পারেন না।
অতএব, হাদিসের দোহাই দিয়ে রাসূল সাঃ শানে প্রচলিত আজগুবি, বিভ্রান্তিকর ও শিরকী কথা বলার আগে কুরআনের আয়াত দিয়ে তা যাচাই করা উচিত। 
তা নাহলে উম্মতি মুহাম্মাদীর পরিণতি হবে ইহুদি ও খ্রিস্টানদের মতোই।
আল্লাহ আমাদের ঈমান ও আমলকে হেফাজতে রাখুক - আমিন।
কুরআনের ৪/১৭১ ও ৫/৭৭ নং আয়াতের সমর্থক সহীহ্ হাদিস দিলামঃ
আব্দুল্লাহ ইবনু আববাস (রা) বলেন, উমার ইবনুল খাত্তাব (রা) মিম্বারের উপরে বক্তৃতায় বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: 

لا تُطْرُونِي كَمَا أَطْرَتْ النَّصَارَى ابْنَ مَرْيَمَ فَإِنَّمَا أَنَا عَبْدُهُ فَقُولُوا عَبْدُ اللَّهِ وَرَسُولُهُ. 

‘‘খৃস্টানগণ যেরূপ ঈসা ইবনু মারিয়ামকে বাড়িয়ে প্রশংসা করেছে তোমরা সেভাবে আমার বাড়িয়ে প্রশংসা করবে না। আমি তো তাঁর বান্দা মাত্র। অতএব তোমরা বলবে: আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল।’’
বুখারী, আস-সহীহ ৩/১২৭১, ৬/২৫০৫; ইবনু হাজার, ফাতহুল বারী ৬/৪৭৮। 

❤️ পরিশেষে আমার সকল ভাল কাজই আল্লাহর জন্য। 

কোরান বনাম সহীহ্ হাদিসের নামে জাল হাদিস।
হাদিসের দোহাই দিয়ে রাসূল সাঃ শানে প্রচলিত আজগুবি, বিভ্রান্তিকর ও শিরকী কথা বলার আগে কুরআনের আয়াত দিয়ে তা যাচাই করুন

✍️ আবুবকর সিদ্দিক। ২৮/০৫/২০২২

Comments

Popular posts from this blog

Application for permission to visit National Museum.

মিলাদুন্নবী ও সূরা আহযাবের 56 নং আয়াত:

ইবাদতে মাইকের ব্যবহার নিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তি নিরসন (প্রথম পর্ব)

রাসূল (সা) প্রতি সোমবারে রোজা রাখতেন কেন?

সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (রা) এর সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ